শুকরমিশ্রিত পণ্যঃ (সতর্ক হুঁশিয়ারী)

পরম করুনাময় আল্লাহ্ এর নামে শুরু করলাম

আসসালামু আলাকুম, কেমন আছেন সবাই? আশা করি ভালই আছেন, আমি ও আমরা আপনাদের দোয়ায় এবং আল্লাহ্র অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছি।
মুসলমানদের ঈমান দূর্বল করার জন্য ইয়াহুদী ও খৃষ্টানদের পক্ষ থেকে সুক্ষ্ম ও গভীর ষড়যন্ত্র চলে আসছে সেই সুদীর্ঘকাল থেকে। তা এখনো চলছে। ইয়াহুদী ও খৃষ্টানরা অত্যন্ত সুকৌশলে পরিকল্পিত ভাবে মুসলমানদের ঈমানী চেতনাকে চিরতরে ধ্বংস করর জন্য মুসলমানদের ইবাদাত উপকরণ, খাদ্যসামগ্রী ও পোশাক পরিচ্ছদসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সকল প্রসাধনীর মধ্যে শুকর মিশ্রিত এমন হারাম উপদান সংমিশ্রণ করছে। শুকর সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেছেন “তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত পশু, রক্ত ও শুকরের মাংস এবং শৃঙ্গাগাতে মৃত জন্তু।” (সূরাহ মায়িদাহ, আয়াতঃ ৩) হাদীস শরীফে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেন “ আল্লাহ তায়ালা মদ, মৃত জন্তু, শুকর ও মূর্তি পূজাকে হারাম করেছেন।” (বুখারী ও মুসলিম)
মুসলমানদের ঈমানকে ধ্বংস করার জন্য ইয়াহুদী ও খৃষ্টানরা যে শুকরমিশ্রিত হারাম উপদান দ্রব্যসামগ্যতে ব্যবহার করছে, তা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ হয়ে আসছে। সে সকল প্রকাশিত তথ্যের কিছু নিম্নে তুলে ধরা হল-
০১- সিঙ্গাপুরস্থ মুসলিম মিশনারী সোসাইটির মৃখপত্র “দৈনিক ভংয়েজ অব ইসলাম” এ প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী জানা যায়, বিদেশী বিভিন্ন মহলের পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে যে, ছোট ও বড়দের  জন্য তৈরী অনেক শুকনো দুধে শূকরের চর্বি মেশানো হয়ে থাকে। এ বিষয়ের সত্যতা এম কি খেজা বিরচিত বই থেকেও প্রমাণিত: প্রতি ৮৮৪গ্রাম শুকনো দুধে ১২০গ্রাম শুকরের চর্বি থাকে সেখানে  উল্লেখ রয়েছে।
০২- বিশ্বমুসীলমের অবগতির লক্ষে প্রফেসর আমজাদ ছাকার বৈরুত এর একটি প্রবন্ধ সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার কর্তৃক প্রচারিত হয়েছে। যার মধ্যে অত্যধিক প্ররিশ্রম ও গবেষণার পর ইউরোপ ও আমেরিকার কতিপয় সামগ্রীয় কিরিস্তি দেয়া হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে শুকরের দেহের কোন না কোন অংশ রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে সাবান, ক্রীম ও বিভিন্ন প্রকার খাদ্য যেমন চকলেট, বিস্কুট, পানির, রুটি এবং বিভিন্ন ধরনের পেয় সামগ্রী রয়েছে।
০৩-বিদেশী জুস, আচার, জ্যাম, জেলী প্রভৃতিও আশংকাযুক্ত। খৃষ্টান ও ইয়াহুদী অধ্যুষিত বহির্বিশ্বে জেল্যাটিন বিহীন কোন জুস, জেলী ও আচার তৈরী হয় না। জেল্যাটির শুকরের চামড়া ও হাড় থেকে প্রস্তুত করা হয়, এটা হালাল নয়।
০৪। “শুকরের চর্বি ‍দিয়া লাচ্ছা সেমাই ভাজা হচ্ছে” শিরোনামে ইনকিলাব প্রতিকায় সচিত্র প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে। বর্ণিত সেই লাচ্ছা সেমাই তৈরীতে যে পশুর চর্বি ব্যবহার হয়, তার ৯০ ভাগই নাকি শুকরের চর্বি।
০৫- পশুর চর্বির উৎস একাধিক যেমনঃ গরু, ছাগল, মহিষ, ভেড়া ইত্যাদি, এমনকি কুকুরও। আবার তা এসব জীবিত ও মৃত প্রাণীর দেহ থেকে সংগৃহীত চর্বি হতে পারে। এসব চর্বি থেকে নানা খাদ্য উৎপাদিত হয় যেমনঃ ডালডা। তাই এ ব্যাপারে সাবধানতা জরুরী।
০৬- কোকাকোলা, ফান্টা মিরিন্ডা, সেভেনআপ প্রভৃতি, কোমল পানিয়তে কমপক্ষে ৩.২%হারে  এথকোহল (মদ) থাকে। ফলে তা মুসলমানদের জন্য হালাল পানীয় হতে পারে না। (দ্রষ্টব্যঃ দৈনিক ইনকিলাব, ২৭ এপ্রিল-২০০৪ইং)।
০৭- দৈনিক আমার দেশ পত্রিকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জনাব শামছুল আলম লিখেছেন, আমেরিকান পণ্যদ্ব্যের মধ্যে অন্যতম হলো পেপসি ও কোকাকোলা। পেপসি ও কোকাকোলা তৈরীর উপদানগুলোর মধ্যে একটি অংশ হচ্ছে শূকরের নাড়িভুড়ি (পাকস্থলি)। উপরোক্ত পানীয় গুলোর জন্য পাশ্চাত্যের দেশগুলো থেকে পাউডার আকারে আমাদের দেশে উপাদান গুলো আসে এবং বাজার জাত করা হয়। (দ্রষ্টব্যঃ দৈনিক আমার দেশ, ১১ নভেম্বর-২০০৪ইং)।
০৮- “শুকরের চর্বি মিশ্রিত চর্বি মিশ্রিত নিষিদ্ধ তাল্লো আসছে” শিরোনামে দৈনিক ইনকিলাবের প্রথম পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে “তাল্লো যা সাধারণত গরু বা শুকরের চর্বি থেকে তৈরী করা হয়, তা বাংলাদেশে আসছে কুকিং অয়েল, মিক্রার ফ্যাটি এসিড ও এসিড অয়েল নামে। আর এই তাল্লোই সেমাই, লাচ্ছা, নুড়ুলস, পরোটা ও আনুষঙ্গিক খাদ্যদ্রব্যে ব্যাপকহারে ব্যবহার করা হচ্ছে।” (দ্রষ্টব্য: দৈনিক ইনকিলাব, ১৯ নভেম্বর-২০০৪)
সুতরাং মাসলমানদের ঈমানী দায়িত্ব হচ্ছে-এ ব্যাপারে নিম্নের শব্দগুলো নোট করা এবং স্মরণে রাখা, যাতে কোন বস্তুর গায়ে এ লেখা দেখেই বুঝা যায় যে, এটি হারাম দ্রব্য। এসব বস্তুর ব্যবহার ও বেচাকেনা সম্পূর্ণ নাজায়িজ ও হারাম হবে।
বিভিন্ন দেশে শুকরের বিভিন্ন নাম রয়েছে। যে ভাইয়েরা বিদেশে থাকেন বা যাবেন তারা নামগুলো জেনে নিন।
í Swine (সোয়াইন), Hog (হগ), Pig (পিগ), বিভিন্ন দেশে শূকরের এসব নাম খুবই প্রচলিত। এ ছাড়াও রয়েছে Bacon (বেকন)- যা লবণত্বরিত শুকরের গোশত। এছাড়া Ham (হাম), Sporkel (স্পোর্কল), Porker (পর্কার) এসব শুকরের গোশতের নাম।
í শূকরের চর্বিকে বলা হয় Lard (লার্ড), Gelio (জেললো) ও Gelatia (জেলটিন) এক প্রকার তরল পদার্থ, যার অধীকাংশ উপদান হচ্ছে শূকরের চামড়া, হাড় ও খুর।
í Pepsin (পেপসিন) শূকরের রক্ত মিশ্রিত একটা মিডিসিন। Pepsi cola (পেপসি কোলা) নামক প্রসিদ্ধ কোমলা পানীয়ের মধ্যে নামক শূকরের রক্ত মিশ্রিত করা হয়।
í এছাড়াও নিম্নবর্ণিত ব্যবহৃত সামগ্রীর মধ্যে শূকরের চির্ব মিশানো হয়: Camy Soap (ক্যামি সোপ), Lux Soap (লাক্স সোপ), Avery Soap (অ্যাভার সোপ, Zick Soap (যিকট সোপ), Saif Gurd (সেইফ গার্ড), Lata (লতা, Liscap (লিসক্যাপ, Bryl Cream (ব্রাইল ক্রীম) ইত্যাদি।

í পাশ্চাত্যের Kolgate-কোলগেট ও বার্ডের ফুট কোম্পানীর তৈরী টুথপেস্টের মধ্যেও শূকরের চর্বি থাকে।
(দ্রষ্টব্য: দৈনিক ইনকিলাব, ২৩ মে-১৯৯০ইং/সাপ্তাহিক অগ্রযাত্র ২০ ডিসেম্বর-১৯৯৫ইং/দৈনিক কর্ণফুলী, ১৯জুলাই-২০০২ইং।
এছাড়াও জ্ঞাতব্য যে, Pepsi-এর নামকরণের মধ্যেই ইসরাঈলের স্বার্থ রক্ষার ব্যাপারে রয়েছে। যথা PEPSI এর তাৎপর্য হচ্ছে- P-Pay, E-Each, P-Penny, S-Save, L-Lsrail. সুতরাং Peosi অর্থাৎ Pay each penny to save israil. অর্থাৎ প্রতিটি পর্যসা ইসরাঈলকে রক্ষা করতে ব্যয় করুন।
(দ্রষ্টব্যঃ দৈনিক ইনকিলাব, ০৯ এপ্রিল-২০০৪, দৈনিক আমার দেশ, ১১ নভেম্বর-২০০৪ইং)
অতএব, উপরোলি।লীখত শূকরমিশ্রিত পণ্য ব্যবহার করবেন না। মুসলমান হিসাবে আমাদের অবশ্যই এই পন্যগুলো পরিহার করা উচিত।

Share this

Related Posts

Previous
Next Post »