বিপদে মুসীবতে সবর বা ধৈর্যধারণ করা

আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন সবাই? আশা করি ভালই আছেন, আমি ও আমরা আপনাদের দোয়ায় এবং আল্লাহ্র অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছি।
মহান আল্লাহ বলেন, “হে ঈমানদারগণ! তোমরা ধৈর্য ধারণ কর এবং ধৈর্য ধারনের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা কর”(সূরা আল ইমরানঃ২০০আয়াত)।
“আমি অবশ্যই তোমাদেরকে ভয় ক্ষুধা এবং তোমাদের জান, মাল ও শস্যের ক্ষতি সাধন করে পরীক্ষা করব।(এ পরীক্ষায়)ধৈর্যশীলদেরকে সুখবর দাও”(সূরা বাকারাঃ১৫৫আয়াত)।
“ধৈর্যশীলদেরকে অগণিত পুরস্কার পূর্ণভাবে দেয়া হবে”(সূরা যুমারঃ১০আয়াত)।
“যে ব্যক্তি ধৈর্য ধারণ করে এবং ক্ষমা করে দেয়, সেটা দৃঢ় মনোভাবেরই অন্তর্ভুক্ত”(সূরা শূরাঃ৪৩)।
“ধৈর্য ও নামাযের মাধ্যমে তোমরা সাহায্য প্রার্থনা কর। আল্লাহ নিশ্চয় ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন”(সূরা বাকারাঃ১৫৩আয়াত)।
“আমি তোমাদেরকে পরীক্ষা করব, যাতে তোমাদের মধ্যকার মুজাহিদ ও ধৈর্যশীলদেরকে চিনে নিতে পারি”(সূরা মুহাম্মাদঃ৩১আয়াত)।
২৫।আবু মালেক আশআরী (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন পবিত্রতা ঈমানে অর্ধেক। আলহামদু লিল্লাহ যমীনকে পূর্ণ করে দেয় এবং সুবহানাল্লাহ ও আলহামদু লিল্লাহ আকাশ ও পৃথিবীর মাঝখানের সব কিছুকে ভরে দেয়। নামায হচ্ছে আলোকবর্তিকা এরং সদকা(ঈমানের)হচ্ছে দলিল স্বরুপ, সবর বা ধৈর্য হচ্ছে জ্যোতি এবং কুরআন তোমার পক্ষে অথবা বিপক্ষে একটি দলীল। আর প্রত্যেক ব্যক্তি সকালে উঠে নিজেকে বিক্রয় করে এবং তাতে সে নিজেকে মুক্ত করে অথবা ধ্বংস করে।(মুসলিম)
২৬।আবু সাঈদ খুদরী(রা) থেকে বর্ণিত। আনসারদের কতিপয় লোক রাসূল(সাঃ)-র নিকট সাহায্য চাইল। তিনি তাদের দান করলেন। আবার তারা চাইল। তিনি আবার তাদের দান করলেন, এমনকি তাঁর নিকট যা কিছু ছিল সবই শেষ হয়ে গেল। তাঁর হাতের সব কিছু দান করার পর তিনি তাদের বললেনঃ যা মাল আসে তা আমি তোমাদেরকে না দিয়ে জমা করে রাখি না। যে ব্যক্তি পবিত্র থাকতে চায়, আল্লাহ তাকে পবিত্র রাখেন । যে ব্যক্তি কারও মুখাপেক্ষী হতে চায় না, আল্লাহ তাকে স্বাবলম্বী করে দেন। যে ব্যক্তি ধৈর্য ধারণ করতে চায়, আল্লাহ তাকে ধৈর্য ধারণ করার তাওফিক দারন করেন।ধের্যর চেয়ে উত্তম ও প্রশস্ত আর কোন কিছু কাউকে দেয়া হয়নি।(বুখারী ও মুসলিম)
২৭। সুহাইব ইবনে সিনান (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেনঃ মুমিনের সকল বিষয় আশ্চর্যজনক। তার সমস্ত কাজই কল্যাণকর। মুমিন ছাড়া অন্যের ব্যাপার এরুপ নয়। তার জন্য আনন্দের কোন কিছু হলে সে আল্লাহর শোকর করে। তাতে তার মঙ্গল হয়। আর ক্ষতিকর কিছু হলে সে ধৈর্য ধারণ করে ।এও তার জন্য কল্যাণকর হয়।(মুসলিম)
৩২।আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূল(সা.) বলেছেনঃ আল্লাহ বলেন, আমার মুমিন বান্দার জন্য আমার নিকট জান্নাত ছাড়া আর কোন পুরস্কার নেই, যখন আমি দুনিয়া থেকে প্রিয়জনকে নিয়ে যাই আর সে সওয়াবের আশায় সবর করে।(বুখারী)
৪৫।আবু হুরায়রা(রা) থেকে বর্ণিত। রাসূল(সা.) বললেনঃ ওয ব্যক্তি (মল্লযুদ্ধে) অন্যকে ধরাশয়ী করে সে শক্তিশালী নয়, বরং শক্তিশালী হচ্ছে সেই ব্যক্তি যে ক্রোধের সময় নিজেকে সংযত রাখে।(বুখারী ও মুসলিম)
৪৭।মুআয ইবনে আনাস(রা) থেকে বর্ণিত।রাসূল(সা.) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি নিজের ক্রোধ কার্যকর করার ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও তা দমিয়ে রাখে, তাকে আল্লাহ কিয়ামতের দিন সব মানুষের উপর মর্যাদা দিয়ে ডাকবেন, এমনকি তাকে তার ইচ্ছামত বড় বড় চোখবিশিষ্ট হূরদের মধ্য থেকে বেছে নেয়ার স্বধীনতা দিবেন।
ইমাম আবু দাঊদ ও ইমাম তিরমিযী এ হাদীস রিওয়ায়াত করেছেন এবং তিরমিযী একে হাসান হাদীস হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
৪৮।আবু হুরায়রা(রা) থেকে বর্ণিত। এক ব্যক্তি রাসূল(সা.)-কে বলল, আমাকে উপদেশ দিন। তিনি বললেন, রাগ করো না। সে ব্যক্তি বারবার উক্ত কথা বলতে থাকল, আর (সা.)ও বললেনঃ রাগ করো না।(বুখারী)
৪৯।আবু হুরায়রা(রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বালেন, রাসূল(সা.) বলেছেনঃ মুমিন নর-নারীর জান, মাল ও সন্তানের উপর বিপদ-আপদ আসতেই থাকে। অবশেষ আল্লাহর সাথে সে সাক্ষাত করে এমন আবস্থায়, যে তার আর কোন গুনাহ থাকে না।
ইমাম তিরমিযী এ হাদীস বর্ণনা করেছেন এবং একে হাসান ও সহীহ হাদীস রুপে আখ্যায়িত করেছেন।

Share this

Related Posts

Previous
Next Post »