সহীহ্ বোখারী শরীফ (হাদিস ০৪ থেকে ১০)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ প্রিয় বন্ধুরা। মহান আল্লাহ তাআলার দরবারে শুকরিয়া যানাচ্ছি আমাকে এই পোষ্টটি করার তৌফিক দান করার জন্য। আমার পরিচয়, আমি মুসলিম। পবিত্র আল-কোরআন এবং সহীহ হাদীস ছাড়া অন্য কোন বাণী বা বাক্যে আমি বিশ্বাসী নই। দোয়া করি সকলেই যেন পবিত্র আল-কোরআন এবং সহীহ হাদীসের আলোকে নেক আমল করে যেতে পারেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত।
আসুন এখন মূল পোষ্টের আলোচনায় আসি………..
গত পোষ্টটি যারা পড়েন নি তারা এখান থেকে পড়ে নিন  সহীহ্ বোখারী শরীফ (হাদিস ০১ থেকে ০৩)
[বিঃ দ্রঃ কোন হাদিস এ যদি কোন প্রকার ভুল আপনারা পান কিনবা দেখেন। তাহলে সাথেসাথে আমাদের জানাবেন ………… অনুরোধ রইলো]
হাদিস -০৪ :-
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে “লা তুহাররিক বিহী লিসানাকা লি তা’জালা বিহী…….” আয়াত সম্পর্কে বর্ণিত আছে , (তিনি বলেন) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ওহী আয়ত্ত করার উদ্দেশ্যে বিশেষ কষ্টসহকারে বারবার পাঠ করতেন এবং জিবরাঈল যখন পড়তেন তখন দুঠোঁট বারবার বেশি করে নাড়াতেন ।আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন ,আমি তোমাকে বুঝাবার জন্য রাসূলুল্লাহ (সাঃ) যেভাবে তাঁর দুঠোঁট নাড়তেন সেভাবে ঠোঁট নাড়ছি । সাঈদ ইবনে জোবায়ের বলেন , আমি ইবনে আব্বাস (রাঃ) কে যেভাবে ঠোঁট নাড়তে দেখেছি ,সেভাবে আমার ঠোঁট নাড়ছি ।তারপর তিনি স্বীয় ঠোঁট দুটি নাড়লেন ।এ সম্পর্কে আল্লাহ নাযিল করলেন :”আপনি ওহী শ্রীঘ্র মুখস্থ করার জন্য ঠোঁট নাড়াবেন না ।নিশ্চয়ই ওহী আপনার আয়ত্ত রাখা ও তা আপনার পাঠ করিয়ে দেয়ার দায়িত্ব আমার ।অতএব আমি যখন আমার ওহী পড়ি ,তখন আপনি সেই পঠনের অনুসরণ করুন ।তারপর তা বর্ণনা করার দায়িত্বও আমার ।এ আয়াত নাযিল হওয়ার পর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) জিবরাঈল এর সাথে সাথে ওহী পাঠ বন্ধ করে দিলেন ।কেবল মনোযোগ সহকারে শুনতেন এবং জিবরাঈল চলে গেলে তিনি তদনুরূপই পড়তেন ।একটি অক্ষরও এদিক-ওদিক হত না ।
হাদিস -০৫ :-
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন ,রাসূলুল্লাহ (সাঃ) মানুষের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দাতা ছিলেন ।আর রমযান মাসে যখন জিবরাঈল (আঃ) তার সাথে সাক্ষাত পুনরাবৃত্তি করতেন ,তখন তিনি বেশি দাতা হতেন ।রমযানের প্রতি রাতেই জিবরাঈল (আঃ) তার সাথে সাক্ষাত পুনরাবৃত্তি করতেন ।(ইবনে আব্বাস (রাঃ)বলেন) নিশ্চয় রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এ সময় বদান্যতার দিক দিয়ে মুক্ত বায়ু অপেক্ষাও অধিক উপকারী হতেন ।
হাদিস -০৬ :-
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত ।আবু সুফিয়ান বলেছেন ,তিনি ব্যবসায় উপলক্ষে সিরিয়া ছিলেন ।তার সাথে মক্কার কোরাইশদের আরও অনেক ব্যবসায়ী দল ছিল ।এ সময় রাসূলুল্লাহ (রাঃ) আবু সুফিয়ান ও কোরাইশদের সাথে সন্ধিসূত্রে আবদ্ব ছিলেন ।তিনি বলেন ,এ সময় হঠাত্‍ একদিন রোম সম্রাট হেরাক্লিয়াস আমাদেরকে ডেকে পাঠালেন ।তিনি তখন ইলিয়া শহরে জেরুজালেম দরবারে বসা ছিলেন ।তাঁর পার্শ্বে রোম প্রধানরা বসা ছিলেন ।দোভাষীর মাধ্যমে কথাবার্তা শুরু হল ।হেরাক্লিয়াস দোভাষীর মাধ্যমে আমাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন ,আরব দেশে যে লোকটি নবুয়ত দাবী করেছে ,তোমাদের মধ্য থেকে বংশের দিক দিয়ে কে তাঁর ঘনিষ্ঠতম ? আবু সুফিয়ান বলেন ,আমি বললাম ,আমিই তাঁর বংশের দিক থেকে বেশি ঘনিষ্ঠতম ।হেরাক্লিয়াস তখন বললেন ,এ ব্যক্তিকে আমার নিকটে বসাও ,আর তার সাথীদেরকেও নিকটেই তাঁর পিছনে বসতে দাও ।তারপড় হেরাক্লিয়াস দোভাষীকে বললেন ,তুমি তাদেরকে বল ,আমি তার নিকট নবুয়তের দাবীদার লোকটি সম্বন্ধে কয়েকটি কথা জিজ্ঞেস করব ।এ ব্যক্তি মিথ্যা কথা বললে ,তারা যেন সে মিথ্যা কথা আমাকে ধরিয়ে দেয় ।আল্লাহর কসম ,আমাকে আমার সাথীদের নিকট মিথ্যাবাদী প্রতিপন্ন হওয়ার লজ্জা বাধা না দিলে আমি রোম সম্রাটের নিকট অবশ্যই মুহাম্মদ (সাঃ) সম্পর্কে মিথ্যা কথা বলতাম ।
পরিচ্ছেদ ০২ :- রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর বাণী : ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি – হাদিসনং ০৭
হাদিস -০৭ :-
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত ।তিনি বলেন ,রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ফরমায়েছেন : পাঁচটি ভিত্তির উপর ইসলাম প্রতিষ্ঠিত । (১)সাক্ষ্য দেয়া যে ,আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন ইলাহ্ নেই এবং মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর রাসূল ।(২)নামায কায়েম করা ।(৩)যাকাত দেয়া ।(৪)হজ্জ আদায় করা এবং (৫)রমযানের রোযা রাখা ।
পরিচ্ছেদ ০৩ :- ঈমানের বিষয়সমূহ – হাদিস নং ০৮
হাদিস -০৮ :-
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত,নবী করীম (সাঃ) বলেছেন,ঈমানের শাখা রয়েছে ষাটেরও কিছু বেশি।আর লজ্জা হল ঈমানের একটি শাখা।
পরিচ্ছেদ ০৪ :- প্রকৃত মুসলিম সে-ই, যার জিহবা ও হাত থেকে অন্য মুসলিম নিরাপদ থাকে – হাদিস নং ০৯
হাদিস -০৯ :-
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত,নবী করীম (সাঃ) বলেছেন,প্রকৃত মুসলিম সে, যার হাত ও মুখ থেকে অন্য মুসলিম নিরাপদ থাকে এবং প্রকৃত মুহাজির সে,যে আল্লাহর নিষিদ্ধ কার্যাবলি ত্যাগ করে।
পরিচ্ছেদ ০৫ :- ইসলামে কোন কাজটি উত্তম – হাদিস নং ১০
হাদিস -১০ :-
হযরত আবু মুসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল!ইসলামে কোন কাজটি উত্তম? তিনি বললেনঃ যার জিহবা ও হাত থেকে মুসলিমগণ নিরাপদ থাকে।
সহীহ্ বোখারী শরীফ (হাদিস ১১ থেকে ২০)

Share this

Related Posts

Previous
Next Post »