নৈতিক গুণাবলি বিকাশের ক্ষেত্রে ইসলামের ভূমিকা কী?


মানুষের মধ্যে নৈতিক গুণাবলি বিকাশের
ক্ষেত্রে ধর্মের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বিশেষ করে মানবতার মুক্তির একমাত্র
পাথেয় পবিত্র ধর্ম
ইসলামে নৈতিকতাকে সর্বাধিক গুরুত্ব
দেয়া হয়েছে। নৈতিকতার
সপক্ষে এবং এর
প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বর্ণনায় পবিত্র
কোরানে ইরশাদ হয়েছে, ‘শপথ মানুষের
এবং তার, যিনি তাকে সুঠাম করেছেন।
অতঃপর তাকে তার সৎকর্ম ও অসৎকর্মের
জ্ঞানদান করেছেন। সেই সফলকাম
হবে যে নিজকে পবিত্র করবে এবং সে-ই
ব্যর্থ হবে যে নিজকে কলুষাচ্ছন্ন
করবে।’ (সুরা শামস, আয়াত ৭-১০)।
পবিত্র কোরানে উত্তম নৈতিক
মূল্যবোধের সব মৌলিক বৈশিষ্ট্যগুলোক
একত্রে সন্নিবেশিত করে আল্লাহ
তায়ালা ঘোষণা করেন ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ
তায়ালা তোমাদের সুবিচার, কল্যাণ
কামনা ও আত্মীয়তার বন্ধনকে সুদৃঢ় করার
নির্দেশ দেন এবং অন্যায়-অশ্লীলতা, জুলুম
ও খোদাদ্রোহিতা থেকে বিরত থাকার
নির্দেশ দেন। আল্লাহ তোমাদের নসিহত
করেন এ জন্য যে,
যাতে তোমরা শিক্ষা গ্রহণ
করতে পার।’ (সুরা নাহল, আয়াত-৯০)
নবী করিম (সা.) ছিলেন উন্নত ও উত্তম
নৈতিকতার এক অনুপম আদর্শ। স্বয়ং আল্লাহ
রাব্বুল আলামিন তাকে সার্টিফাই করেন
এভাবে ‘নিশ্চয়ই আপনি মহান
চরিত্রে অধিষ্ঠিত।’ (সুরা কলম. আয়াত-৪)।
নবী করিম (সা.)-এর নৈতিকতার
উল্লেখযোগ্য মৌলিক গুণাবলি ছিল
ন্যায়বিচার, ইনসাফ, আল্লাহর রাস্তায় ব্যয়,
বিশ্বস্ততা, ওয়াদা পালন, সততা,
কর্তব্যবোধ, শালীনতা, বদান্যতা, সঠিক
পন্থা গ্রহণ, ন্যায়পরায়ণতা,
প্রয়োজনে প্রতিশোধ গ্রহণ, উদারতা,
মধ্যপন্থা প্রভৃতি। এ মহৎ কাজগুলো শুধু
নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করেই
তিনি ক্ষান্ত হননি বরং নৈতিক মূল্যবোধ ও
নৈতিক আচরণগুলোর প্রতি যে উৎসাহ
এবং প্রেরণা দিয়েছেন তা সত্যিই অনন্য।
হাদিসে এসেছে, হজরত নাওয়াস
ইবনে সাময়ান বর্ণনা করেন,
‘একদা রাসুলকে (সা.) নেক ও বদ আমল
সম্পর্কে প্রশ্ন
করা হলে তদুত্তরে তিনি বলেন, নেক
আমল হচ্ছে উত্তম চরিত্র আর বদ আমল
হচ্ছে যে কাজ তোমার বিবেকের
কাছে সদ্বিগ্ন মনে হয়, আর তা লোকের
কাছে প্রকাশ হয়ে পড়ুক এটা তুমি চাও
না।’ (মুসলিম, তিরমিজী)। অন্যত্র বর্ণিত
হচ্ছে, নবী করিম (সা.) বলেছেন
‘কিয়ামতের দিন মমিনের নেকের
পাল্লা ভারি করার মতো উত্তম চরিত্রের
চেয়ে ভারি কোনো আমল নেই। আর
অবশ্যই আল্লাহ অশ্লীল ও অশ্রাব্য
গালিগালাজকারীর ওপর অসন্তুষ্ট।
(তিরমিজী ও ইবনে মাজাহ)।
সুতরাং কোরান ও হাদিসে নৈতিকতার
প্রতি যে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে, উন্নত
নৈতিক গুণাবলি মেনে চলার যে ফজিলত
বর্ণনা করা হয়েছে তা কারো জানার
মধ্যে নয় বরং মানার মধ্যেই
রয়েছে যথার্থ সার্থকতা।
মাওলানা মিরাজ রহমান

Share this

Related Posts

Previous
Next Post »