১.হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রাযিঃ) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়াছেন, ইসলামের ইমারত পাঁচ জিনিসের উপর কায়েম করা হইয়াছে, (এক) লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ এর স্বাক্ষ্য প্রদান। (অর্থাৎ এই সত্য কথার স্বাক্ষ্য প্রদান করা যে, আল্লাহ ব্যতীত আর কেহ এবাদতের উপযুক্ত নাই এবং হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তায়ালার বান্দা ও রাসূল।(দুই) নামায কায়েম করা। (তিন) যাকাত আদায় করা। (চার) হজ্জ্ব করা। (পাঁচ) রমযান মাসের রোযা রাখ।(বোখারী)
২. হযরত জুবাইর ইবনে নুফাইর (রাযিঃ) বর্ণনা করেন যে, হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়াছেন, আমাকে এই হুকুম দেওয়া হয় নাই যে, আমি মাল জমা করি এবং ব্যবসায়ী হই,বরং আমাকে এই হুকুম দেওয়া হইয়াছে যে, আপনি আপনার রব্বের তসবীহ ও প্রশংসা করিতে থাকুন, নামায পাঠকারীদের অন্তর্ভূক্ত থাকুন এবং মৃত্যু আসা পর্যন্ত আপনার রব্বের এবাদত করিতে থাকুন।(শরহে সুন্নাহ, মেশকাত)
৩. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রাযিঃ) বর্ণনা করেন যে, জিবরাঈল (আঃ) (একজন অপরিচিত ব্যক্তির বেশে উপস্থিত হইয়া) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট ইসলাম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করিলেন। তিনি (উত্তরে) বলিলেন, ইসলাম এই যে, তুমি (অন্তর ও মুখ দ্বারা) এই স্বাক্ষ্য প্রদান কর যে, আল্লাহ ব্যতীত আর কোন মাবুদ নাই এবং হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তায়ালার রাসূল, নামায পড়, যাকাত আদায় কর, হজ্জ ও ওমরা কর, রমযানের রোযা রাখ। হযরত জিবরাঈল (আঃ) জিজ্ঞাসা করিলেন, আমি এই সকল আমল করিলে কি মুসলাম হইয়া যাইব? এরশাদ করিলেন, হ্যাঁ। হযরত জিবরাঈল (আঃ) বলিলেন, আপনি সত্য বলিয়াছেন। (ইবনে খুযাইমাহ)
৪. হযরত কুররাহ ইবনে দা’মুস (রাযিঃ) বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সহিত বিদায় হজ্জে আমাদের স্বাক্ষ্যাৎ হয়। আমরা আরজ করিলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ, আপনি আমাদিগকে কি কি বিষয়ে অসিয়ত করিতেছেন? তিনি এরশাদ করিলেন, আমি তোমাদিগকে অসিয়ত করিতেছি যে, নামায কায়েম করিবে, যাকাত আদায় করিবে, বাইতুল্লার হজ্জ করিবে এবং রমযান মাসের রোযা রাখিবে। এই মাসে এমন একটি রাত্র রহিয়াছে যাহা হাজার মাস হইতে উত্তম। কোন মুসলমান ও জিম্মিকে (অর্থাৎ যাহাদের সহিত মুসলমানদের কোন প্রকার চুক্তি সম্পাদিত হইয়াছে) কতল করা এবং তাহার মাল সম্পদকে নিজের জন্য হারাম অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া হইবে। তোমাদিগকে আরো অসিয়ত করিতেছি যে, তোমরা আল্লাহ তায়ালা ও তাঁহার অনুগত্যকে মজবুত করিয়া ধরিয়া থাকো। (অর্থাৎ গায়রুল্লার রাজি নারাজির পরওয়া না করিয়া হিম্মতের সহিত দ্বীনের কাজে লাগিয়া থাক।) (বায়হাকী)
—————————————————————————————————————-
৫. হযরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রাযিঃ) হইতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন, বেহেশতের চাবি হইল নামায আর নামাযের চাবি হইল অযূ।(মুসনাদে আহমাদ)
—————————————————————————————————————-
৬. হযরত আনাস (রাযিঃ) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়াছেন, আমার চোখের শীতলতা নামাযের মধ্যে রাখা হইয়াছে (নাসায়ী)
————————————————————————————————————–
৭. হযরত ওমর (রাযিঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়াছেন যে, নামায দ্বীনের স্তম্ভ।(জামে সগীর)
————————————————————————————————————–
৮. হযরত আলী (রাযিঃ) হইতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শেষ অসিয়ত এই করিয়াছেন যে, নামায, নামায আপন গোলাম ও অধীনস্থদের ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালাকে ভয় কর। (অর্থাৎ তাহাদের হক আদায় কর।)(আবু দাউদ)
৯. হযরত আবু উমামাহ (রাযিঃ) হইতে বর্ণিত আছে যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাইবার হইতে ফিরিয়া আসিলেন। তাঁহার সঙ্গে দুইটি গোলাম ছিল। হযরত আলী (রাযিঃ) আরয করিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ, খেদমতের জন্য আমাদিগকে কোন খাদেম দান করুন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেন, এই দুইজনের মধ্যে হইতে যাহাকে ইচ্ছা হয় লইয়া যাও। হযরত আলী (রাযিঃ) আরজ করিলেন, আপনিই পছন্দ করিয়া দিন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজনের প্রতি ইশারা করিয়া বলিলেন, ইহাকে লইয়া যাও। তবে তাহাকে মারধর করিও না, কারণ খাইবার হইতে ফিরিবার পথে আমি তাহাকে নামায পড়িতে দেখিয়াছি। আর আমাকে নামাযীদের মারধর করিতে নিষেধ করা হইয়াছে। (মুসনাদে আহমাদ, তাবরানী, মাজমায়ে যাওয়ায়েদ)
১০. হযরত ওবাদাহ ইবনে সামেত (রাযিঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এই এরশাদ করিতে শুনিয়াছি যে, আল্লাহ তায়ালা পাঁচ ওয়াক্ত নামায ফরয করিয়াছেন। যে ব্যক্তি এই নামায গু্লীর জন্য উত্তমরূপে অযূ করে, উহাকে মুস্তাহাব ওয়াক্তে আদায় করে, রুকু (সেজদা) এতমিনানের সহিত করে এবং পরিপূর্ণ খুশু’র সহিত পড়ে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ হইতে তাহার জন্য এই ওয়াদা যে, তাহাকে অবশ্যই মাফ করিয়া দিবেন। আর যে ব্যক্তি এই নামায গুলিকে সময় মত আদায় করে না এবং খুশু’র সহিতও পড়ে না তাহার মাগফিরাতের কোন ওয়াদা নাই। ইচ্ছা হইলে মাফ করিবেন, আর না হয় শাস্তি দিবেন।
ভাল লাগলে কমেন্টে জানাতে ভুলবে না…