প্রকৃত প্রেম নাকি শর্ত মেনে আসে না। জাস্ট হুট করে চলে আসে। তখন যদি প্রেমকে চাওয়াপাওয়ার বেড়াজালে বেঁধে ফেলা হয়, পালাবার পথ খোঁজে সেই প্রেম।
একদিন পালিয়ে যায় অজান্তেই। যখন হুঁশ ফেরে, সব শেষ। পড়ে থাকে সমঝোতার ছিটেফোঁটা। পুরুষের অনেক ত্রুটি নারীর জীবন নরক করে তুলতে পারে। আবার নারীর কিছু একগুঁয়ে আচরণও সম্পর্কে ডেকে আনতে পারে অশান্তি। বরং বলা ভালো, অভিযোগের পাল্লাটা নারীর দিকেই বেশি ভারী। পুরুষের কাছে নারীর প্রত্যাশা ও দাবি এতটাই প্রখর, যে সেই জোরাজুরিতে অনেক প্রেম নষ্ট হয়ে যায়। তাই আগেভাগেই কিছু প্রত্যাশা দমন করতে জানতে হবে নারীকে। তা হলেই হয়তো টিকবে প্রেম, আজীবন।
প্রেম শুরু হওয়ার আগেই সেটির অকাল প্রয়াণ ঘটে কোনো কোনো নারীর দোষে। প্রেমের প্রস্তাব নাকি পুরুষকেই দিতে হবে, এমন আশায় বুক বাঁধেন তাঁরা। কিন্তু সত্যি করে বলুন তো, মনের কথা বলার কপিরাইট কি কেবল পুরুষের একার? নারী-পুরুষ 'সমান সমান' যুগে নারীর কনফিডেন্সের এমন হালত হবে কেন? তাই এগিয়ে যান, বলে ফেলুন মনের কথা। প্রস্তাবের ধরন ঠিক হলে কেউ আপনাকে ডেসপো বলবে না।
ইগোর লড়াই একেবারেই নয়
নারী বলে কেবলই যে আপারহ্যান্ড নিয়ে বসে থাকবেন, এমনটা আশা করা ভুল। বরং এগিয়ে যান। প্রথমে 'সরি' বললে কোনো ক্ষতি হয় না, সম্মানহানিও হয় না। সম্পর্কটা খারাপ দিকে গড়িয়ে যাচ্ছে দেখেও ইগো রক্ষার খাতিরে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকবেন না। সঙ্গী যদি 'গোমড়াথেরিয়াম' মূর্তি ধারণ করেন, নিজেই দায়িত্ব নিন। পুরুষ বলেই যে তাঁকে এগিয়ে আসতে হবে, এমন আশা ত্যাগ করুন।
ঘর, বাথরুম পরিষ্কার করুন নিজে
ছুটির ওই একটা দিনই তিনি বাড়িতে থাকেন, বিশ্রাম নেন। কোথায় আপনি তাঁকে আরাম করতে বলবেন। তা না, হাতে ঝুলঝাড়ু ধরিয়ে দিয়ে বললেন, সিলিংয়ের কোণার ঝুলগুলো ঝেড়ে দিতে, বাথরুম পরিষ্কার করতে। এটাই প্রতি রবিবারের পরিচিত দৃশ্য। সাদা স্যান্ডো গেঞ্জি পরিহিত পুরুষটি, সাদা লাল চেক গামছা কাঁধে, রামুকাকা সেজে চললেন 'স্বচ্ছ ভারত' অভিযানে। ... যেন বাথরুম পরিষ্কারের দায় একা পুরুষের। যেন জন্মের সময় কোনো দাসখতে সই করে এসেছিলেন!
ডাকলেই হাজির হবেন, তেমনটা নাও হতে পারে
এই কু-অভ্যেস ত্যাগ করার সময় এসে গেছে। কথায় কথায় প্রেমিক/স্বামীকে তলব করা ছাড়ুন। অনেক রকম প্রেশার থাকে তাঁর মাথায়। শপিং বা নেলপলিশের রং বেছে দেওয়ার চেয়েও সেই সব কাজ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তা বলে সুন্দর দিনে, মনোরম পরিবেশে দারুণ একটা ডেট চলতেই পারে।
তল্পিবাহক তকমা নয়
শপিং করতে বেরিয়েছেন, ভালো কথা। তা বলে, সঙ্গীকে তিতিবিরক্ত করার কী আছে! শপিংয়ের সময় তাঁকে বেকার বেকার বোর করবেন না। সব কাজ ছেড়ে তিনি আপনাকে সঙ্গ দিচ্ছেন বলে, তাঁর কাঁধে শপিংয়ের ব্যাগগুলি ধরিয়ে দেবেন না। কারণ একটাই, তিনি আপনার তল্পিবাহক নন। তা ছাড়া, ১০টা জামার মধ্যে ২টো বেছে দেওয়ার 'অতি গুরুত্বপূর্ণ' কাজ তাঁর ভালো নাই লাগতে পারে। আরও একটা বিষয়, নিজে শপিং করবেন করুন, তা বলে সঙ্গীকে রেস্তোরাঁয় অপেক্ষা করাবেন না। এমনটা হলে একা শপিংয়ে যান, না হলে কোনো বন্ধবীকে সঙ্গে নিয়ে নিন।
প্রেমিক আপনার ড্রাইভার নন
সেই ছেলেবেলায় প্রেমিক শখ করে ড্রাইভিং শিখেছিলেন মানে এটা নয়, সব জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার বায়না ধরবেন আপনি। যদিও প্রথম প্রথম তিনি স্বেচ্ছায় কাজটা করবেন। কিন্তু একটা সময়ের পর তাঁর বিরক্ত লাগবেই। তিনি মনে করবেন, তিনি আপনার ড্রাইভার বই অন্য কিছু নন। এমনটা হলে কিন্তু নিত্যদিন অশান্ত হবেই।
আর অপেক্ষা নয়
দেখা করার কথা বিকেল ৫টায়। আপনি গেলেন সন্ধে ৬.৩০টায়। এদিকে আপনার ভালোমানুষ প্রেমিকটি আপনার জন্য ঠায় দাঁড়িয়ে। হতেই পারে আপনার কাজ ছিল, তাই দেরি হয়েছে। কিন্তু তিনি? বেকার বেকার দেড় ঘণ্টা কেন দাঁড়িয়ে থাকবেন রাস্তায়? আপনার সময়ের দাম আছে, তাঁর সময়ের দাম নেই? ফলে এই কু-অভ্যেস ছাড়ুন। পুরুষের মনে এই ধারণা হতে দেবে না, যে মহিলারা সব ব্যাপারে লেট।
Share this