আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। কেমন আছেন বন্ধুরা, অনেক দিন পর আপনাদের সামনে আসলাম ছোট্ট একটা পোষ্ট নিয়া। কথা না বাড়িয়ে আলোচনায় আসি।
আজ আমাদের সমাজে একটা বিষয় বলতে গেলে রেওয়াজ এ পরিণত হইয়াছে। আর তা হল বিধর্মীদের উৎসব-অনুষ্ঠানকে নিজেদের ধর্মীয় উৎসব বানিয়ে ফেলা । আরো পরিষ্কার করে বলছি, আজ আমরা বিধর্মীদের বিভিন্ন উৎসবে স্বত-স্ফুর্তভাবে, আনন্দের সাথে যোগ দিয়ে থাকি। মুখে বলি বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক দেশ, এখানে সবাই সবার উৎসব পালন করবে ? কিন্ত এক জন মুসলমান হিসেবে আমি আপনি কি কখনও চিন্তা করেছি যে, এই বিষযে আমাদের ইসলাম ধর্ম কি বলে ?? আমাদের রাসূল (সা:) কি বলে গেছেন ? এর উত্তরে হয়তবা অনেকেই বলবেন না জানি না বা এমন ভাবে কখনও চিন্তা করি নাই। আর যদি উত্তরে হ্যাঁ বলেন, তারাও জেনে শুনে অংশ গ্রহন করে থাকি। তাহলে আসুন দেখি এসব বিষয়ে আমাদের কোরআন কি বলে: মুমিনদের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে আল্লাহর উপর ভরসা করা। যেমন আল্লাহ বলেন, ‘মুমিনদের জন্য আল্লাহর উপর ভরসা করা উচিত’ (ইবরাহীম ১১)।
“অনেক মানুষ আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে, কিন্তু সাথে সাথে শিরকও করে” (ইউসুফঃ ১০৬) — কীভাবে ?? বলছি-
কোন হিন্দুকে দুর্গাপূজা উপলক্ষে শুভেচ্ছা-সম্ভাষণ জানানো অর্থ তার এই পূজা করাতে আপনার সায় আছে। আপনাকে যদি আজকে ‘বাস্টার্ড’ গালি দেওয়া হয় তাহলে আপনি রেগে তেড়ে আসবেন, পিতৃত্বে শরিক করলে আমাদের আঁতে ঘাঁ লাগে…
অথচ যে আল্লাহ আমাদের অনস্তিত্ব থেকে অস্তিত্বে আনলেন, প্রতি মুহূর্ত অক্সিজেন দিচ্ছেন ফ্রি, আহার-পানীয়-পোশাকের ব্যবস্থা করে দিলেন সেই আল্লাহর সাথে প্রতিনিয়ত শরিক করা হলেও আমাদের ভ্রুটাও অবধি কুচকে উঠেনা। সেই আল্লাহর জায়গায় মাটির একটা মূর্তি বসিয়ে করা পূজা দেখে শুভেচ্ছা জানায় – শারদীয় শুভেচ্ছা। এখন আপনিই বলেন এই কাজটা কি শিরক না ? আল্লাহ তায়াল বলেন:
“কতই না ভাল হ’ত, যদি তারা সন্তুষ্ট হ’ত আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপর এবং বলত, আল্লাহই আমাদের জন্যে যথেষ্ট। আল্লাহ আমাদের দিবেন নিজ করুণায় এবং তাঁর রাসূলও। আমরা শুধু আল্লাহকেই কামনা করি’ (তওবা ৯/৫৯)।
আজ আমরা দূর ডেনমার্কে এক ভন্ড, রাসুল (সাঃ) কে নিয়ে একটা ক্যারিকেচার আঁকলে, মার্কিন মুল্লুকের কেউ মুভি বানালে পাগলের মত লাফাতে থাকি অথচ ঘরের পাশে যে উৎসবটিতে স্বয়ং আল্লাহকে এমন চরমভাবে অপমান করা হয় সে দিন আমরা সবাইকে ‘মেরি ক্রিসমাস’ জানাই, “শারদীয় শুভেচ্ছা” জানাই! আল্লাহর অপমান আমাদের গায়ে তো লাগেইনা বরং সেটাতে আনন্দের তকমা দেই। দুঃখজনক!!!
একজন মুসলিম কি তবে একজন হিন্দু প্রতিবেশীর শুভ কামনা করবেনা? তার খ্রীষ্টান সহপাঠীর ভালো চাইবেনা? নিশ্চয়ই চাইবে। ভাল চাওয়ার প্রথম কাজটাই হবে তাকে আল্লাহর একত্ববাদ বোঝানো, তাকে সে দিকে আহবান জানানো। একজন মানুষকে অনন্তকালের জন্য আগুনে পোড়া থেকে বাচাঁনোর চেয়ে আর ভাল কাজ কি হতে পারে?
ইমাম হাফিজ ইবনুল কায়্যিম (রহ:) তার ‘আহকাম আহ্ল আল-দিম্মা’ গ্রন্থে বলেন কাফিরদের তাদের উৎসবে সম্ভাষণ জানানো মুসলিম ঐক্যমতের ভিত্তিতে নিষিদ্ধ। আল্লাহ আমাদের ইসলাম জানার, বোঝার এবং বুঝে মানার সামর্থ্য দিন। আমিন….।
জাহেলি যুগেও রাসুল (সা) ও তার সাহাবীরা মূর্তিপূজারকদের যেকোন অনুষ্ঠানে যাওয়ার ব্যাপারে কঠোরতা অবলম্বন করেছেন, নিষেধ করেছেন। কারন সেখানে সরাসরি “শিরক” হচ্ছে। আর অন্যান্য অনৈসলামিক কর্মকান্ড তো হচ্ছেই। কাফিরদের যে কোন উৎসবে অংশগ্রহণ করা মুসলমানদের জন্য হারাম।
‘তার (শয়তানের) কোন আধিপত্য নেই তাদের উপর যারা ঈমান আনে ও তাদের প্রতিপালকের উপরই নির্ভর করে’ (নাহল ১৬/ ৯৯)।
সুতরাং আসুন আমরা এ সকল হারাম কাজ থেকে নিজেও বাছি অন্যকেও বাছাই। আল্লাহ আমাদের সকলকেই ক্ষমা করুন। বন্ধুরা আমি মানুষ কোন ভুলের উর্ধে নয়, তাই অনাখাঙ্কিত ভুলের জন্য ক্ষমা চাচ্ছি। ভালো থাকুন সবাই এই কামনায় আজকের মত এখানেই সমাপ্ত করছি। আল্লাহ হাফিজ।