পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ.এইচ. মাহমুদ আলী গত ২২ মে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সাম্প্রতিক সময়ে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের সাথে জামায়াতকে দোষারোপ করে বক্তব্য দেয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেছে জামায়াতে ইসলামী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের আজ সোমবার এক বিবৃতিতে বলেন, তার এ বক্তব্য সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। সাম্প্রতিক সংঘটিত কোনো হত্যাকাণ্ডের সাথে জামায়াতের কোনো সম্পর্ক নেই। জেএমবিসহ অন্যান্য কোনো সংগঠনের সাথেও জামায়াতের কোনো সম্পর্ক নেই। এগুলো জামায়াতের অঙ্গ সংগঠন হওয়ার প্রশ্নই আসে না। ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ণ করার হীন উদ্দেশ্যেই পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওই সব উগ্র সংগঠনের সাথে জামায়াতের সম্পর্ক থাকার কথা জুড়ে দিয়ে অপপ্রচার চালিয়েছেন।
তিনি বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী জামায়াতের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অসত্য বক্তব্য দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর কূটনীতিকদের বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালিয়েছেন। তার মনে রাখা উচিত, তিনি যদি মনে করে থাকেন, তিনিই সব কিছু জানেন ও বুঝেন অন্যরা কিছুই বুঝে না তাহলে সেটা হবে তার মস্তবড় বোকামী। বিজ্ঞ কূটনীতিকগণ বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে ভালোভাবেই অবহিত আছেন। কাজেই আমি আশা করি তাদের অসত্য বক্তব্য দিয়ে বিভ্রান্ত করা যাবে না।
ডা. তাহের বলেনর, সরকার অব্যাহতভাবে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীসহ বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের প্রকাশ্য দিবালোকে বাসাবাড়ি থেকে ধরে এনে ও হত্যা করছে। তাদের হত্যা থেকে সাধারণ মানুষও রেহাই পাচ্ছে না। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিনাবিচারে মানুষ হত্যা করছে ও গুম করছে। আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গ সংগঠনগুলোর সন্ত্রাসী নেতা-কর্মীরা নিজেদের দলের নেতা-কর্মীদের পর্যন্ত নির্বিচারে হত্যা করছে। তারা সংখ্যালঘুদের জায়গা জমি, ঘর-বাড়ি দখল করছে ও সংখ্যালঘুদের হত্যা করছে। দেশে বর্তমানে যে সব গুম, হত্যা, সন্ত্রাস ও ডাকাতি, ছিনতাই, দখলদারী, চাঁদাবাজী চলছে তার নাটের গুরু আওয়ামী লীগ। এ কারণেই দেশের জনগণের মনে প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে, সাম্প্রতিক যে সব হত্যাকাণ্ড হচ্ছে তার সাথে কি আওয়ামী লীগই জড়িত?
তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামীর ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে সরকার রেহাই পাওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। জামায়াতের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে সরকার রেহাই পাবে না। বাংলাদেশ সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের দেশ। এ দেশ কোনো দল, ব্যক্তি কিংবা গোষ্ঠীর সম্পত্তি নয়। এ দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হলে দেশবাসী সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। জামায়াতে ইসলামী অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির রাজনীতিকে ঘৃণা করে।
তিনি আরো বলেন, জামায়াত নিয়মতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক ধারার রাজনীতিতে পরিচালিত হয়ে আসছে। সরকার এবং সরকারি দল রাষ্ট্রীয় ও দলীয় সন্ত্রাসের সাথে সংশ্লিষ্ট। দেশকে সন্ত্রাসমুক্ত করতে হলে আগে সরকার এবং সরকারি দলের কর্মকাণ্ডে পরিবর্তন আনতে হবে। দেশের জনগণ সন্ত্রাসমুক্ত দেশ চায়।
বিভ্রান্তিকর অসত্য বক্তব্য রাখা থেকে বিরত থাকার জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতি আহবান জানান এ জামায়াত নেতা।
সুত্রঃ নয়াদিগন্ত