আসল ওয়াহাবি কে এবং কারা?
মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওয়াহ্যাব নজদী তেরশ শতাব্দিতে আরবের নজদ নামক প্রদেশে আত্তপ্রকাশ করে।সে ভ্রান্ত আকিদায় বিশ্বাসী ছিল ।সে আহলুসসুন্নাত ওয়াল জামাতের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত থাকত এবং তার নিজ আকিদা ছাড়া অন্য আকিদার মুসলমানদের কাফের হিসাবে আখ্যায়িত করত। ভিন্ন আকিদার মুসলমানদের মাল ধন সম্পদ জোর করে ছিনিয়ে নেওয়াকে হালাল ও তাদের হত্যা করাকে পূণ্যের কাজ বলে ফতো্যা দিত।এই ওয়াহাবীরা তৎকালীন আমলে দলে এত ভারী ছিল যে তাদের হাতে হাজার হাজার খাটি মুসলমান শহিদ হয়েছিল।তাদের অত্যাচারে তৎকালীন সময়ে মক্কা মদিনার অনেক মুসলমান পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল।সেই থেকে আরব দেশসহ অন্যান্য মুসলিম দেশে ওয়াহাবী ও তার অনুসারীদের কঠোর সমালোচনা করা হয় ও ঘৃনা চোখে দেখা হয়।
ওয়াহাবীদের আকিদা বা মুলনীতি।
১/ওয়াহাবীরা এই আকিদা পোষন করে যে নবী রসুল গনের জীবন শুধু মাত্র ইহকাল পর্যন্ত সীমিত মৃত্যুর পর ওনারা অন্যান্য সাধারন মুসলমানদের মত কবরে বিলীন হয়ে যায়।(নাউযুবিল্লাহ)
তারা নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে আজেবাজে কথা বলে যা ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব।
২/ওরা নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিজেদের সমকক্ষ মনে করে।নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে শুধু মাত্র তাবলীগের কাজে পাঠানো হয়েছে।(নাউযুবিল্লাহ)
৩/নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওজা মোবারক জিয়ারত করাকে বিদাআত ও হারাম বলে মনে করে।
৪/ এরা রাসুল করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে গায়েবী সালাম আস্সালাতু আস্সালামু আলাইকা বলা কে শিরক ও হারাম মনে করে।
৫/এরা মনে করে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কেবল শরিয়তী ইলম জানা ছিল বাতেনী ইলম জানতেন না।নাউযুবিল্লাহ।
৬/আত্তসুদ্ধি, সুফিয়াকেরামদের নিয়ম নীতি ,মুরাকাবা, পীর মুরিদিকে নাজায়েজ ও হারাম বলে।
৭/এরা নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি দুরুদ সালাম দালায়েলুল, কাছিদাবুরদা পাঠানো অপছন্দনীয় কাজ বলে মনে করে।
৮/এরা নবীগন ও আউলিয়াগনের জীবন বৃত্তান্ত আলোচনাকে খারাপ মনে করে
।
৯/ওয়াহাবীরা নিজেদের আকিদা ছাড়া অন্য আকিদার লোকদের কাফের বলে সম্বোধন করে।
১০/তারা অন্য আকিদার মুসলমানদের মাল সম্পদকে গনিমতের মাল মনে করে এবং তাদের ধন সম্পদ কেড়ে নেওয়াকে হালাল মনে করে।
আমাদের দেশে মাদ্রাসা শিক্ষার দুটি ধারা আছে একটি আলিয়া আরেকটি কওমী।আলিয়া মাদ্রাসা সম্পূর্ণ সরকারি অনুদানে পরিচালিত হয়।ওখানে সরকার নির্দেশিত সিলেবাস অনুযায়ি পড়ানো হয়।আর কওমি মাদ্রাসা সম্পূর্ণ জনগনের সহযোগিতায় পরিচালিত তাই এই মাদ্রাসাগুলি নিজস্ব সিলাবাসে পাঠদান করে।( মাদ্রাসা শিক্ষা দুই ধারা বিভক্ত হওয়ার ইতিহাস আছে তা ইনশাআল্লাহ অন্য সময় আলোচনা করব)।আমাদের দেশের এক শ্রেণীর আলেম এই কওমী আলেমদেরকে ওয়াহাবী বলে সম্বোধন করে।কিন্ত বাস্তবে দেখা যায় এই কওমী আলেমরা বর্তমানে সবচেয়ে বেশি সুন্নত পালন করেন।ওয়াহাবী আকিদার একটি আকিদাও কওমী আলেমদের মাঝে নাই।রাসুল করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ভালবাসার ব্যাপারে এবং উনার সুন্নত পরিপূর্ণ ভাবে পালনের ব্যাপারে কওমী আলেমগন সবচেয়ে বেশি অগ্রগামী।উনারা শুধু বাহ্যিক গত (পোষাক ,দাড়ি, কথা-বার্তা ইত্যাদি) সুন্নত নয় আভ্যন্তরীন (খাওয়া দাওয়া, ঘর-সংসার, তাহাজ্জুদের নামায ইত্যাদি) সুন্নতের ব্যাপারেও খুবই যত্নবান।কওমী আলেমগন বেশির ভাগই খুব সাধারন জীবন যাপন করেন।তারা রাসুলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কোন ব্যাপার নিয়ে বাড়াবাড়ি করেন না।ঠিক যতটুকু হাদিসে পাকে আছে ততটুকুই পালন করেন।নিজ হতে কোন কিছু বাড়ানোকে বিদাআত ও কোন কিছু কমানোকে হারাম মনে করেন।