বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ প্রিয় বন্ধুরা। মহান আল্লাহ তাআলার দরবারে শুকরিয়া যানাচ্ছি আমাকে এই পোষ্টটি করার তাওফিক দান করার জন্য। আমার পরিচয়, আমি মুসলিম। পবিত্র আল-কোরআন এবং সহীহ হাদীস ছাড়া অন্য কোন বাণী বা বাক্যে আমি বিশ্বাসী নই। দোয়া করি সকলেই যেন পবিত্র আল-কোরআন এবং সহীহ হাদীসের আলোকে নেক আমল করে যেতে পারেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত।
আসুন এখন মূল পোষ্টের আলোচনায় আসি………..
গত পোষ্টটি যারা পড়েন নি তারা এখান থেকে পড়ে নিন সহীহ্ বোখারী শরীফ (হাদিস ৪১ থেকে ৫০)
পরিচ্ছেদ ৪০ :-গনীমতের পঞ্চমাংশ প্রদান ঈমানের অন্তর্ভুক্ত – হাদিস নং ৫১
হাদিস – ৫১
আবূ জামরা (র) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ইবনে আব্বাস (রা) এর সাঙ্গে বসতাম। তিনি আমাকে তার আসনে বসাতেন। একবার তিনি বললেনঃ তুমি আমার কাছে থেকে যাও, আমি তোমাকে আমার সম্পদ থেকে কিছু অংশ দিব। আমি দুমাস তার সঙ্গে অবস্থান করলাম। তারপর একদিন তিনি বললেন, আবদুল কায়স এর একটি প্রতিনিধি দল রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর কাছে আসলে তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ তোমারা কোন কওমের? অথবা বললেন, কোন প্রতিনিধিদলের? তারা বলল, রাবী’আ গোত্রের। তিনি বললেনঃ মারহাবা সে গোত্র বা সে প্রতিনিধি দলের প্রতি, যারা অপদস্থ ও লজ্জিত না হয়েই এসেছে। তারা বলল, ইয়া রাসুলুল্লাহ! নিষিদ্ধ মাসসমূহ ছাড়া অন্য কোন সময় আমরা আপনার কাছে আসতে পারি না। (কারণ) আমাদের এবং আপনার মাঝখানে মুযার গোত্রীয় কাফিরদের বাস। তাই আমাদের কিছু স্পষ্ট হুকুম দিন, যাতে আমরা যাদের পিছনে রেখে এসেছি তাদের জানিয়ে দিতে পারি এবং যাতে আমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারি। তারা পানীয় সম্পর্কেও জিজ্ঞাসা করল। তখন তিনি তাদের চারটি জিনিসের নির্দেশ এবং চারটি জিনিস থেকে নিষেধ করলেন। তাদের এক আল্লাহর প্রতি ঈমান আনার আদেশ দিয়ে বললেনঃ এক আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা কিভাবে হয় তা কি তোমরা জান? তারা বলল, আল্লাহ ও তার রাসূলই ভাল জানেন। তিনি বললেন, তা হল এ সাক্ষ্য দেওয়া যে, আল্লাহ ছাড়া ইলাহ নেই এবং মোহাম্মদ (সা) আল্লাহর রাসুল এবং সালাত কায়েম করা, যাকাত দেওয়া, রমযানের সিয়াম পালন করা; আর তোমরা গণিমতের মাল থেকে এক-পঞ্চমাংশ প্রদান করবে। তিনি তাদেরকে চারটি জিনিস থেকে নিষেধ করলেন। তা হলোঃ সবুজ কলসী, শুকনো লাউয়ের খোল, খেজুর গাছের গুড়ি থেকে তৈরীকৃত পাত্র এবং আলকাতরার পালিশকৃত পাত্র। ১ তিনি আরো বলেন, তোমরা এগুলো ভালো করে আয়ত্ত করে নাও এবং অন্যদেরও এগুলি জানিয়ে দিও।
( ১ এ পাত্র গুলোতে সে সময় মদ প্রস্তুত করা হত।)
পরিচ্ছেদ ৪১ :-আমল নিয়ত ও সওয়াবের আশা অনুযায়ী – হাদিস নং ৫২ এবং ৫৩ এবং ৫৪
হাদিস –৫২
উমর (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেনঃ কাজ নিয়তের সাথে সম্পর্কিত এবং প্রত্যেক মানুষের প্রাপ্য তার নিয়ত অনুযায়ী। অতএব যার হিজরত হবে আল্লাহ ও তার রাসুলের উদ্দেশ্যে, তার হিজরত আল্লাহ ও তার রাসুলের উদ্দেশ্যে হয়েছে বলেই গণ্য হবে। আর যার হিজরত হয় দুনিয়া হাসিলের জন্য বা কোন নারীকে বিয়ে করার জন্য, তার হিজরত সে উদ্দেশ্যেই গন্য হবে যে উদ্দেশ্যে সে হিজরত করেছে।
হাদিস – ৫৩
আবু মাসউদ (রা) থেকে বর্নিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেনঃ মানুষ তার পরিবারের জন্য সওয়াবের নিয়তে যখন খরচ করে তখন তা হয় তার সদকা স্বরুপ।
হাদিস – ৫৪
সা’দ ইবনে আবূ ওয়াক্কাস (রা) থেকে বর্নিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেনঃ তুমি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় যাই খরচ কর না কেন, তোমাকে তার সওয়াব অবশ্যই দেওয়া হবে। এমনকি তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে যা তুলে দাও, তারও।
পরিচ্ছেদ ৪২ :-নবী করিম (সাঃ) এর বাণী, ‘দীন হল কল্যাণ কামনা করা আল্লাহর রেযামন্দীর জন্য’ তাঁর রাসূলের জন্য, মুসলিম নেতৃবৃন্দের জন্য এবং সকল মুসলিমের জন্য – হাদিস নং ৫৫ এবং ৫৬
হাদিস –৫৫
জারির ইবনে আবদুল্লাহ আল-বাজালি (রা) থেকে বর্নিত, তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর হাতে বায়’আত গ্রহণ করেছি সালাত কায়েম করার, যাকাত দেয়ার এবং সকল মুসলিমের কল্যান কামনা করার।
হাদিস – ৫৬
যিয়াদ ইবনে ইলাকা (রা) থেকে বর্নিত, তিনি বলেনঃ মুগীরা ইবনে শুবা (রাঃ)১ যেদিন ইন্তেকাল করেন সেদিন আমি জারীর ইবনে আব্দুল্লাহ (রাঃ) এর কাছ থেকে শুনেছি, তিনি (মিম্বরে) দাঁড়িয়ে আল্লাহর হামদ ও সানা বর্ণনা করে বললেন, তোমরা ভয় কর এক আল্লাহকে যার কোন শরীক নাই, এবং নতুন কোন আমীর না আসা পর্যন্ত শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখ, অনতিবিলম্বে তোমাদের আমীর আসবেন। এরপর জারীর (রাঃ) বললেন, তোমাদের আমীরের জন্য মাগফিরাত কামনা কর, কেননা তিনি ক্ষমা করা ভালবাসতেন। তারপর বললেন, একবার আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর কাছে এসে বললাম, আমি আপনার কাছে ইসলামের বায়’আত গ্রহণ করতে চাই। তিনি (অন্যান্য বিষয়ের সাথে) আমার উপর শর্ত আরোপ করলেনঃ আর সকল মুসলমানের কল্যান কামনা করবে। তারপর আমি তার কাছে এ শর্তের উপর বায়’আত গ্রহণ করলাম। এ মসজিদের রবের কসম! আমি তোমাদের কল্যানকামী। এরপর তিনি আল্লাহর কাছে মাগফিরাত কামনা করলেন এবং (মিম্বর থেকে) নেমে গেলেন।
( ১ বিখ্যাত সাহাবী, তিনি কুফার আমীর ছিলেন।)
( ১ বিখ্যাত সাহাবী, তিনি কুফার আমীর ছিলেন।)
ইলম অধ্যায়
পরিচ্ছেদ ৪৩ :-ইলমের ফযীলত
পরিচ্ছেদ ৪৪ :-আলোচনায় মশগুল অবস্থায় ইলম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা……. – হাদিস নং ৫৭
হাদিস –৫৭
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ একবার রাসুলুল্লাহ (সাঃ) মজলিসে লোকদের সামনে কিছু আলোচনা করছিলেন। ইতিমধ্যে তার কাছে একজন বেদুঈন এসে প্রশ্ন করলেন, “কিয়ামত কবে?” রাসুলুল্লাহ (সাঃ) তার আলোচনায় রত রইলেন। এতে কেউ কেউ বললেন, লোকটি যা বলেছে তিনি তা শুনেছেন কিন্তু তার কথা পছন্দ করেনি। আর কেউ কেউ বললেন বরং তিনি শুনতেই পান নি। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আলোচনা শেষ করে বললেনঃ কিয়ামত সম্পর্কে প্রশ্নকারী লোকটি কোথায়? সে বলল, এইযে আমি, ইয়া রাসুলুল্লাহ! তিনি বললেন, যখন আমানত নষ্ট করা হয় তখন তুমি কিয়ামতের প্রতীক্ষা করবে। সে বলল, কিভাবে আমানত নষ্ট করা হয়? তিনি বললেন: যখন কোন কাজের দায়িত্ব অনুপযুক্ত লোকের প্রতি ন্যস্ত হয়, তখন তুমি কিয়ামতের প্রতীক্ষা করবে।
পরিচ্ছেদ ৪৫ :-উচ্চস্বরে ইলমের আলোচনা – হাদিস নং ৫৮
হাদিস –৫৮
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক সফরে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আমাদের পিছনে রয়ে গেলেন। পরে তিনি আমাদের কাছে পৌছলেন, এদিকে আমরা (আছরের) সালাত আদায় করতে দেরী করে ফেলেছিলাম এবং উযু করছিলাম। আমরা আমাদের পা কোনমতে পানি দিয়ে ভিজিয়ে নিচ্ছিলাম। তিনি উচ্চস্বরে বললেন: পায়ের গোড়ালিগুলোর (শুষ্কতার) জন্য জাহান্নামের শাস্তি রয়েছে। তিনি দুবার বা তিনবার এ কথা বললেন।
পরিচ্ছেদ ৪৬ :-মুহাদ্দিসের উক্তি : হাদ্দাসানা, আখবারানা ও আম্বা’আনা – হাদিস নং ৫৯
হাদিস –৫৯
ইবনে উমর (রাঃ) হতে বর্নিত,তিনি বলেন,রাসুলুল্লাহ (সাঃ) একবার বললেনঃগাছপালার মধ্যে এমন একটি গাছ আছে যার পাতা ঝরেনা।আর তা মুসলিমের উপমা।তোমরা আমাকে বল সেটি কি গাছ?বর্ননাকারি বলেন,তখন লোকেরা জংগলের বিভিন্ন গাছপালার কথা চিন্তা করতে লাগলো।আব্দুল্লাহ (রাঃ) বলেন,আমার মনে হল,সেটা খেজুর গাছ হবে।কিন্তু আমি তা বলতে লজ্জাবোধ করছিলাম।তারপর সাহাবায়ে কিরাম (রাঃ) বললেন,ইয়া রাসুলাল্লাহ!আপনি আমাদের বলে দিন সেটি কি গাছ?তিনি বল্লেনঃতা হল খেজুর গাছ।
পরিচ্ছেদ ৪৭ :-শাগরিদদের জ্ঞান পরীক্ষার জন্য উস্তাদের কোন বিষয় উত্থাপন করা – হাদিস নং ৬০
হাদিস –৬০
ইবনে উমর (রাঃ) হতে বর্নিত যে,একবার নবি করিম (সাঃ) বললেনঃ গাছপালার মধ্যে এমন একটি গাছ আছে যার পাতা ঝরেনা।আর তা মুসলিমের উপমা।তোমার আমাকে বল সেটি কি গাছ?বর্ননাকারি বলেন,তখন লোকেরা জংগলের বিভিন্ন গাছপালার কথা চিন্তা করতে লাগলো।আব্দুল্লাহ (রাঃ) বলেন,আমার মনে হল,সেটা খেজুর গাছ হবে।কিন্তু আমি তা বলতে লজ্জাবোধ করছিলাম।তারপর সাহাবায়ে কিরাম (রাঃ) বললেন,ইয়া রাসুলাল্লাহ!আপনি আমাদের বলে দিন সেটি কি গাছ?তিনি বল্লেনঃতা হল খেজুর গাছ।
দেখতে পারেন সহীহ্ বোখারী শরীফ (হাদিস ৬১ থেকে ৭০)