June 9th, 2015
সূত্র-somoyerkonthosor.com
হবিগঞ্জ: একদিনে মুরগিটি ডিম পেড়েছে ১৩টি। এমন কথা বিশ্বাসযোগ্য মনে না হলে কিন্তু ঘটনা সত্যি। মুরগিটি দেখতে মোরগের মত হলেও আসলে এটি মুরগি।
শারীরিক অবয়বে মুরগিটি সাধারণ হলেও একদিনে পর পর ১৩টি ডিম পেড়ে অসম্ভবকে সম্ভব করেছে। এমন অবাস্তব ঘটনা ঘটেছে হবিগঞ্জে।
আলোড়ন সৃষ্টিকারী মুরগিটির মালিক হবিগঞ্জ সদর উপজেলার পইল গ্রামের সৈয়দ মাইনুল হক আরিফ। তার বাবা উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ আহমেদুল হক।
মুরগি মালিক আরিফ জানান, গত বছর সেপ্টেম্বরের মাঝামঝি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত মুরগিটি প্রতিদিন তিনটি করে ডিম দিতে থাকে। প্রায় দেড় মাস বন্ধ থাকার পর চলতি বছর ৫ জানুয়ারি থেকে পুনরায় একাধিক ডিম পাড়া শুরু করে। বুধবার সর্বোচ্চ ১৩টি ডিম পেড়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে।
এমবিএ করা আরিফ জানান, নেদারল্যান্ডের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণীবিদ্যায় পিএইচডি করছেন তার নিকটাত্মীয় সৈয়দ সায়েম উদ্দিন। মুরগিটির ছবি ও বৃত্তান্ত জানিয়ে তাকে ই-মেইল করেন তিনি।
জবাবে সায়েম উদ্দিন তাকে জানিয়েছেন, মুরগিটির জেনেটিক কোনো সমস্যা থাকতে পারে। যে কারণে ডিম ধরে রাখতে পারছে না। যেকোনো সময় মুরগিটি মারা যেতে পারেন বলে জানান তিনি।
আরিফ জানিয়েছেন, তার পোলট্রি ফার্মের জন্য গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে স্থানীয় অলিপুরের সিপি হ্যাচারি থেকে একদিন বয়সী ব্রাউন লেয়ার প্রজাতির দুই হাজার মুরগির বাচ্চা কেনা হয়। পাঁচ মাস বয়সে ডিম পাড়ার কথা থাকলেও মুরগিগুলো ছয় মাস বয়সে ডিম দিতে শুরু করে।
তিনি জানান, একদিন তিনি লক্ষ্য করলেন, তার খামারে অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠা একটি মুরগি ঠিক মোরগের মতো আচরণ করছে। মাথার ঝুঁটিও মোরগের মতো। পরে মুরগিটি তিনি অন্য খাঁচায় আলাদা করে রাখেন।
গত বছর সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত মুরগিটি প্রতিদিন তিনটি করে ডিম দিতে থাকে। প্রায় দেড় মাস বন্ধ থাকার পর চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি থেকে পুনরায় একাধিক ডিম দিতে শুরু করে। মুরগিটি বুধবার সর্বোচ্চ ১৩টি ডিম পেড়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। মুরগিটির ওজন ৩ কেজি ৭শ’ গ্রাম বলে জানান তিনি।
আরিফ জানান, প্রথমে আমি নিজেও বিশ্বাস করেনি। একদিন ভোরে নিজেই দূর থেকে লক্ষ্য করছিলাম, কিছুক্ষণ পর পর মুরগিটির ডিম পাড়ার দৃশ্য। এ ঘটনা স্থানীয় মসজিদের ইমামসহ কয়েকজনকে দেখিয়েছি।
এ ব্যাপারে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মাহবুবুল আলম গণমাধ্যমকে জানান, প্রাণীদেহে যে গ্র্যাল্ড থাকে তা থেকে অতিরিক্ত হরমোন নিঃসরণ হওয়ায় প্রজনন ইন্দ্রিয়ের কার্যক্রমতা বেড়ে যায়। এ কারণেই হয়তো মুরগিটি মাত্রাতিরিক্ত ডিম দিচ্ছে।
তিনি জানান, খামারি মালিক যদি মুরগিটি পরীক্ষার জন্য দেন তাহলে গবেষণাগারে পাঠিয়ে এর কারণ জানা যাবে। সরকারিভাবে বা কোনো প্রাণী গবেষক মুরগিটির ওপর গবেষণা করতে চাইলে তাতে আপত্তি নেই আরিফের।