নিম পাতার মহা গুণ!


নিমের গুণ অপরিসীম। নিমের বহুবিধ এবং ব্যাপক ব্যবহারের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নিমকে গ্রাম্য ডাক্তার হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। আমাদের গ্রাম-গঞ্জ থেকে শুরু করে রাজধানীতেও অনেক মানুষ চর্মরোগ দূর ও রূপচর্চাসহ নানাবিধ কাজে নিম ব্যবহার করে আসছে। নিমের বীজ পাতা-ছাল-কাঠ সবই উপকারী!

নিম কি?


নিম একটি বহু বর্ষজীবি ও চির হরিত বৃক্ষ। নিম একটি ঔষধি গাছ, বৈজ্ঞানিক নাম (AZADIRACHTA INDICA)। এর ডাল, পাতা, রস, সবই কাজে লাগে। বাংলাদেশের সবত্রই জন্মে তবে উত্তরাঞ্চলে বেশি দেখা যায়। প্রাপ্ত বয়স্ক হতে সময় লাগে ১০ বছর। নিম গাছ সাধারণত উষ্ণ আবহাওয়া প্রধান অঞ্চলে ভাল হয়। নিমের পাতা থেকে আজকাল প্রসাধনীও তৈরি হচ্ছে। নিম থেকে তৈরি হচ্ছে নানা ধরণের ঔষধ কৃমিনাশক হিসেবে নিমের রস খুবই কার্যকর। । নিমের কাঠ খুবই শক্ত। এ কারণে নিম কাঠের আসবাবপত্রও তৈরি করা হচ্ছে আজকাল।

আসুন জেনে নেই নিমের কিছু ঔষধি গুণ-

কৃমিনাশক-  

শিশুদের পেটে কৃমি নির্মূল করতে। শিশুরাই বেশি কৃমির শিকার হয়। এ জন্য ৫০ মিলিগ্রাম পরিমাণ নিম গাছের মূলের ছালের গুড়া দিন ৩ বার সামান্য গরম পানি সহ খেতে হবে।

ঠান্ডাজনিত বুকের ব্যথা– অনেক সময় বুকে কফ জমে বুক ব্যথা করে। এ জন্য ৩০ ফোটা নিম পাতার রস সামান্য গরম পানিতে মিশিয়ে দিতে ৩/৪ বার খেলে বুকের ব্যথা কমবে। গর্ভবতীদের জন্য ঔষধটি নিষেধ।

ডায়াবেটিস রোগ- 

সকালে খালি পেটে ৫টি গোলমরিচ ও ১০টি নিম পাতা বেটে খেলে তা ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করে।

খোস পাচড়া বা চুলকানি-

নিম পাতা সিদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে গোসল করলে খোসপাচড়া চলে যায়। পাতা বা ফুল বেটে গায়ে কয়েকদিন লাগালে চুলকানি ভালো হয়।

অজীর্ণ-

অনেকদিন  ধরে পেটে অসুখ? পাতলা পায়খানা হলে ৩০ ফোটা নিম পাতার রস, এক কাপ পানির ৪/১ ভাগ পানির সঙ্গে মিশিয়ে সকাল-বিকাল খাওয়ালে উপকার পাওয়া যাবে।

পোকা-মাকড়ের কামড়-

পোকা মাকড় কামড় দিলে বা হুল ফোঁটালে নিমের মূলের ছাল বা পাতা বেটে ক্ষত স্থানে লাগালে ব্যথা উপশম হবে।

দাতের রোগ- 

নিমের পাতা ও ছালের গুড়া কিংবা নিমের ডাল দিয়ে নিয়মিত দাত মাজলে দাঁত হবে মজবুত, রক্ষা পাবেন দন্ত রোগ থেকেও।

ত্বকের যত্নে- নিমের তেল মুখে ব্যবহার করলে ব্রন হয় না।

জন্ডিস-

 জন্ডিস হলে প্রতিদিন সকালে বাচ্চাদের জন্য ৫-১১ ফোঁটা,বয়স্কদের জন্য ১ চামচ নিম পাতার রস একটু মধু মিশিয়ে খালি পেটে খেতে হবে।

উকুন নাশক- 

উকুন মারতে নিমের পাতা বেটে হালকা করে মাথায় লাগান। ঘন্টা খানেক রেখে মাথা ধুয়ে ফেলুন। ২/৩ দিন এভাবে লাগালে উকুন মরে যাবে।

আমাদের চারপাশেই ছড়িয়ে আছে প্রকৃতির অসাধারণ সব উপাদান। ওষুধের কৃত্রিমতার ওপরে নির্ভরশীল না হয়ে, সুস্থ থাকবার জন্য প্রাকৃতিক উপায় গুলোর প্রতি মনযোগী হয়ে উঠুন। যার অল্প একটু ব্যবহারই প্রতিদিন থাকবেন সুস্থ-সতেজ ও রোগ মুক্ত।

নিমের এই গুনাগুনের কথা বিবেচনা করেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‌ নিমকে ‘একুশ শতকের বৃক্ষ’ বলে ঘোষনা করেছে।

Share this

Related Posts

Previous
Next Post »