বিমানবন্দরে ১৫ লিটার বুকের দুধফেলে দিতে হলো

লন্ডনের হিথ্রো বিমান বন্দরে কন্টেইনারে
করে বুকের দুধ নিয়ে যাওয়ার সময় সেটা
ফেলে দিতে বাধ্য করায় একজন মা চরম
হতাশা প্রকাশ করেছেন।

অ্যামেরিকান ওই নারী ফেসবুকে কর্তৃপক্ষের
কাছে এবিষয়ে একটি খোলা চিঠি পোস্ট
করেছেন।
সেখানে তিনি লিখেছেন, নিরাপত্তার
খাতিরে তাকে প্রায় ১৫ লিটার বুকের দুধ
ফেলে দিতে বাধ্য করা হয়।
এই দুধের বেশিরভাগই ছিলো হিমায়িত বা
ফ্রোজেন।
জেসিকা ককলি মার্টিনেজ নামের এই মহিলা
তার আট বছর বয়সী ছেলেকে ছাড়াই ভ্রমণ
করছিলেন। তিনি জানান, ওই শিশুটির জন্যেই
তিনি তার বুকের দুধ জমিয়ে রেখেছিলেন।
তিনি লিখেছেন, “তোমরা আমার আমার
ছেলের প্রায় দু’সপ্তাহের খাবার ফিলে
দিয়েছো।”
হিথ্রো বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, যুক্তরাজ্য
সরকারের বিধিমালায় স্পষ্ট করে তরল পদার্থ
বহন সংক্রান্ত নীতিমালা উল্লেখ করা আছে
যা সরকারের ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়।
এই নির্দেশনায় বলা আছে, সর্বোচ্চ ১০০
মিলিলিটার পর্যন্ত তরল পদার্থ বহন করা
যেতে পারে এবং সেটা নিতে হবে একটি
স্বচ্ছ ব্যাগের ভেতরে।
ওয়েবাসইটে বলা হয়েছে, শিশু-খাদ্যের
বেলায় এর ব্যতিক্রমও হতে পারে। তবে ওই
শিশু যদি যাত্রীর সাথে থাকে তাহলেই সেটা
প্রযোজ্য হবে।
কর্তৃপক্ষ বলছে, তবে মূল লাগেজে করে
অতিরিক্ত তরল পদার্থ বহন করা যেতে পারে।
এই মহিলা তার স্ট্যাটাসে আরো লিখেছেন,
“যদিও ওয়েবসাইটে গিয়ে এই নিয়ম তার জেনে
নেওয়া উচিত ছিলো, তারপরেও কর্মজীবী
একজন মা হিসেবে তিনি মনে করেন এই
সিদ্ধান্ত ন্যায়সঙ্গত নয়।।”
এই মহিলা কাজের জন্যে প্রায়শ ছেলের কাছ
থেকে দূরে থাকেন।
তিনি লিখেছেন, সেকারণে কাজের ফাঁকে
ফাঁকে তিনি বুকের দুধ বের করে সন্তানের
জন্যে জমিয়ে রাখেন।
তিনি আরো লিখেছেন, “আমি জানি না এখন
আমি কি করবো। কাজে গেলে ছেলেকে
খাওয়ানোর জন্যে যথেষ্ট দুধও আমার কাছে
আর অবশিষ্ট নেই।”
“কর্মজীবী একজন মা হিসেবে একজন নারীর
পক্ষে খুব কঠিন তার সন্তান ও অফিসের
চাহিদা একইসাথে পূরণ করা। কিন্তু একটি
মাত্র দুপুরের মধ্যেই পুরো বিষয়টি আরো কঠিন
হয়ে পড়েছে,” লিখেছেন তিনি।
“বিমানবন্দরে নিরাপত্তাকে প্রাধান্য দেওয়া
হচ্ছে। কিন্তু এটাই একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত
নয়।”
“আক্ষরিকভাবে বলতে গেলে আমার সন্তানের
মুখ থেকে তার খাবার কেড়ে নেওয়া হয়েছে।
এতে পেশাজীবী মা হিসেবে আমি নিজেকে
খুব অপমানিত আর পরাজিত বোধ করছি।”
তিনি লিখেছেন, তরল দুধ আমি ফেলে দিতে
চেয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমাকে জমে
যাওয়া দুধও ফেলে দিতে বলে। কারণ একসময়
এটা গলে গিয়ে তরল আকারে রূপ নিতে পারে।
২০০৬ সালে তরল পদার্থের মাধ্যমে বিমানে
বিস্ফোরণ ঘটানোর এক ষড়যন্ত্র ধরার পড়ার
পরই এবিষয়ে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।

Share this

Related Posts

Previous
Next Post »