ভূমিকম্প
পরবর্তী উদ্ধার তৎপরতা ও প্রস্তুতি নিয়ে সরকার তৎপর রয়েছে। ইতোমধ্যে ১০০ কোটি টাকার তাঁবু ক্রয় করা হয়েছে। ভূমিকম্প পরবর্তী অনুসন্ধান ও উদ্ধার তৎপরতার জন্য ৬৯ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কাছে হস্তান্তর করেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। এছাড়া উদ্ধার তৎপরতার জন্য ১৭০ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি ক্রয় প্রক্রিয়াধীন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শাহ্ কামালের সভাপতিত্বে গত ৮ এপ্রিল মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ভূমিকম্প সম্পর্কে সচেতনতা বিষয়ে করণীয় ও সরকারের প্রস্তুতিমূলক এসব তথ্য উপস্থাপন করা হয়।
সভায় আরো জানানো হয়, ভূমিকম্পে করণীয় নির্ধারণসহ জনসচেতনতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে সারাদেশে প্রতিটি জেলায় সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিজীবীসহ সর্বস্তরের পেশাজীবী, এনজিও কর্মী, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষার্থী, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের জনপ্রতিনিধিসহ সর্বস্তরের জনগণকে সম্পৃক্ত করে একযোগে ভূমিকম্প সচেতনতা বিষয়ক মহড়া প্রতিটি জেলায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাছাড়া ঢাকা মহানগরীকে বিভিন্ন জোনে বিভক্ত করে ৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভূমিকম্পে করণীয় সম্পর্কে মহড়া আয়োজন করা হয়েছে। আগামী ১৩ অক্টোবর আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে সারাদেশে একসাথে ভূমিকম্পে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে মহড়া আয়োজনের উদ্যোগ নেয়া হবে।
ভূমিকম্পে করণীয় বিষয়ে সভায় যেসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় সেগুলো হলঃ
কোর কাটিং মেশিন এবং বিল্ডিং স্ক্যানার মেশিন সংগ্রহপূর্বক ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্স এর কাছে হস্তান্তর করা; ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্সকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় আনয়নের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা; ভবন মালিকগণ সরকারের নিযুক্ত সার্টিফাইড এজেন্সির মাধ্যমে ভবন পরীক্ষানিরীক্ষা করিয়ে ভবনের উপযুক্ততা সম্পর্কে সনদ রাজউকে জমা প্রদানের বিষয়ে জনসাধারণকে সচেতন করা; নির্দিষ্ট মাত্রার ভূমিকম্পে গ্যাস সংযোগ যাতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সেজন্য সারাদেশে গ্রাহক পর্যায়ে গ্যাস লাইনের সেন্সর লাগানোর ব্যবস্থা গ্রহণ; ভবনের নকশা অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ নকশা অনুযায়ী মাটি পরীক্ষাপূর্বক ভবন নির্মাণ কার্যক্রম তদারকির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা; ভূমিকম্পে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিতকরণসহ তা ভেঙ্গে ফেলার জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, আরকিওলজিক্যাল ডিপার্টমেন্ট, ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্স, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডিএমভিএস এবং বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের একজন করে প্রতিনিধি সমন্বয়ে সেল গঠন করা।
সভায় বুয়েটের অধ্যাপক মেহেদী আলম আনসারী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক মাকসুদ কামাল, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের উপসচিব ড. মহঃ শের আলী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডিএমভিএস বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবা নাসরিন উপস্থিত ছিলেন।