তওবা করা।

আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন সবাই? আশা করি ভালই আছেন, আমি ও আমরা আপনাদের দোয়ায় এবং আল্লাহ্র অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছি।
উলামায়ে কেরাম বলেন, প্রতিটি গুনাহ থেকে তওবা করা ওয়াজিব। যদি গুনাহ আল্লাহ ও বান্দার মধ্যকার বিষয় সংশ্লিষ্ট হয় এবং তার সাথে কোন বান্দার হক জড়িত না থাকে তবে তা থেকে তওবা করার তিনটি শর্ত রয়েছে। (১)তওবাকারীকে গুণাহ থেকে বিরত থাকতে হব।(২)কৃত গুণাহের জন্য অনুতপ্ত হতে হবে। (৩)গুণাহ না করার ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হতে হবে। যদি কোন লোকের সাথে গুনাহর কাজটি সংশ্লিষ্ট থাকে তাহলে তা থেকে তওবা করার জন্য উপরোক্ত তিনটি শর্ত ছাড়া আরও একটি শর্ত আছে। এই চতুর্থ শর্তটি হচ্ছেঃ তওবাকারীকে হকদার ব্যক্তির প্রাপ্য আদায় করে দিতে হবে। যদি কারও ধন-সম্পত্তি অন্যায়ভাবে ভোগ করে থাকে অথবা এরূপ অন্য কিছু থাকে তবে তা তাকে ফেরত দিতে হবে। ব্যভিচারর মিথ্যা অপবাদ কিংবা এরুপ অন্য কোন বিষয় হয়ে থাকলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি থেকে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে। যদি কারো গীবত করে থাকে তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে। সমস্ত গুনাহ থেকে তওবা করা ওয়াজিব। যদি কিছু গুনাহ থেকে তওবা করে তাও গ্রহণযোগ্য হবে তবে অন্যান্য গুনাহ থেকে তওবা বাকী রয়ে যাবে। আর গুনাহ থেকে তাওবা করা ওয়াজিব হওয়া কুরআন, সুন্নাহ ও উম্মাতের ইজমার ভিত্তিতে প্রমাণিত হয়েছে।
***আল্লাহ তাআলা বলেছেন, “হে মুমিনগণ! তোমরা সকলে আল্লাহ্র নিকট তওবা কর, তাহলে তোমরা কল্যাণপ্রাপ্ত হবে”(সূরা নূরঃ ৩১)।
***“তোমরা নিজ প্রভুর নিকট গুনাহ মাফ চাও, তারপর তাঁর নিকট তওবা কর”(সূরা হূদঃ৩১)।
***“হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহর নিকট খাঁটি (তওবা নাসুহা)কর” (সূরা তাহরীমঃ৮)।
১৩।আবু হুরায়রা(রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, আল্লাহর শপথ! আমি একদিনে সত্তরবারের অধিক তওবা করি এবং আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করি।(বুখারী)
১৪।আল-আগার ইবরেন ইয়াসার আল-মুযানী(রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, হে লোসকল! তোমরা আল্লাহর কাছে তওবা কর এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর।কেননা আমি দৈনিক শতবার তওবা করি।(মুসলিতম)
প্রার্থনা
১৫। রাসূল (সা.)-এর খাদেম অঅবু হামযা আনাস ইবনে মালেক (রা.০ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, আল্লাহ তাঁর বান্দার ওিবার ফলে তোমাদের ঐ ব্যক্তি চেয়েও বেশি আনন্দিত হন যার উট মরুভূমিতে হারিয়ে যাওয়ার পর সে তা ফিরে পেল। (বুখারী ও মুসলিম)
ইমাম মুসলিমের অপর বর্ণনায় আছে, আল্লাহ তাঁর বান্দার তওবায় তোমাদের ঐ ব্যক্রি চেয়েও বেশি আনন্দিত হন যার খদ্য ও পানীয়সহ তার উট মরুভূমিতে হারিয়ে গেল। সে নিরাশ হয়ে এক গাছের ছায়ায শুয়ে পড়ল এমতাবস্থায় হঠাৎ তার নিকট সেই উটটিকে দাঁড়ানো দেখতে পেয়ে সে তার লাগরম ধরে ফেরর এবং আনন্দের আতিশয্যে বলে উঠর, হে আল্রাহ! তুমি আমার বান্দা আমি তোমার প্রভু! সে আনন্দের আতিশয্যেই ভু করে ফেলেছে।
এখানে উট দ্বারা মহামূল্যবান সম্পদ উদ্দেশ্য কারণ তখনকার যুগে উট-ই ছিল সবচেয়ে মূল্যবান বস্তু। সুতরাং হাদীসের অর্থ হচ্ছে- বান্দাহ তার মহামূল্যবান হারাণো সম্পদ ফিরে পেলে যেমনি আনন্দিত হয়। বান্দা গুনাহ থেকে তওবা করলে তার চেয়েও বেশি আনন্দিত হন।
ভাল লাগলে কমেন্টে জানাতে ভুলবে না।

Share this

Related Posts

Previous
Next Post »