শ্বশুর বাড়ির লোকদের সহিত আচার-ব্যবহার (৭ম খণ্ড)

আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন সবাই? আশা করি ভালই আছেন? আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভাল আছি। তাহলে কাজের কথায় আসি।

প্রথম পর্ব যারা পড়েন নি, তারা  এখান থেকে ১ম খন্ড, ২য় খন্ড, ৩য় খন্ড, ৪র্থ খন্ড, ৫ম খন্ড ও ৬ষ্ট খন্ড পড়তে পারেন।

৬ষ্ঠ খণ্ড পর্বের পরে।
এই রূপে যদি কাহারো প্রতি কোন এহছান কিরয়া থাক, তবে কোন সময় সে, এঞছান উল্লেখ করিয়া তাহার মনে আঘাত দিওনা। পবিত্র কোরআন শরীফ হইতে প্রমাণিত আছে যে, এহছান জিতাইলে খোটা দিলে সদ্ব্যবহার করার ছওয়ার বাতিল হইয়া যায়। দান, এহছান শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে হওয়া চাই।
সাধারন আচার-ব্যবহারঃ
সংসারে কাঠামো দৃঢ় ও মজবুত করার জন্য, উন্নত ও ঊর্ধ্বগামী বানাইবার জন্য এবং উহার রওনক সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য বাটিস্থ লোকদের উপরোল্লিখিত গুনাবলী এবং উহার সুন্দর আচার-ব্যবহার, উৎকৃষ্ট লেনদেন, সৎ স্বভাব ইত্যাদির সাথে সাথে সংসার ও গৃহস্থালর উত্তম ব্যবস্থাপনা সুনিয়মতান্ত্রিক সংস্থা একটি নেহায়েতজরুরী জিনিস। সংসারের ব্যবস্থাপনা যদি যথা যথ ও সঠিক না হয়, তবে বিত্ত ও সম্পদশালী হওয়া সত্বেও বাড়িতে কষ্ট ও অমঙ্গল নামিয়া আসিতে আমি স্বচক্ষে অনেক ধনী লোকের বাড়িতে দেখিয়াছি।
গৃহকর্মর সুব্যবস্থাঃ বাড়ির মেয়ে লোকদের মধ্যে সংসারে সুব্যবস্থার যথাবিহিত নিয়ম পদ্ধতির জ্ঞানের অভাবে তাহাদের বাড়ি অবস্থা কপর্দকহীন কাঙ্গালদের চেয়েও নিকৃষ্ট। ঘর সংসারের ব্যাপারে সবচেয়ে বড় কথা এই যে, ব্যয়ের পরিমাণও  তাহার স্থানে প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখিবে; ব্যয়ে, স্থান বিশেষে মধ্য পন্থা অবলম্বন করিবে। অর্থাৎ আয় বুঝিয়া ব্যয় করিবে। আয়ের চেয়ে ব্যয় যেন বেশি না হয়। আবারব্যয়ের, এতদদুভয়ের দোষ ও অপকারিতা বর্ণিত হইয়াছে। টাকা পয়সার এত দূর মায়া মহব্বত যে, পয়সা পয়সা করিয়া জমা করার ফিকিরে পড়িয়া নিরানব্বই পাল্লায় গিয়া পড়ে, ইহা অতীব দুষণীয়। তাহাছাড়া ইহাতে জীবন যাত্রা দুর্বিষহ হইয়া পড়ে। অবশ্য মধ্যবর্তিতা এমন পন্থা যে, উহাতে মানুষকে কেহ কৃপণও বলে না অপব্যয়ীও না। প্রয়োজনের সময় তাহার কোন কাজ আটকাইয়া থাকে না। টাকা পয়সা যাহার হাতে ব্যয় হয়, ব্যয়ের স্থানে প্রতি লক্ষ্য রাখা তাহারই কাজ। তাহার খেয়াল করা উচিৎ খেয়াল করা উচিৎ কোন জায়গায় কি পরিমাণে খরচ করা কর্তব্য। এ সম্পর্কে খুঁটিনাটি বিষয় বিস্তারীত লেখা দুষ্কর। স্বামীর অনুমতি ক্রমে যদি দৈনন্দিন খরচের হিসাব লিখিয়া রাখ এবং প্রত্যহ কিংবা সপ্তাহে একবার ঐ হিসাব স্বামীকে দেখাও, তবে ইহা খুবই আশ্বস্তি বিষয়ক ও আস্থার কারণে। হিসাব এমন উত্তম জিনিস যে, দুনি দুনিয়া উভয়ের উপকারী। ডাল, চাউল, আনাজ ইত্যাদি যাহাকিছু বাড়িতে আসে, মাপিয়া ওজন করিয়া রাখিবে। এইরূপে টাকা-পয়সাও গুনিয়া রাখিবে কোন লোককে কর্জ দিলে কিংবা ধার লইলে তাহাও লিখিয়া রাখিবে এবং উসুল হইলে বা কার্জ শোধ করিলে তাহাও লিখিয়া রাখিবে, এমন কি, লিখিত ব্যতীত ধোপার কাছেও কাপড় দিওনা। সর্বাপেক্ষা উত্তম কথা এই যে, তোমার কাছে যাহাকিছু কাপড়-চোপড় দিও না। সর্বাপেক্ষা উত্তম কথা এই যে, তোমার কাছে যাহাকিছু-কাপড়-চোপড়, টাকা-পয়সা অলংকারাদী আছে সবই লিখিয়া রাখিবে। ইহা অত্যন্ত কাজের কথা।
তাহলে আজ এপর্যন্তই।
পরবর্তি খণ্ড নিয়ে খুব তারাতারিই আপনাদের মাঝে হাজির হবে ইনশাআল্লাহ্

Share this

Related Posts

Previous
Next Post »