ইসলামের অন্যতম রুকন ছালাত শুদ্ধ
হওয়ার জন্য ওযূ যরূরী। ওযূ ঠিকভাবে করা
না হ’লে ছালাত হয় না। তাছাড়া ওযূ
একটি ইবাদত, যার মাধ্যমে ওযূকারীর
শরীর থেকে ছগীরা গোনাহগুলি ঝরে
যায়। ছালাত সিদ্ধ হওয়া এবং ওযূর উক্ত
ফযীলত লাভের জন্য ওযূ রাসূল (ছাঃ)
প্রদর্শিত তরীকায় হওয়া আবশ্যক। এতে
কোন ধরনের সংযোজন-সংকোচন বা
হ্রাস-বৃদ্ধি ওযূকে বিনষ্ট করবে। তাই ওযূ
রাসূল (ছাঃ)-এর পদ্ধতিতেই হ’তে হবে।
কিন্তু কোন কোন মাযহাবী ভাই বিভিন্ন
জাল-যঈফ বর্ণনার উদ্ধৃতি দিয়ে ওযূতে
অনেক অতিরিক্ত কাজ করে থাকেন।
তন্মধ্যে ঘাড় মাসাহ অন্যতম। এটা ছহীহ
হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত নয়। তাই কেউ
ঘাড় মাসাহ করলে তা সুন্নাত পরিপন্থী
হবে। এ সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা
হ’ল।-
ওযূতে ঘাড় মাসাহ করা সুন্নাত নাকি
বিদ‘আত?
মাযহাবী ভাইদের রচিত ছালাত
সম্পর্কিত বই সমূহে লেখা হয়েছে যে,
ওযূতে ঘাড় মাসাহ করা সুন্নাত। যেমন
মাওলানা আব্দুল মালেক সম্পাদিত
‘নবীজির নামায’ (পৃঃ ১১৪) বইয়ে ঘাড়
মাসাহকে সুন্নাত আখ্যায়িত করা
হয়েছে। এবং এর পক্ষে একটি মুরসাল (যা
যঈফ) দলীলও পেশ করা হয়েছে। আশরাফ
আলী থানবী লিখেছেন, ‘অতঃপর দুই
হাতের আঙ্গুলের পিঠ দ্বারা গর্দান
মাসহে করিবে। গলা মাসহে করিবে না,
ইহা নিষেধ এবং দূষণীয়’।[1]
ইমাম আবূ হানীফা (রহঃ) ‘ঘাড় মাসাহ
করাকে সুন্নাত বলেছেন ও গলা
মাসাহকে দূষণীয় বলেছেন’ মর্মে কোন
স্পষ্ট দলীল ভিত্তিক উক্তি জানা যায়
না। এ বিষয়ে বেহেশতী জেওরেও কোন
উদ্ধৃতি নেই, যেখানে ইমাম আবূ হানীফা
(রহঃ) হ’তে এটি প্রমাণ করা যায়।
‘হাতের তালু দিয়ে ঘাড় মাসাহ করা
যাবে না’ বা আঙ্গুলের পিঠ দ্বারা
মাসাহ করতে হবে’ মর্মে কোন ফৎওয়া
ইমাম আবূ হানীফার পক্ষ হ’তে আছে বলে
জানা যায় না।
নিম্নে ঘাড় মাসাহ করার ব্যাপারে
পেশকৃত কতিপয় দলীলের পর্যালোচনা
তুলে ধরা হ’ল।-
(ক) মারফূ‘ বর্ণনাসমূহ [2]
দলীল-১ :
ﻋَﻦْ ﺍﺑْﻦِ ﻋُﻤَﺮَ، ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻗَﺎﻝَ : ﻣَﻦْ
ﺗَﻮَﺿَّﺄَ ﻭَﻣَﺴَﺢَ ﺑِﻴَﺪَﻳْﻪِ ﻋَﻠَﻰ ﻋُﻨُﻘِﻪِ، ﻭُﻗِﻲَ ﺍﻟْﻐُﻞَّ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟْﻘِﻴَﺎﻣَﺔ -
ইবনে ওমর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, নবী করীম
(ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি ওযূ করবে এবং
তার দু’হাত দ্বারা স্বীয় ঘাড় মাসাহ
করবে তাকে ক্বিয়ামতের দিনে বেড়ী
হ’তে মুক্ত রাখা হবে’।[3]
পর্যালোচনা : এটি প্রত্যাখ্যাত বর্ণনা।
হাফেয ইবনে হাজার আসক্বালানী
(রহঃ) বলেছেন, ﻗُﻠْﺖُ : ﺑَﻴْﻦَ ﺍﺑْﻦِ ﻓَﺎﺭِﺱٍ، ﻭَﻓُﻠَﻴْﺢٍ ﻣَﻔَﺎﺯَﺓٌ،
ﻓَﻴُﻨْﻈَﺮُ ﻓِﻴْﻬَﺎ ‘আমি বলেছি, ইবনে ফারেস এবং
ফুলায়হ-এর মাঝে সমস্যার স্থলটি
রয়েছে। অতএব এতে লক্ষ্য করতে হবে।[4]
অর্থাৎ উভয়ের মাঝে কোন্ রাবী
লুক্কায়িত আছে তা লক্ষ্য করতে হবে।
আল্লামা শাওকানী (রহঃ)-এর মতে, যদি
উভয়ের মাঝে হুসায়েন বিন উলওয়ান
থাকেন, তবে তিনি সমালোচিত রাবী।[5]
যেমন-
(১) আবূ হাতিম বলেন, ﻛَﺎﻥَ ﻳَﻀَﻊُ ﺍﻟْﺤَﺪِﻳﺚَ ﻟَﺎ ﻳَﺤِﻞُّ
ﻛَﺘْﺐُ ﺣَﺪِﻳْﺜِﻪِ، ﻛَﺬَّﺑَﻪُ ﺃَﺣْﻤَﺪُ ﻭَﻳَﺤْﻴَﻰ ‘তিনি (হুসায়েন
বিন উলওয়ান) হাদীছ জাল করতেন। তার
হাদীছ লেখা যাবে না। আহমাদ এবং
ইয়াহ্ইয়া তাকে মিথ্যুক বলেছেন।[6]
(২) সাখাবী (রহঃ) লিখেছেন, ﻓﺎﻟﺤﺴﻴﻦ ﻣﺘﻬﻢ
ﺑﺎﻟﻜﺬﺏ، ‘আর হুসায়েন মিথ্যার অভিযোগে
অভিযুক্ত’।[7]
(৩) ইয়াহ্ইয়া বিন মাঈন তাকে মিথ্যুক[8],
হায়ছামী যঈফ[9], ইবনে হাজার (রহঃ)
মাতরূক বা পরিত্যাজ্য[10], আবূ হাতেম
অত্যন্ত দুর্বল ও মাতরূকুল হাদীছ অভিহিত
করেছেন।[11]
(৪) শাওকানী (রহঃ) ও ইবনে আদী হুসাইন
বিন উলওয়ানকে হাদীছ জালকারী বলে
উল্লেখ করেছেন।[12]
(৫) ইবনুল জাওযী উল্লেখ করেন, হুসাইন
বিন উলওয়ানকে ইয়াহইয়া বিন মাঈন
মিথ্যুক ও আলী ইবনু মাদীনী তাকে
অত্যন্ত দুর্বল বলেছেন। ইমাম নাসাঈ, আবূ
হাতেম ও দারাকুৎনী বলেছেন, তিনি
মাতরূকুল হাদীছ এবং আবুল ফাৎহ আযদী
তাকে মহা মিথ্যুক, খবীছ আখ্যায়িত
করেছেন।[13]
সুতরাং যদি হুসায়েন এই সনদে থেকে
থাকেন, তবে এটি বানোয়াট। নতুবা রাবী
মাজহূল থাকার কারণে এটি যঈফ।
দলীল-২ :
ﺛَﻨَﺎ ﻣُﺤَﻤَّﺪُ ﺑْﻦُ ﺃَﺣْﻤَﺪَ ﺛَﻨَﺎ ﻋَﺒْﺪُ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﻦِ ﺑْﻦُ ﺩَﺍﻭُﺩ ﺛَﻨَﺎ ﻋُﺜْﻤَﺎﻥُ ﺑْﻦُ
ﺧِﺮْﺯَﺍﺩَ ﺛَﻨَﺎ ﻋُﻤَﺮُ ﺑْﻦُ ﻣُﺤَﻤَّﺪِ ﺑْﻦِ ﺍﻟْﺤَﺴَﻦِ ﺛَﻨَﺎ ﻣُﺤَﻤَّﺪُ ﺑْﻦُ ﻋَﻤْﺮٍﻭ
ﺍﻟْﺄَﻧْﺼَﺎﺭِﻱُّ ﻋَﻦْ ﺃَﻧَﺲِ ﺑْﻦِ ﺳِﻴﺮِﻳﻦَ ﻋَﻦْ ﺍﺑْﻦِ ﻋُﻤَﺮَ ﺃَﻧَّﻪُ ﻛَﺎﻥَ ﺇﺫَﺍ
ﺗَﻮَﺿَّﺄَ ﻣَﺴَﺢَ ﻋُﻨُﻘَﻪُ ﻭَﻳَﻘُﻮﻝُ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ
ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ﻣَﻦْ ﺗَﻮَﺿَّﺄَ ﻭَﻣَﺴَﺢَ ﻋُﻨُﻘَﻪُ ﻟَﻢْ ﻳُﻐَﻞَّ ﺑِﺎﻟْﺄَﻏْﻠَﺎﻝِ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟْﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ -
আনাস ইবনু সীরীন ইবনে ওমর (রাঃ) হ’তে
বর্ণনা করেন, ইবনে ওমর যখন ওযূ করতেন
তখন তাঁর ঘাড় মাসাহ করতেন এবং
বলতেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘ যে
ওযূ করবে এবং তার ঘাড় মাসাহ করবে
ক্বিয়ামতের দিনে তাকে শিকল দ্বারা
বাঁধা হবে না’।[14]
পর্যালোচনা : এটি যঈফ। কারণ এই
সনদের অন্যতম রাবী মুহাম্মাদ বিন আমর
আনছারী সমালোচিত।
(১) ইয়াহ্ইয়া বিন মাঈন (রহঃ)[15], ইমাম
শাওকানী,[16] ইবনে হাজার
আসক্বালানী,[17] আলবানী (রহঃ),[18]
ইয়াহ্ইয়া বিন সাঈদ (রহঃ),[19] ইবনে
শাহীন[20] প্রমুখ মনীষী মুহাম্মাদ বিন
আমর আনছারীকে যঈফ আখ্যায়িত
করেছেন।
(২) ইমাম হাকেম (রহঃ) লিখেছেন, ﻭَﻫُﻮَ
ﻋَﺰِﻳﺰُ ﺍﻟْﺤَﺪِﻳﺚِ ﺟِﺪًّﺍ ‘তিনি অতি মাত্রায় আযীয
হাদীছ বর্ণনা করতেন’।[21]
মোটকথা মুহাম্মাদ বিন আমর একজন যঈফ
রাবী। তার যঈফ হওয়া সম্পর্কে জমহুর
মুহাদ্দিছ ঐক্যমত পোষণ করেছেন।
সুতরাং তার বর্ণিত হাদীছ প্রত্যাখ্যাত।
দলীল-৩ : ﻣﻦ ﺗﻮﺿﺄ ﻭﻣﺴﺢ ﻳﺪﻳﻪ ﻋﻠﻰ ﻋﻨﻘﻪ ﺃﻣﻦ ﻣﻦ
ﺍﻟﻐﻞ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ. ﺃﺑﻮ ﻧﻌﻴﻢ ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻋﻤﺮ - ‘যে ওযূ
করবে এবং তার দু’হাত দ্বারা ঘাড়
মাসাহ করবে, সে ক্বিয়ামতের দিনে
বেড়ী (পরানো) থেকে নিরাপদে
থাকবে’।[22]
পর্যালোচনা : এই বর্ণনাটি অত্যন্ত যঈফ
বা দুর্বল।
(১) আল-উৎলুওয়ানী উক্ত হাদীছের
সনদকে যঈফ বলেছেন।[23]
(২) এর সনদেও পূর্বোল্লিখিত ‘মুহাম্মাদ
বিন আমর আনছারী’ আছেন। এতদ্ভিন্ন এর
সনদে আরো ক্রটিযুক্ত রাবী আছেন।
সুতরাং এই বর্ণনাটি দুর্বল। যা আমল ও
দলীলের উপযুক্ত নয়।
দলীল-৪ : ﻋَﻦْ ﻃَﻠْﺤَﺔَ ﺑْﻦِ ﻣُﺼَﺮِّﻑٍ، ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ، ﻋَﻦْ ﺟَﺪِّﻩِ
ﻗَﺎﻟَﺮَﺃَﻳْﺖُ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻣَﺴَﺢَ ﻣُﻘَﺪَّﻡَ ﺭَﺃْﺳِﻪِ ﺣَﺘَّﻰ
ﺑَﻠَﻎَ ﺍﻟْﻘَﺬَﺍﻝَ . ﻣُﺆَﺧَّﺮُ ﺍﻟﺮَّﺃْﺱِ ﻣِﻦْ ﻣُﻘَﺪَّﻡِ ﻋُﻨُﻘِﻪِ দত্বালহা
বিন মুছার্রিফ তার পিতা হ’তে, তিনি
তার দাদা হ’তে বর্ণনা করেছেন যে,
তিনি বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-
কে দেখেছি, তিনি মাথার অগ্রভাগ
মাসাহ করতেন। এমনকি তিনি ক্বাযাল
পর্যন্ত হাত পৌছাতেন। (ক্বাযাল হ’ল)
ঘাড়ের অগ্রভাগ হ’তে মাথার শেষ ভাগ।
[24]
পর্যালোচনা : এটি যঈফ নিম্নোক্ত
কারণে-
(১) এর সনদের ‘লায়ছ বিন আবী সুলায়েম’
নামক রাবীকে ইমাম মুসলিম (রহঃ),[25]
ইবনুল জাওযী,[26] আবুল হাসান ইবনুল
ক্বাত্ত্বান,[27] ইবনে আব্দুল হাদী (রহঃ),
[28] ইমাম বায়হাক্বী (রহঃ),[29] মুহাম্মাদ
ইবনু তাহের আল-মাকদেসী,[30] ইয়াহ্ইয়া
বিন মাঈন[31] ও আলবানী (রহঃ) তাকে
যঈফ বলেছেন।[32] জমহুর বিদ্বানগণও
তাকে যঈফ বলেছেন’।[33]
(২) ইমাম নাসাঈ (রহঃ) তাকে যঈফ ও
পরিত্যাজ্য রাবীদের গ্রন্থে,[34] হাফেয
আহমাদ শাহীন তাকে যঈফ ও মিথ্যুকদের
গ্রন্থে,[35] ইবনুল জাওযী (রহঃ) তাকে
যঈফ ও পরত্যিক্ত রাবীদের গ্রন্থে
উল্লেখ করেছেন[36] ও ইবনে হাজার
আসক্বালানী তাকে মুদাল্লিসদের
গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন।[37]
(৩) হাফেয হায়ছামী (রহঃ) বলেছেন, ﻭَﻫُﻮَ
ﺛِﻘَﺔٌ، ﻭَﻟَﻜِﻨَّﻪُ ﻣُﺪَﻟِّﺲٌ ‘তিনি নির্ভরযোগ্য, তবে
মুদাল্লিস’।[38]
(৪) ইবনে হিববান বলেছেন, ﺍﺧْﺘَﻠَﻂ ﻓِﻲ ﺁﺧﺮ ﻋﻤﺮﻩ
ﺣَﺘَّﻰ ﻛَﺎﻥَ ﻟَﺎ ﻳﺪْﺭِﻱْ ﻣَﺎ ﻳﺤﺪﺙ ﺑِﻪِ ﻓَﻜَﺎﻥَ ﻳﻘﻠﺐ ﺍﻟْﺄَﺳَﺎﻧِﻴﺪ
‘শেষ বয়সে মস্তিষ্ক খারাপ হয়ে
গিয়েছিল। এমনকি তিনি বুঝতেন না কি
বর্ণনা করেছেন। আর তিনি সনদসমূহ উলট-
পালট করে ফেলতেন।[39] হাফেয ইবনে
হাজার আসক্বালানী (রহঃ)ও অনুরূপ
মন্তব্য করেছেন।[40]
(৫) ইমাম আহমাদ তাকে ‘মুযত্বারিবুল
হাদীছ’ বলেছেন। ইয়াহ্ইয়া ও নাসাঈ
তাকে যঈফ বলেছেন। ইবনে মাঈন
বলেছেন, তাকে নিয়ে কোন অসুবিধা
নেই। ইবনে হিববান বলেছেন, তার শেষ
জীবনে হিফয বিকৃত হয়ে গিয়েছিল
ইত্যাদি।[41]
এ বর্ণনার অপর রাবী ত্বালহার বাবা
মুছার্রিফ একজন মাজহূল রাবী। যেমন-
নাছিরুদ্দীন আলবানী ত্বালহার বাবা
মুছার্রিফকে মাজহূল বলেছেন।[42]
ইবনে হাজার আসক্বালানী লিখেছেন,
ﻣﺼﺮﻑ ﺍﺑﻦ ﻋﻤﺮﻭ ﺍﺑﻦ ﻛﻌﺐ ﺃﻭ ﺍﺑﻦ ﻛﻌﺐ ﺍﺑﻦ ﻋﻤﺮﻭ ﺍﻟﻴﺎﻣﻲ
ﺍﻟﻜﻮﻓﻲ ﺭﻭﻯ ﻋﻨﻪ ﻃﻠﺤﺔ ﺍﺑﻦ ﻣﺼﺮﻑ ﻣﺠﻬﻮﻝ ﻣﻦ ﺍﻟﺮﺍﺑﻌﺔ
‘মুছার্রিফ বিন আমর বিন কা‘ব অথবা
কা‘ব বিন আমর আল-ইয়াম্মী আল-কূফী।
তার থেকে ত্বালহা বিন মুছার্রিফ
বর্ণনা করেছেন। তিনি চতুর্থ স্তরের
মাজহূল রাবী’।[43]
অতএব এই রেওয়ায়াতটি আমল ও দলীলের
উপযুক্ত নয়।
দলীল-৫ : ওয়ায়েল বিন হুজর (রাঃ)
বলেছেন, ﺛُﻢَّ ﻣَﺴَﺢَ ﺭَﻗَﺒَﺘَﻪُ ‘অতঃপর তিনি তাঁর
ঘাড় মাসাহ করলেন’।[44]
পর্যালোচনা : (১) এটি একটি দীর্ঘ
হাদীছের অংশ। এই হাদীছে বুকের উপর
হাত বাঁধা, আমীন জোরে বলা এবং রুকূ‘র
আগে এবং পরে রাফ‘উল ইদায়নেরও
উল্লেখ আছে। সুতরাং এতগুলি সুন্নাত
বাদ দিয়ে কেবল ঘাড় মাসাহ করার
অংশটুকু (যা স্পষ্ট বিদ‘আত) গ্রহণ করার
বিষয়টি বোধগম্য নয়।
(২) ‘মুসনাদুল বায্যারে’ একটি রেওয়ায়াত
আছে। তাতে তিনবার ঘাড় মাসাহ করার
কথা আছে (হা/৪৪৮৮, ﻭَﻣَﺴَﺢَ ﻇَﺎﻫِﺮَ ﺭَﻗَﺒَﺘِﻪِ ﻭَﺑَﺎﻃِﻦَ
ﻟِﺤْﻴَﺘِﻪِ ﺛَﻼﺛًﺎ ،)। অথচ মুক্বাল্লিদগণ তিনবার
ঘাড় মাসাহ করেন না।
(৩) এই সনদটি অত্যন্ত যঈফ। এতে
মুহাম্মাদ বিন হুজর নামক রাবী আছেন,
যিনি যঈফ। তার সম্পর্কে মনীষীগণ
নিম্নোক্ত অভিমত পেশ করেন-
হাফেয হায়ছামী বলেছেন, ﻭَﻓِﻴﻪِ ﺳَﻌِﻴﺪُ ﺑْﻦُ ﻋَﺒْﺪِ
ﺍﻟْﺠَﺒَّﺎﺭِ، ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺴَﺎﺋِﻲُّ : ﻟَﻴْﺲَ ﺑِﺎﻟْﻘَﻮِﻱِّ، ﻭَﺫَﻛَﺮَﻩُ ﺍﺑْﻦُ ﺣِﺒَّﺎﻥَ ﻓِﻲ
ﺍﻟﺜِّﻘَﺎﺕِ، ﻭَﻓِﻲ ﺳَﻨَﺪِ ﺍﻟْﺒَﺰَّﺍﺭِ ﻭَﺍﻟﻄَّﺒَﺮَﺍﻧِﻲِّ ﻣُﺤَﻤَّﺪُ ﺑْﻦُ ﺣَﺠَﺮٍ، ﻭَﻫُﻮَ
ﺿَﻌِﻴﻒٌ ‘এর সনদে সা‘ঈদ বিন আব্দুল
জাববার আছেন। নাসাঈ বলেছেন, তিনি
শক্তিশালী নন। ইবনে হিববান একে ‘আছ-
ছিক্বাত’ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন এবং
বায্যার ও ত্বাবারাণীর সনদে মুহাম্মাদ
বিন হুজর আছেন, যিনি যঈফ’।[45]
মুহাম্মাদ বিন হুজরকে ইমাম উক্বায়লী
যঈফ রাবীদের মধ্যে[46] এবং ইবনুল
জাওযী তাকে যঈফ ও পরিত্যক্ত
রাবীদের মাঝে উল্লেখ করেছেন।[47]
ইমাম মুগলাত্বাঈ (রহঃ),[48] ইমাম আব্দুর
রহমান মোবারকপুরী (রহঃ),[49] হাফেয
শামসুদ্দীন আয-যাহাবী[50] ও আলবানী
(রহঃ)[51] মুহাম্মাদ বিন হুজরকে যঈফ বলে
উল্লেখ করেছেন।
(৪) উক্ত বর্ণনার অপর রাবী ‘সাঈদ বিন
আব্দুল জাববার’ সম্পর্কে ইমামদের
অভিমত সমূহ নিমণরূপ।-
শায়েখ আলবানী[52] ও ইবনে হাজার
আসক্বালানী[53] তাকে যঈফ বলেছেন।
ইমাম নাসাঈ বলেছেন, ﺳﻌﻴﺪ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟْﺠَﺒَّﺎﺭ ﻣﻦ
ﻭﻟﺪ ﻭَﺍﺋِﻞ ﺑﻦ ﺣﺠﺮ ﻟَﻴْﺲَ ﺑِﺎﻟْﻘَﻮِﻱّ ‘সাঈদ বিন আব্দুল
জাববার ওয়ায়েল ইবনে হুজরের পুত্র
শক্তিশালী নন।[54]
(৫) আরেকজন রাবী হ’লেন উম্মে
ইয়াহ্ইয়া। তার আসল নাম উম্মে আব্দুল
জববার। আলবানী (রহঃ) লিখেছেন, ﻭﺃﻡ ﻋﺒﺪ
ﺍﻟﺠﺒﺎﺭ ﻫﻲ ﺃﻡ ﻳﺤﻴﻰ، ﻟﻢ ﺃﻋﺮﻑ ﺣﺎﻟﻬﺎ ﻭﻻ ﺍﺳﻤﻬﺎ ‘উম্মে
আব্দুল জাববার হ’লেন উম্মে ইয়াহ্ইয়া।
আমি তার জীবনী ও নাম জানতে
পারিনি।[55]
অতএব এই বর্ণনার সনদে একাধিক
ক্রটিযুক্ত রাবী থাকায় এটি অত্যন্ত
যঈফ।
দলীল-৬ : আমর বিন কা‘ব বিন বলেছেন,
ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻣُﺤَﻤَّﺪُ ﺑْﻦُ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺍﻟْﺤَﻀْﺮَﻣِﻲُّ، ﺛﻨﺎ ﺃَﺣْﻤَﺪُ ﺑْﻦُ ﻣُﺼَﺮِّﻑِ
ﺑْﻦِ ﻋَﻤْﺮٍﻭ ﺍﻟْﻴَﺎﻣِﻲُّ، ﺣَﺪَّﺛَﻨِﻲ ﺃَﺑِﻲ ﻣُﺼَﺮِّﻑُ ﺑْﻦُ ﻋَﻤْﺮِﻭ ﺑْﻦِ ﺍﻟﺴُّﺮَﻯ
ﺑْﻦِ ﻣُﺼَﺮِّﻑِ ﺑْﻦِ ﻛَﻌْﺐِ ﺑْﻦِ ﻋَﻤْﺮٍﻭ، ﻋَﻦْ ﺃﺑِﻴﻪِ، ﻋَﻦْ ﺟَﺪِّﻩِ، ﻳَﺒْﻠُﻎُ ﺑِﻪِ
ﻛَﻌْﺐَ ﺑْﻦَ ﻋَﻤْﺮٍﻭ، ﻗَﺎﻝَ : ﺭَﺃَﻳْﺖُ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ
ﺗَﻮَﺿَّﺄَ ﻓَﻤَﺴَﺢَ ﺑَﺎﻃِﻦَ ﻟِﺤْﻴَﺘِﻪِ ﻭَﻗَﻔَﺎﻩُ
কা‘ব বিন আমর বলেছেন, আমি নবী করীম
(ছাঃ)-কে দেখেছি তিনি ওযূ করলেন।
এরপর তিনি তার দাঁড়ির অভ্যন্তরভাগ
এবং ঘাড় মাসাহ করলেন।[56]
পর্যালোচনা : এটি অপরিচিত সনদে
বর্ণিত বিধায় প্রত্যাখ্যাত।
(১) যয়নুদ্দীন আবুল ফযল আল-ইরাক্বী
উল্লেখ করেন, ﻗَﺎﻝَ ﻋﺒﺪ ﺍﻟْﺤﻖ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟْﺈِﺳْﻨَﺎﺩ ﻟَﺎ ﺃﻋﺮﻓﻪُ
‘আব্দুল হক্ব বলেছেন, এই সনদটি আমি
চিনি না’।[57]
(২) ইবনু হাজার আসক্বালানী উল্লেখ
করেছেন, ﻗﺎﻝ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﺤﻖ ﻓﻲ ﺍﻷﺣﻜﺎﻡ ﺍﻟﻜﺒﺮﻯ ﻻ ﺃﻋﺮﻓﻪ
ﺑﻬﺬﺍ ﺍﻹﺳﻨﺎﺩ ﻭﻣﺎ ﻛﺘﺒﺘﻪ ﺣﺘﻰ ﺃﺳﺄﻝ ﻋﻨﻪ ﻗﺎﻝ ﺍﺑﻦ ﺍﻟﻘﻄﺎﻥ ﻫﻮ
ﺇﺳﻨﺎﺩ ﻣﺠﻬﻮﻝ ﻣﺴﺦ ‘আব্দুল হক্ব ‘আল-আহকামুল
কুবরা’ গ্রন্থে বলেছেন, আমি এই সনদটি
চিনি না। আর আমি তার সম্পর্কে
জিজ্ঞেস না করা পর্যন্ত কিছু লিখতাম
না। ইবনুল ক্বাত্ত্বান বলেছেন, এই সনদটি
অস্বাভাবিক মাজহূল’।[58] সুতরাং
মাজহূল সনদে বর্ণিত কোন রেওয়ায়াত
গ্রহণ করা যাবে না। কেননা এটি যঈফের
অন্তর্ভুক্ত।
দলীল-৭ :
ﻋَﻦْ ﻃَﻠْﺤَﺔَ ﺑْﻦِ ﻣُﺼَﺮِّﻑٍ، ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ، ﻋَﻦْ ﺟَﺪِّﻩِ، ﻗَﺎﻝَ : ﺭَﺃَﻳْﺖُ
ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﻤْﺴَﺢُ ﺭَﺃْﺳَﻪُ ﻣَﺮَّﺓً ﻭَﺍﺣِﺪَﺓً
ﺣَﺘَّﻰ ﺑَﻠَﻎَ ﺍﻟْﻘَﺬَﺍﻝَ ﻭَﻫُﻮَ ﺃَﻭَّﻝُ ﺍﻟْﻘَﻔَﺎ، ﻭَﻗَﺎﻝَ ﻣُﺴَﺪَّﺩٌ ﻣَﺴَﺢَ ﺭَﺃْﺳَﻪُ
ﻣِﻦْ ﻣُﻘَﺪَّﻣِﻪِ ﺇِﻟَﻰ ﻣُﺆَﺧَّﺮِﻩِ ﺣَﺘَّﻰ ﺃَﺧْﺮَﺝَ ﻳَﺪَﻳْﻪِ ﻣِﻦْ ﺗَﺤْﺖِ ﺃُﺫُﻧَﻴْﻪِ،
ﻗَﺎﻝَ ﻣُﺴَﺪَّﺩٌ : ﻓَﺤَﺪَّﺛْﺖُ ﺑِﻪِ ﻳَﺤْﻴَﻰ ﻓَﺄَﻧْﻜَﺮَﻩُ، ﻗَﺎﻝَ ﺃَﺑُﻮ ﺩَﺍﻭُﺩَ :
ﻭﺳَﻤِﻌْﺖ ﺃَﺣْﻤَﺪَ، ﻳَﻘُﻮﻝُ : ﺇِﻥَّ ﺍﺑْﻦَ ﻋُﻴَﻴْﻨَﺔَ ﺯَﻋَﻤُﻮﺍ ﺃَﻧَّﻪُ ﻛَﺎﻥَ ﻳُﻨْﻜِﺮُﻩُ،
ﻭَﻳَﻘُﻮﻝُ ﺇِﻳﺶْ ﻫَﺬَﺍ ﻃَﻠْﺤَﺔُ، ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ، ﻋَﻦْ ﺟَﺪِّﻩِ -
ত্বালহা বিন মুছার্রিফ তার পিতা হ’তে,
তিনি তার দাদা হ’তে বর্ণনা করেছেন
যে, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে
দেখেছি তিনি তার মাথাকে একবার
মাসাহ করতেন ‘ক্বাযাল’ পর্যন্ত। আর তা
হচ্ছে ‘ক্বাফা’ (ঘাড়ের পিছন দিক)-এর
প্রথম ভাগ। মুসাদ্দাদ বলেছেন, তিনি
তার মাথাকে অগ্রভাগ হ’তে শেষভাগ
পর্যন্ত মাসাহ করতেন। এ পর্যন্ত যে
তিনি তার দু’ হাতকে তার দু’কানের
নিম্নভাগ হ’তে বের করে আনতেন।
মুসাদ্দাদ বলেন, আমি এটা ইয়াহইয়ার
নিকটে বর্ণনা করেছি, তিনি একে
প্রত্যাখ্যান করেছেন। আবূ দাঊদ
বলেছেন, আমি আহমাদ বিন হাম্বলকে
বলেতে শুনেছি, নিশ্চয়ই ইবনে উয়ায়নাহ
এই রেওয়ায়াতটিকে অস্বীকার করতেন
এবং তিনি বলতেন, ‘ত্বালহা তার পিতা
হ’তে, তিনি তার দাদা হ’তে’- এটি আসল
কোথা হ’তে?[59]
পর্যালোচনা : এটি যঈফ। কারণ-
(১) এর সনদে লায়ছ রয়েছেন। তিনি জমহূর
মুহাদ্দিছদের মতানুসারে যঈফ। ইমাম
শাওকানী বলেছেন, ﺍﻟْﺤَﺪِﻳْﺚُ ﻓِﻴْﻪِ ﻟَﻴْﺚُ ﺑْﻦُ ﺃَﺑِﻲ
ﺳَﻠِﻴﻢٍ ﻭَﻫُﻮَ ﺿَﻌِﻴْﻒٌ ، ‘হাদীছটিতে লায়ছ বিন
সুলায়েম আছেন। আর তিনি যঈফ।[60]
(২) নাছিরুদ্দীন আলবানী (রহঃ) উল্লেখ
করেন,
ﻭﻫﺬﺍ ﺳﻨﺪ ﺿﻌﻴﻒ ﻟﺜﻼﺛﺔ ﺃﻣﻮﺭ : ﺍﻷﻭﻝ : ﺿﻌﻒ ﻟﻴﺚ ﻭﻫﻮ ﺍﺑﻦ
ﺃﺑﻲ ﺳﻠﻴﻢ؛ ﻗﺎﻝ ﺍﻟﺤﺎﻓﻆ ﻓﻲ ﺍﻟﺘﻠﺨﻴﺺ ﻭﻫﻮ ﺿﻌﻴﻒ. ﻭﻗﺎﻝ
ﺍﺑﻦ ﺣﺒﺎﻥ : ﻛﺎﻥ ﻳﻘﻠﺐ ﺍﻷﺳﺎﻧﻴﺪ، ﻭﻳﺮﻓﻊ ﺍﻟﻤﺮﺍﺳﻴﻞ، ﻭﻳﺄﺗﻲ ﻋﻦ
ﺍﻟﺜﻘﺎﺕ ﺑﻤﺎ ﻟﻴﺲ ﻣﻦ ﺣﺪﻳﺜﻬﻢ، ﺗﺮﻛﻪ ﻳﺤﻴﻰ ﺑﻦ ﺍﻟﻘﻄﺎﻥ ﻭﺍﺑﻦ
ﻣﻬﺪﻱ ﻭﺍﺑﻦ ﻣﻌﻴﻦ ﻭﺃﺣﻤﺪ ﺑﻦ ﺣﻨﺒﻞ. ﻭﻗﺎﻝ ﺍﻟﻨﻮﻭﻱ ﻓﻲ ﺗﻬﺬﻳﺐ
ﺍﻷﺳﻤﺎﺀ : ﺍﺗﻔﻖ ﺍﻟﻌﻠﻤﺎﺀ ﻋﻠﻰ ﺿﻌﻔﻪ
‘আর এই সনদটি যঈফ তিনটি কারণে।
প্রথমতঃ লায়ছের দুর্বলতা আছে এবং
তিনি হ’লেন ইবনে আবী সুলায়ম। হাফেয
ইবনে হাজার তার ‘আত-তালখীছ’ গ্রন্থে
বলেছেন, তিনি যঈফ। ইবনে হিববান
বলেছেন, তিনি সনদসমূহ উলট-পালট করে
ফেলতেন এবং তিনি মুরসাল
বর্ণনাসমূহকে মারফূ‘ রূপে বর্ণনা করতেন।
তিনি ছিক্বাহদের থেকে এমন কিছু
আনতেন, যেগুলি তাদের হাদীছের মধ্যে
ছিল না। ইয়াহইয়া ইবনুল ক্বাত্তান, ইবনে
মাহদী, ইবনে মাঈন এবং আহমাদ বিন
হাম্বল তাকে বর্জন করেছেন। নববী
‘তাহযীবুল আসমা’ গ্রন্থে বলেছেন, তার
দুর্বল হওয়ার ব্যাপারে আলেমগণ একমত
হয়েছেন।[61]
অতঃপর তিনি আরো লিখেছেন, ﻭﺍﻷﻣﺮ
ﺍﻟﺜﺎﻧﻲ : ﺟﻬﺎﻟﺔ ﻣﺼﺮﻑٍ ﻭﺍﻟﺪ ﻃﻠﺤﺔ ﻓﺈﻧﻪ ﻣﺠﻬﻮﻝ، ﻛﻤﺎ ﻓﻲ
ﻟﻠﺘﻘﺮﻳﺐ. ﻭﺑﻪ ﺃﻋﻠﻪ ﺍﺑﻦ ﺍﻟﻘﻄﺎﻥ. ﻭﺍﻟﺜﺎﻟﺚ : ﺍﻻﺧﺘﻼﻑ ﻓﻲ
ﺻﺤْﺒﺔ ﻭﺍﻟﺪ ﻣﺼﺮﻑ ﻫﺬﺍ ﻛﻤﺎ ﻳﺄﺗﻲ ‘দ্বিতীয় বিষয়
হ’ল, ত্বালহার পিতা মুছার্রিফ-এর
অজ্ঞাত হওয়া। নিশ্চয়ই তিনি মাজহূল
যেমনটি আত-তাক্বরীব গ্রন্থে আছে এবং
এ কারণেই ইবনুল ক্বাত্ত্বান তাকে
ক্রটিযুক্ত বলেছেন (ঐ) ।
(৩) শামসুল হক আযীমাবাদী লিখেছেন,
ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﺍﻟْﻜَﻠَﺎﻡُ ﻓِﻲ ﻣَﺴْﺢِ ﺍﻟﺮَّﻗَﺒَﺔِ ﺍﻟْﻤُﻌْﺘَﺎﺩِ ﺑَﻴْﻦَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ﺃَﻧَّﻬُﻢْ
ﻳَﻤْﺴَﺤُﻮﻥَ ﺍﻟﺮَّﻗَﺒَﺔَ ﺑِﻈُﻬُﻮﺭِ ﺍﻟْﺄَﺻَﺎﺑِﻊِ ﺑَﻌْﺪَ ﻓَﺮَﺍﻏِﻬِﻢْ ﻋَﻦْ ﻣَﺴْﺢِ
ﺍﻟﺮَّﺃْﺱِ ﻭَﻫَﺬِﻩِ ﺍﻟْﻜَﻴْﻔِﻴَّﺔُ ﻟَﻢْ ﺗَﺜْﺒُﺖْ ﻓِﻲ ﻣَﺴْﺢِ ﺍﻟﺮَّﻗَﺒَﺔِ ﻟَﺎ ﻣِﻦَ
ﺍﻟْﺤَﺪِﻳﺚِ ﺍﻟﺼَّﺤِﻴﺢِ ﻭَﻟَﺎ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﺤَﺴَﻦِ ﺑَﻞْ ﻣَﺎ ﺭُﻭِﻱَ ﻓِﻲ ﻣَﺴْﺢِ
ﺍﻟﺮَّﻗَﺒَﺔِ ﻛُﻠُّﻬَﺎ ﺿِﻌَﺎﻑٌ ﻛَﻤَﺎ ﺻَﺮَّﺡَ ﺑِﻪِ ﻏَﻴْﺮُ ﻭَﺍﺣِﺪٍ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻌُﻠَﻤَﺎﺀِ ﻓَﻠَﺎ
ﻳَﺠُﻮﺯُ ﺍﻟِﺎﺣْﺘِﺠَﺎﺝُ ﺑِﻬَﺎ -
‘সমালোচনা রয়েছে ঘাড় মাসাহ
সম্পর্কে। যা লোকদের মাঝে অভ্যাসে
পরিণত হয়েছে যে, তারা তাদের
আঙ্গুলের পিঠ দ্বারা মাথা মাসাহর পরে
ঘাড় মাসাহ করে। আর ঘাড় মাসাহর এই
ধরণটি না কোন ছহীহ হাদীছ দ্বারা
প্রমাণিত আর না কোন হাসান হাদীছ
দ্বারা। বরং ঘাড় মাসাহ সম্পর্কে যা
বর্ণিত হয়েছে তার প্রত্যেকটিই যঈফ।
যেমনটি একাধিক আলেম স্পষ্ট করে
বলেছেন। অতএব এগুলির দ্বারা দলীল
পেশ করা যাবে না’।[62]
দলীল-৮ : ﻋَﻦْ ﻃَﻠْﺤَﺔَ ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ ﻋَﻦْ ﺟَﺪِّﻩِ ﺃَﻧَّﻪُ ﺭَﺃَﻯ ﺭَﺳُﻮﻝَ
ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳَﻤْﺴَﺢُ ﺭَﺃْﺳَﻪُ ﺣَﺘَّﻰ ﺑَﻠَﻎَ ﺍﻟْﻘَﺬَﺍﻝَ ﻭَﻣَﺎ
ﻳَﻠِﻴﻪِ ﻣِﻦْ ﻣُﻘَﺪَّﻡِ ﺍﻟْﻌُﻨُﻖِ ﺑِﻤَﺮَّﺓٍ. ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟْﻘَﺬَﺍﻝُ ﺍﻟﺴَّﺎﻟِﻔَﺔُ ﺍﻟْﻌُﻨُﻖِ -
‘ত্বালহা তার পিতা হ’তে, তিনি তার
দাদা হ’তে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে দেখেছেন, তিনি
তার মাথাকে ক্বাযাল পর্যন্ত মাসাহ
করতেন এবং ঘাড়ের পূর্ব পর্যন্ত মাসাহ
করতেন। তিনি বলেছেন, ক্বাযাল হ’ল
ঘাড়ের আগের অংশ।[63]
পর্যালোচনা : এটি অত্যন্ত দুর্বল।
কেননা-
এর সনদেও উপরোক্ত ‘লায়ছ’ রয়েছেন
যিনি যঈফ বলে অধিকাংশ মুহাদ্দিছ মত
দিয়েছেন। সেই সাথে উপরোল্লিখিত
মাজহূল রাবী ত্বালহার পিতা এবং
দাদাও আছেন। সুতরাং এটিও একই
কারণে অত্যন্ত দুর্বল।
দলীল-৯ : ﺣَﺪِﻳْﺚُ ﺭُﻭِﻱَ ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ
ﻗَﺎﻝَ ﻣَﺴْﺢُ ﺍﻟﺮَّﻗَﺒَﺔِ ﺃَﻣَﺎﻥٌ ﻣِﻦْ ﺍﻟْﻐُﻞِّ - ‘একটি হাদীছ
বর্ণিত হয়েছে, নবী করীম (ছাঃ)
বলেছেন, ‘ঘাড় মাসাহ করা হচ্ছে বেড়ী
হ’তে মুক্তকারী’।[64]
পর্যালোচনা : এ বর্ণনাটি জাল বা
বানোয়াট।
(১) ইবনে হাজার আসক্বালানী বলেছেন,
ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟْﺤَﺪِﻳﺚُ ﺃَﻭْﺭَﺩَﻩُ ﺃَﺑُﻮ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﺍﻟْﺠُﻮَﻳْﻨِﻲُّ ﻭَﻗَﺎﻝَ : ﻟَﻢْ ﻳَﺮْﺗَﺾِ
ﺃَﺋِﻤَّﺔُ ﺍﻟْﺤَﺪِﻳﺚِ ﺇﺳْﻨَﺎﺩَﻩُ ﻓَﺤَﺼَﻞَ ﺍﻟﺘَّﺮَﺩُّﺩُ ﻓِﻲ ﺃَﻥَّ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟْﻔِﻌْﻞَ ﻫُﻮَ
ﺳُﻨَّﺔٌ ﺃَﻭْ ﺃَﺩَﺏ - ‘এই হাদীছটি আবূ মুহাম্মাদ
আল-জুয়ায়নী বর্ণনা করেছেন এবং তিনি
বলেছেন, এর সনদ সম্পর্কে হাদীছের
ইমামগণ সন্তুষ্ট হননি। তাই এই বিষয়ে
সংশয় সৃষ্টি হয়েছে যে, এই কাজটি
সুন্নাত নাকি শিষ্টাচার’।[65]
(২) হাফেয ইবনুল মুলাক্কিন বলেছেন, ﻫﺬﺍ
ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ ﻏﺮﻳﺐ ﺟﺪﺍ ﻻ ﺃﻋﻠﻢ ﻣﻦ ﺧﺮﺟﻪ ﺑﻌﺪ ﺍﻟﺒﺤﺚ ﻋﻨﻪ ،
‘এই হাদীছটি অত্যন্ত গরীব। আমি
কাউকে জানি না যিনি এ সম্পর্কে
আলোচনা করার পর উক্ত রেওয়ায়াতটি
(দলীলরূপে) বর্ণনা করেছেন’।[66]
(৩) ‘তাখরীজু আহাদীছিল ইহ্ইয়া’ গ্রন্থে
লেখা হয়েছে, ﺃﺧﺮﺟﻪ ﺃَﺑُﻮ ﻣَﻨْﺼُﻮﺭ ﺍﻟﺪﻳﻠﻤﻲ ﻓِﻲ ﻣُﺴْﻨﺪ
ﺍﻟﻔﺮﺩﻭﺱ ﻣﻦ ﺣَﺪِﻳﺚ ﻋﻤﺮ ﻭَﻫُﻮَ ﺿَﻌِﻴﻒ ‘এটি আবূ
মানছূর দায়লামী ‘মুসনাদুল ফেরদাউস’
গ্রন্থে ওমর (রাঃ)-এর হাদীছ হ’তে বর্ণনা
করেছেন। আর তিনি যঈফ (হা/৩, পৃঃ ১৯৮) ।
(৪) ইমাম নববী লিখেছেন, ﻭَﺃَﻣَّﺎ ﻗَﻮْﻝُ ﺍﻟْﻐَﺰَﺍﻟِﻲِّ ﺇﻥَّ
ﻣَﺴْﺢَ ﺍﻟﺮَّﻗَﺒَﺔِ ﺳُﻨَّﺔٌ ﻟِﻘَﻮْﻟِﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻣَﺴْﺢُ ﺍﻟﺮَّﻗَﺒَﺔِ
ﺃَﻣَﺎﻥٌ ﻣِﻦْ ﺍﻟْﻐُﻞِّ ﻓَﻐَﻠَﻂٌ ﻟِﺄَﻥَّ ﻫَﺬَﺍ ﻣَﻮْﺿُﻮْﻉٌ ﻟَﻴْﺲَ ﻣِﻦْ ﻛَﻠَﺎﻡِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ
ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ‘আর গাযালীর উক্তি
‘নিশ্চয়ই ঘাড় মাসাহ করা সুন্নাত। কারণ
মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর বাণী ঘাড় মাসাহ
করা বেড়ী হ’তে মুক্তকারী’ -উক্তিটি
ভুল। কেননা এটি বানোয়াট, নবী করীম
(ছাঃ)-এর বাণীর অন্তর্ভুক্ত নয়।[67] তিনি
‘শারহুল মুহায্যাব’ গ্রন্থে একে ﻣَﻮْﺿُﻮﻉ
‘বানোয়াট’ বলেছেন।[68] ইবনুছ ছালাহ
বলেছেন, ﻟَﺎ ﻳُﻌﺮَﻑُ ﻣَﺮْﻓُﻮﻋًﺎ ﻭَﺇِﻧَّﻤَﺎ ﻫُﻮَ ﻗَﻮﻝ ﺑﻌﺾ ﺍﻟﺴّﻠﻒ ،
‘এটি মারফূরূপে চেনা যায় না। মূলতঃ
এটি কোন সালাফের উক্তি’।[69]
(৫) মুহাম্মাদ ইবনু তাহের আল-ফাত্তানী
বলেন, ﻣَﺴْﺢُ ﺍﻟﺮَّﻗَﺒَﺔِ ﺃَﻣَﺎﻥٌ ﻣِﻦْ ﺍﻟْﻐُﻞِّ ﺿﻌﻴﻒ ‘ঘাড়
মাসাহ করা শৃঙ্খল হ’তে মুক্তকারী’-
(এটি) যঈফ।[70]
(৭) মুহাম্মাদ ইবনু খলীল আত-তারাবুলসী
বলেন, ﺣَﺪِﻳﺚ : ﻣﺴﺢ ﺍﻟﺮَّﻗَﺒَﺔ ﺃَﻣَﺎﻥ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻐﻞ. ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﻮَﻭِﻱّ :
ﻣَﻮْﺿُﻮْﻉ، ﺃَﻱ ﺭَﻓﻌﻪ ﻭَﺇِﻟَّﺎ ﻓﻘﺪ ﻭﺭﺩ ﻣَﻮْﻗُﻮﻓﺎ ﻋَﻦ ﻣُﻮﺳَﻰ ﺑﻦ
ﻃَﻠْﺤَﺔ، ﺑﻞ ﻓِﻲ ﻣُﺴْﻨﺪ ﺍﻟﻔﺮﺩﻭﺱ ﻣﻦ ﺣَﺪِﻳﺚ ﺍﺑْﻦ ﻋﻤﺮ ﺑِﺴَﻨَﺪ
ﺿَﻌِﻴﻒ، ﻭَﻟﺬَﺍ ﺍﺳْﺘﺤﺐَّ ﺃَﺋِﻤَّﺘﻨَﺎ ﻣﺴﺢ ﺍﻟﺮَّﻗَﺒَﺔ . ‘ঘাড় মাসাহ
করা বেড়ী হ’তে রক্ষাকারী- হাদীছটি
সম্পর্কে নববী বলেছেন, এটি বানোয়াট।
অর্থাৎ মারফূ‘ হিসেবে (বানোয়াট)। তবে
মূসা বিন ত্বালহা হ’তে মওকূফরূপে বর্ণিত
হয়েছে। বরং মুসনাদুল ফেরদাউসে ইবনে
ওমর হ’তে যঈফ সনদে বর্ণিত হয়েছে। আর
সেজন্য আমাদের ইমামগণ ঘাড় মাসাহ
করা মুসতাহাব বলেছেন।[71]
এটি সঠিক সিদ্ধান্ত নয়। যা প্রমাণিত
হয়নি তা মুসতাহাব ইবাদত হিসাবে গৃহীত
হওয়ার যোগ্য নয়। উপরন্তু ঘাড় মাসাহ
করা সুন্নাতের ভিতরে অনুপ্রবেশকৃত
আমল যা শরী‘আত বিরোধী।
দলীল-১০ : ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ : ﻣﻦ
ﺗﻮﺿﺄ ﻭﻣﺴﺢ ﻋﻨﻘﻪ ﻟﻢ ﻳﻐﻞ ﺑﺎﻷﻏﻼﻝ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে ওযূ
করবে এবং তার ঘাড় মাসাহ করবে,
তাকে ক্বিয়ামতের দিনে শৃঙ্খল পরিধান
করানো হবে না’।[72]
পর্যালোচনা : এটি অত্যন্ত যঈফ। কারণ-
(১) আল-হাসান ইবনু আহমাদ আর-রবাঈ
বলেন, ﻭﻟﻢ ﻳﺼﺢ ﻓﻲ ﻣﺴﺢ ﺍﻟﻌﻨﻖ ﺷﻲﺀ، ﻭﺣﺪﻳﺚ ﻃﻠﺤﺔ
ﺑﻦ ﻣﺼﺮﻑ ﻻ ﻳﺼﺢ ﺍﻻﺳﺘﺪﻻﻝ ﺑﻪ ﻓﻲ ﻧﺪﺏ ﻣﺴﺢ ﺍﻟﻌﻨﻖ؛
‘মাথা মাসাহ করার বিষয়ে কোন কিছুই
ছহীহ নয়। আর ত্বালহা বিন মুছার্রিফের
হাদীছ দ্বারা দলীল গ্রহণ করা শুদ্ধ নয়,
ঘাড় মাসাহ করার মুসতাহাব হওয়া
সম্পর্কে।[73]
(২) ইবনুল মুলাক্কিন (রহঃ) বলেছেন, ﻫﺬﺍ
ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ ﺃﻳﻀﺎ ﻏﺮﻳﺐ ‘এই হাদীছটিও অত্যন্ত
গরীব’।[74]
(৩) নাছিরুদ্দীন আলবানী (রহঃ) একে
বানোয়াট বলেছেন।[75]
দলীল-১১ :
ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺃَﺑُﻮ ﺑَﻜْﺮٍ ﻗَﺎﻝَ : ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺣَﻔْﺺُ ﺑْﻦُ ﻏِﻴَﺎﺙٍ، ﻋَﻦْ ﻟَﻴْﺚٍ، ﻋَﻦْ
ﻃَﻠْﺤَﺔَ، ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ، ﻋَﻦْ ﺟَﺪِّﻩِ، ﻗَﺎﻝَ : ﺭَﺃَﻳْﺖُ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ
ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺗَﻮَﺿَّﺄَ ﻓَﻤَﺴَﺢَ ﺭَﺃْﺳَﻪُ ﻫَﻜَﺬَﺍ، ﻭَﺃَﻣَﺮَّ ﺣَﻔْﺺٌ ﺑِﻴَﺪَﻳْﻪِ ﻋَﻠَﻰ
ﺭَﺃْﺳِﻪِ ﺣَﺘَّﻰ ﻣَﺴَﺢَ ﻗَﻔَﺎﻩُ -
‘ত্বালহা তার পিতা হ’তে, তিনি তার
দাদা হ’তে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন,
আমি নবী করীম (ছাঃ)-কে দেখেছি
তিনি ওযূ করেছেন এবং তার মাথাকে
এভাবে মাসাহ করেছেন। এরপর হাফছ
তার দু’হাতকে তার মাথার উপর অতিক্রম
করালেন। এ পর্যন্ত যে তিরি তার
ক্বাফা-কে মাসাহ করলেন।[76]
পর্যালোচনা : এটি খুবই দুর্বল। কারণ
এখানে লায়ছ রয়েছেন। উপরন্তু ‘ত্বালহা
তার পিতা হ’তে, তিনি তার দাদা হ’তে’
সনদে এটি বর্ণিত। যা একে যঈফ হওয়ার
প্রতি ধাবিত করেছে।
[চলবে]
[1]. মুহিউদ্দীন খানের ‘আরজ’ সম্বলিত
মোকাম্মাল মোদাল্লাল বেহেশতী
জেওর (ঢাকা : হামিদিয়া লাইব্রেরী,
তৃতীয় সংস্করণ, ফেব্রুয়ারী ২০০৪ইং),
১/২৩ ।
[2]. নবী করীম (ছাঃ)-এর প্রতি সম্বন্ধিত
কথা, কর্ম ও মৌন সমর্থনকে মারফূ‘
হাদীছ (মারফূ‘ রেওয়ায়াত বর্ণনা) বলা
হয়।-লেখক]
[3]. আত-তালখীছুল হাবীর হা/৯৮।
[4]. তালখীছ হা/৯৮-এর আলোচনা দ্রঃ ।
[5]. নায়লুল আওত্বার হা/১৯৮-এর
আলোচনা দ্রঃ ।
[6]. ইবনুল জাওযী, আত-তাহক্বীক্ব ফী
মাসাইলিল খিলাফ হা/৩০৬-এর আলোচনা
দ্রঃ, ১/২৬২, সনদবিহীন ।
[7]. আল-মাক্বাছিদুল হাসানা হা/১৬২-এর
আলোচনা দ্রঃ, পৃঃ ১৫০ ।
[8]. তারীখে ইবনে মাঈন, দূরীর বর্ণনা,
রাবী নং ৪৮৯৩।
[9]. মাজমাউয যাওয়ায়েদ হা/১৬৮৫২,
১০/৯০।
[10]. আদ-দিরায়াহ ফী তাখরীজি
আহাদীছিল হিদায়া হা/৬৮, ১/৮৫ ।
[11]. ইবনু আবী হাতিম, আল-জারহু ওয়াত-
তা‘দীল, রাবী নং ২৭৭ ।
[12]. আল-ফাওয়াইদুল
মাজমূ‘আহ হা/৪৬; আল-কামিল ফী
যু‘আফা‘ইর রিজাল, রাবী নং ৪৮৯ ।
[13]. আয-যু‘আফাউল মাতরূকীন, রাবী নং
৮৯৮ ।
[14]. আত-তালখীছুল হাবীর হা/৯৮, ইবনে
হাজার (রহঃ) এটি আবূ নু‘আইম (রহঃ)-এর
উদ্ধৃতিতে উল্লেখ করেছেন ।
[15]. তারীখে ইয়াহ্ইয়া বিন মাঈন, দূরীর
বর্ণনা, রাবী নং ৩৩২৮।
[16]. নায়লুল আওত্বার হা/১৯৮।
[17]. ইতহাফুল মাহারাহ হা/১৯৮১১।
[18]. যঈফা হা/৬৯, হা/৫১৫১ ।
[19]. আল-ইলাল ওয়া মা‘রিফাতুর রিজাল
লি-আহমাদ, আব্দুল্লাহ বিন আহমাদের
বর্ণনা, রাবী নং ৩২৪৮; উক্বায়লী, আয-
যু‘আফা, রাবী নং ১৬৬৮; সুওয়ালাতু আবী
উবায়েদ আল-আজুর্রী, রাবী নং ৫৬১।
[20]. তারীখু আসমাইয যু‘আফা ওয়াল
কায্যাবীন, রাবী নং ৫৫৫।
[21]. আল-মুসতাদরাক আলাছ ছহীহায়ন
হা/৬৬৫ ।
[22]. কানযুল উম্মাল হা/২৬১৪২ ।
[23]. কাশফুল খফা হা/২৩০০ ।
[24]. শরহু মা‘আনিল আছার হা/১২৯ ।
[25]. ছহীহ মুসলিম, ভূমিকা ১/৫।
[26]. আত-তাহক্বীক্ব ফী মাসাইলিল
খিলাফ হা/১৩১৫।
[27]. বায়ানুল ওয়াহমি ওয়াল ঈহাম ফী
কুতুবিল আহকাম ৫/২৯৫ ।
[28]. তানক্বীহুত তাহক্বীক ৩/২৩৪ ।
[29]. আল-জাওহারুন নাক্বী ১/২৯৮।
[30]. মা‘রিফাতুত তাযকিরাহ, পৃঃ ১২২,
জীবনী নং ২৬৮।
[31]. তারীখে ইবনে মাঈন, দারেমীর
বর্ণনা, ক্রমিক নং ৭২০।
[32]. সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৫৪ ।
[33]. ইতহাফুল মাহারাহ হা/২৭৬০ ।
[34]. আয-যু‘আফাউল মাতরূকীন, পৃঃ ২৩০,
জীবনী ক্রমিক নং ৫১১।
[35]. তারীখু আসমাইয যু‘আফা ওয়াল
কায্যাবীন, জীবনী ক্রমিক নং ৫৩১।
[36]. আয-যু‘আফাউল মাতরূকীন, নং ২৮১৫।
[37]. ত্বাবাক্বাতুল মুদাল্লিসীন নং
১৬/১৬৮ ।
[38]. মাজমাউয যাওয়ায়েদ হা/ ৬৩৬৪ ।
[39]. আল-মাজরূহীন, রাবী নং ৯০৬ ।
[40]. তাক্বরীবুত তাহযীব, রাবী নং ৫৬৮৫ ।
[41]. মীযানুল ইতিদাল নং ৬৯৯৭ ।
[42]. যঈফ আবূ দাঊদ হা/১৫ ।
[43]. তাক্বরীবুত তাহযীব, রাবী নং ৬৬৮৫ ।
[44]. আল-মু‘জামুল কাবীর হা/১১৮ ।
[45]. মাজমা‘উয যাওয়ায়েদ হা/১১৭৮ ।
[46]. আয-যু‘আফা, রাবী নং ১৬১০।
[47]. আয-যু‘আফাউল মাতরূকীন, রাবী নং
২৯৩২।
[48]. শরহে ইবনে মাজাহ, পৃঃ ১৩৮২।
[49]. তুহফাতুল আহওয়াযী হা/২৭ দ্রঃ।
[50]. আল-মুক্বতানা ফী সারদিল
কুনা, ১/১৪৫, রাবী নং ১০৭০।
[51]. আছ-ছামারুল মুসতাত্বাব, পৃঃ ৪৭৮।
[52]. ঐ, পৃঃ ৪৭৮।
[53]. তাক্বরীবুত তাহযীব, রাবী নং ২৩৪৪।
[54]. আয-যু‘আফাউল মাতরূকীন, রাবী নং
২৬৫ ।
[55]. যঈফা হা/৪৪৯ ।
[56]. আল-মু‘জামুল কাবীর হা/৪১২, ১৯/১৮১ ।
[57]. যায়লু মীযানিল ই‘তিদাল, রাবী নং
৬৮৯ ।
[58]. লিসানুল মীযান, রাবী নং ১৬৪ ।
[59]. আবূ দাঊদ হা/১৩২ ।
[60]. নায়লুল আওত্বার হা/১৯৮, ‘ঘাড়
মাসাহ’ অনুচ্ছেদ ।
[61]. তাহক্বীক যঈফ আবূ দাঊদ হা/১৫, মূল
আবুদাউদ হা/১৩২ ।
[62]. আওনুল মা‘বূদ ১/১৫২ ।
[63]. মুসনাদে আহমাদ হা/১৫৯৫১ ।
[64]. আত-তালখীছুল হাবীর হা/৯৭ ।
[65]. ঐ, হা/৯৭-এর আলোচনা দ্রঃ ।
[66]. আল-বাদরুল মুনীর হা/৪৭ ।
[67]. আল-মাজমূ‘ শারহুল মুহায্যাব ১/৪৬৫ ।
[68]. তানযীহুশ শারী‘আহ ২/৮৫, ক্রমিক নং
৩৫ ।
[69]. ঐ, ২/৮৫, ক্রমিক নং ৩৫ ।
[70]. তাযকিরাতুল মাউযূ‘আত, পৃঃ ৩১ ।
[71]. আল-লু‘লুউল মারছূ‘ হা/৫০৪, পৃঃ ১৬৮ ।
[72]. আত-তালখীছুল হাবীর হা/৯৮ ।
[73]. ফাৎহুল গাফ্ফার হা/২৯০ ।
[74]. আল-বাদরুল মুনীর হা/৪৮ ।
[75]. সিলসিলাহ যঈফা হা/৭৪৪ ।
[76]. মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ
হা/১৫০ ।
সুত্রঃ মাসিক আত-তাহরীক।
হওয়ার জন্য ওযূ যরূরী। ওযূ ঠিকভাবে করা
না হ’লে ছালাত হয় না। তাছাড়া ওযূ
একটি ইবাদত, যার মাধ্যমে ওযূকারীর
শরীর থেকে ছগীরা গোনাহগুলি ঝরে
যায়। ছালাত সিদ্ধ হওয়া এবং ওযূর উক্ত
ফযীলত লাভের জন্য ওযূ রাসূল (ছাঃ)
প্রদর্শিত তরীকায় হওয়া আবশ্যক। এতে
কোন ধরনের সংযোজন-সংকোচন বা
হ্রাস-বৃদ্ধি ওযূকে বিনষ্ট করবে। তাই ওযূ
রাসূল (ছাঃ)-এর পদ্ধতিতেই হ’তে হবে।
কিন্তু কোন কোন মাযহাবী ভাই বিভিন্ন
জাল-যঈফ বর্ণনার উদ্ধৃতি দিয়ে ওযূতে
অনেক অতিরিক্ত কাজ করে থাকেন।
তন্মধ্যে ঘাড় মাসাহ অন্যতম। এটা ছহীহ
হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত নয়। তাই কেউ
ঘাড় মাসাহ করলে তা সুন্নাত পরিপন্থী
হবে। এ সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা
হ’ল।-
ওযূতে ঘাড় মাসাহ করা সুন্নাত নাকি
বিদ‘আত?
মাযহাবী ভাইদের রচিত ছালাত
সম্পর্কিত বই সমূহে লেখা হয়েছে যে,
ওযূতে ঘাড় মাসাহ করা সুন্নাত। যেমন
মাওলানা আব্দুল মালেক সম্পাদিত
‘নবীজির নামায’ (পৃঃ ১১৪) বইয়ে ঘাড়
মাসাহকে সুন্নাত আখ্যায়িত করা
হয়েছে। এবং এর পক্ষে একটি মুরসাল (যা
যঈফ) দলীলও পেশ করা হয়েছে। আশরাফ
আলী থানবী লিখেছেন, ‘অতঃপর দুই
হাতের আঙ্গুলের পিঠ দ্বারা গর্দান
মাসহে করিবে। গলা মাসহে করিবে না,
ইহা নিষেধ এবং দূষণীয়’।[1]
ইমাম আবূ হানীফা (রহঃ) ‘ঘাড় মাসাহ
করাকে সুন্নাত বলেছেন ও গলা
মাসাহকে দূষণীয় বলেছেন’ মর্মে কোন
স্পষ্ট দলীল ভিত্তিক উক্তি জানা যায়
না। এ বিষয়ে বেহেশতী জেওরেও কোন
উদ্ধৃতি নেই, যেখানে ইমাম আবূ হানীফা
(রহঃ) হ’তে এটি প্রমাণ করা যায়।
‘হাতের তালু দিয়ে ঘাড় মাসাহ করা
যাবে না’ বা আঙ্গুলের পিঠ দ্বারা
মাসাহ করতে হবে’ মর্মে কোন ফৎওয়া
ইমাম আবূ হানীফার পক্ষ হ’তে আছে বলে
জানা যায় না।
নিম্নে ঘাড় মাসাহ করার ব্যাপারে
পেশকৃত কতিপয় দলীলের পর্যালোচনা
তুলে ধরা হ’ল।-
(ক) মারফূ‘ বর্ণনাসমূহ [2]
দলীল-১ :
ﻋَﻦْ ﺍﺑْﻦِ ﻋُﻤَﺮَ، ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻗَﺎﻝَ : ﻣَﻦْ
ﺗَﻮَﺿَّﺄَ ﻭَﻣَﺴَﺢَ ﺑِﻴَﺪَﻳْﻪِ ﻋَﻠَﻰ ﻋُﻨُﻘِﻪِ، ﻭُﻗِﻲَ ﺍﻟْﻐُﻞَّ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟْﻘِﻴَﺎﻣَﺔ -
ইবনে ওমর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, নবী করীম
(ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি ওযূ করবে এবং
তার দু’হাত দ্বারা স্বীয় ঘাড় মাসাহ
করবে তাকে ক্বিয়ামতের দিনে বেড়ী
হ’তে মুক্ত রাখা হবে’।[3]
পর্যালোচনা : এটি প্রত্যাখ্যাত বর্ণনা।
হাফেয ইবনে হাজার আসক্বালানী
(রহঃ) বলেছেন, ﻗُﻠْﺖُ : ﺑَﻴْﻦَ ﺍﺑْﻦِ ﻓَﺎﺭِﺱٍ، ﻭَﻓُﻠَﻴْﺢٍ ﻣَﻔَﺎﺯَﺓٌ،
ﻓَﻴُﻨْﻈَﺮُ ﻓِﻴْﻬَﺎ ‘আমি বলেছি, ইবনে ফারেস এবং
ফুলায়হ-এর মাঝে সমস্যার স্থলটি
রয়েছে। অতএব এতে লক্ষ্য করতে হবে।[4]
অর্থাৎ উভয়ের মাঝে কোন্ রাবী
লুক্কায়িত আছে তা লক্ষ্য করতে হবে।
আল্লামা শাওকানী (রহঃ)-এর মতে, যদি
উভয়ের মাঝে হুসায়েন বিন উলওয়ান
থাকেন, তবে তিনি সমালোচিত রাবী।[5]
যেমন-
(১) আবূ হাতিম বলেন, ﻛَﺎﻥَ ﻳَﻀَﻊُ ﺍﻟْﺤَﺪِﻳﺚَ ﻟَﺎ ﻳَﺤِﻞُّ
ﻛَﺘْﺐُ ﺣَﺪِﻳْﺜِﻪِ، ﻛَﺬَّﺑَﻪُ ﺃَﺣْﻤَﺪُ ﻭَﻳَﺤْﻴَﻰ ‘তিনি (হুসায়েন
বিন উলওয়ান) হাদীছ জাল করতেন। তার
হাদীছ লেখা যাবে না। আহমাদ এবং
ইয়াহ্ইয়া তাকে মিথ্যুক বলেছেন।[6]
(২) সাখাবী (রহঃ) লিখেছেন, ﻓﺎﻟﺤﺴﻴﻦ ﻣﺘﻬﻢ
ﺑﺎﻟﻜﺬﺏ، ‘আর হুসায়েন মিথ্যার অভিযোগে
অভিযুক্ত’।[7]
(৩) ইয়াহ্ইয়া বিন মাঈন তাকে মিথ্যুক[8],
হায়ছামী যঈফ[9], ইবনে হাজার (রহঃ)
মাতরূক বা পরিত্যাজ্য[10], আবূ হাতেম
অত্যন্ত দুর্বল ও মাতরূকুল হাদীছ অভিহিত
করেছেন।[11]
(৪) শাওকানী (রহঃ) ও ইবনে আদী হুসাইন
বিন উলওয়ানকে হাদীছ জালকারী বলে
উল্লেখ করেছেন।[12]
(৫) ইবনুল জাওযী উল্লেখ করেন, হুসাইন
বিন উলওয়ানকে ইয়াহইয়া বিন মাঈন
মিথ্যুক ও আলী ইবনু মাদীনী তাকে
অত্যন্ত দুর্বল বলেছেন। ইমাম নাসাঈ, আবূ
হাতেম ও দারাকুৎনী বলেছেন, তিনি
মাতরূকুল হাদীছ এবং আবুল ফাৎহ আযদী
তাকে মহা মিথ্যুক, খবীছ আখ্যায়িত
করেছেন।[13]
সুতরাং যদি হুসায়েন এই সনদে থেকে
থাকেন, তবে এটি বানোয়াট। নতুবা রাবী
মাজহূল থাকার কারণে এটি যঈফ।
দলীল-২ :
ﺛَﻨَﺎ ﻣُﺤَﻤَّﺪُ ﺑْﻦُ ﺃَﺣْﻤَﺪَ ﺛَﻨَﺎ ﻋَﺒْﺪُ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﻦِ ﺑْﻦُ ﺩَﺍﻭُﺩ ﺛَﻨَﺎ ﻋُﺜْﻤَﺎﻥُ ﺑْﻦُ
ﺧِﺮْﺯَﺍﺩَ ﺛَﻨَﺎ ﻋُﻤَﺮُ ﺑْﻦُ ﻣُﺤَﻤَّﺪِ ﺑْﻦِ ﺍﻟْﺤَﺴَﻦِ ﺛَﻨَﺎ ﻣُﺤَﻤَّﺪُ ﺑْﻦُ ﻋَﻤْﺮٍﻭ
ﺍﻟْﺄَﻧْﺼَﺎﺭِﻱُّ ﻋَﻦْ ﺃَﻧَﺲِ ﺑْﻦِ ﺳِﻴﺮِﻳﻦَ ﻋَﻦْ ﺍﺑْﻦِ ﻋُﻤَﺮَ ﺃَﻧَّﻪُ ﻛَﺎﻥَ ﺇﺫَﺍ
ﺗَﻮَﺿَّﺄَ ﻣَﺴَﺢَ ﻋُﻨُﻘَﻪُ ﻭَﻳَﻘُﻮﻝُ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ
ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ﻣَﻦْ ﺗَﻮَﺿَّﺄَ ﻭَﻣَﺴَﺢَ ﻋُﻨُﻘَﻪُ ﻟَﻢْ ﻳُﻐَﻞَّ ﺑِﺎﻟْﺄَﻏْﻠَﺎﻝِ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟْﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ -
আনাস ইবনু সীরীন ইবনে ওমর (রাঃ) হ’তে
বর্ণনা করেন, ইবনে ওমর যখন ওযূ করতেন
তখন তাঁর ঘাড় মাসাহ করতেন এবং
বলতেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘ যে
ওযূ করবে এবং তার ঘাড় মাসাহ করবে
ক্বিয়ামতের দিনে তাকে শিকল দ্বারা
বাঁধা হবে না’।[14]
পর্যালোচনা : এটি যঈফ। কারণ এই
সনদের অন্যতম রাবী মুহাম্মাদ বিন আমর
আনছারী সমালোচিত।
(১) ইয়াহ্ইয়া বিন মাঈন (রহঃ)[15], ইমাম
শাওকানী,[16] ইবনে হাজার
আসক্বালানী,[17] আলবানী (রহঃ),[18]
ইয়াহ্ইয়া বিন সাঈদ (রহঃ),[19] ইবনে
শাহীন[20] প্রমুখ মনীষী মুহাম্মাদ বিন
আমর আনছারীকে যঈফ আখ্যায়িত
করেছেন।
(২) ইমাম হাকেম (রহঃ) লিখেছেন, ﻭَﻫُﻮَ
ﻋَﺰِﻳﺰُ ﺍﻟْﺤَﺪِﻳﺚِ ﺟِﺪًّﺍ ‘তিনি অতি মাত্রায় আযীয
হাদীছ বর্ণনা করতেন’।[21]
মোটকথা মুহাম্মাদ বিন আমর একজন যঈফ
রাবী। তার যঈফ হওয়া সম্পর্কে জমহুর
মুহাদ্দিছ ঐক্যমত পোষণ করেছেন।
সুতরাং তার বর্ণিত হাদীছ প্রত্যাখ্যাত।
দলীল-৩ : ﻣﻦ ﺗﻮﺿﺄ ﻭﻣﺴﺢ ﻳﺪﻳﻪ ﻋﻠﻰ ﻋﻨﻘﻪ ﺃﻣﻦ ﻣﻦ
ﺍﻟﻐﻞ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ. ﺃﺑﻮ ﻧﻌﻴﻢ ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻋﻤﺮ - ‘যে ওযূ
করবে এবং তার দু’হাত দ্বারা ঘাড়
মাসাহ করবে, সে ক্বিয়ামতের দিনে
বেড়ী (পরানো) থেকে নিরাপদে
থাকবে’।[22]
পর্যালোচনা : এই বর্ণনাটি অত্যন্ত যঈফ
বা দুর্বল।
(১) আল-উৎলুওয়ানী উক্ত হাদীছের
সনদকে যঈফ বলেছেন।[23]
(২) এর সনদেও পূর্বোল্লিখিত ‘মুহাম্মাদ
বিন আমর আনছারী’ আছেন। এতদ্ভিন্ন এর
সনদে আরো ক্রটিযুক্ত রাবী আছেন।
সুতরাং এই বর্ণনাটি দুর্বল। যা আমল ও
দলীলের উপযুক্ত নয়।
দলীল-৪ : ﻋَﻦْ ﻃَﻠْﺤَﺔَ ﺑْﻦِ ﻣُﺼَﺮِّﻑٍ، ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ، ﻋَﻦْ ﺟَﺪِّﻩِ
ﻗَﺎﻟَﺮَﺃَﻳْﺖُ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻣَﺴَﺢَ ﻣُﻘَﺪَّﻡَ ﺭَﺃْﺳِﻪِ ﺣَﺘَّﻰ
ﺑَﻠَﻎَ ﺍﻟْﻘَﺬَﺍﻝَ . ﻣُﺆَﺧَّﺮُ ﺍﻟﺮَّﺃْﺱِ ﻣِﻦْ ﻣُﻘَﺪَّﻡِ ﻋُﻨُﻘِﻪِ দত্বালহা
বিন মুছার্রিফ তার পিতা হ’তে, তিনি
তার দাদা হ’তে বর্ণনা করেছেন যে,
তিনি বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-
কে দেখেছি, তিনি মাথার অগ্রভাগ
মাসাহ করতেন। এমনকি তিনি ক্বাযাল
পর্যন্ত হাত পৌছাতেন। (ক্বাযাল হ’ল)
ঘাড়ের অগ্রভাগ হ’তে মাথার শেষ ভাগ।
[24]
পর্যালোচনা : এটি যঈফ নিম্নোক্ত
কারণে-
(১) এর সনদের ‘লায়ছ বিন আবী সুলায়েম’
নামক রাবীকে ইমাম মুসলিম (রহঃ),[25]
ইবনুল জাওযী,[26] আবুল হাসান ইবনুল
ক্বাত্ত্বান,[27] ইবনে আব্দুল হাদী (রহঃ),
[28] ইমাম বায়হাক্বী (রহঃ),[29] মুহাম্মাদ
ইবনু তাহের আল-মাকদেসী,[30] ইয়াহ্ইয়া
বিন মাঈন[31] ও আলবানী (রহঃ) তাকে
যঈফ বলেছেন।[32] জমহুর বিদ্বানগণও
তাকে যঈফ বলেছেন’।[33]
(২) ইমাম নাসাঈ (রহঃ) তাকে যঈফ ও
পরিত্যাজ্য রাবীদের গ্রন্থে,[34] হাফেয
আহমাদ শাহীন তাকে যঈফ ও মিথ্যুকদের
গ্রন্থে,[35] ইবনুল জাওযী (রহঃ) তাকে
যঈফ ও পরত্যিক্ত রাবীদের গ্রন্থে
উল্লেখ করেছেন[36] ও ইবনে হাজার
আসক্বালানী তাকে মুদাল্লিসদের
গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন।[37]
(৩) হাফেয হায়ছামী (রহঃ) বলেছেন, ﻭَﻫُﻮَ
ﺛِﻘَﺔٌ، ﻭَﻟَﻜِﻨَّﻪُ ﻣُﺪَﻟِّﺲٌ ‘তিনি নির্ভরযোগ্য, তবে
মুদাল্লিস’।[38]
(৪) ইবনে হিববান বলেছেন, ﺍﺧْﺘَﻠَﻂ ﻓِﻲ ﺁﺧﺮ ﻋﻤﺮﻩ
ﺣَﺘَّﻰ ﻛَﺎﻥَ ﻟَﺎ ﻳﺪْﺭِﻱْ ﻣَﺎ ﻳﺤﺪﺙ ﺑِﻪِ ﻓَﻜَﺎﻥَ ﻳﻘﻠﺐ ﺍﻟْﺄَﺳَﺎﻧِﻴﺪ
‘শেষ বয়সে মস্তিষ্ক খারাপ হয়ে
গিয়েছিল। এমনকি তিনি বুঝতেন না কি
বর্ণনা করেছেন। আর তিনি সনদসমূহ উলট-
পালট করে ফেলতেন।[39] হাফেয ইবনে
হাজার আসক্বালানী (রহঃ)ও অনুরূপ
মন্তব্য করেছেন।[40]
(৫) ইমাম আহমাদ তাকে ‘মুযত্বারিবুল
হাদীছ’ বলেছেন। ইয়াহ্ইয়া ও নাসাঈ
তাকে যঈফ বলেছেন। ইবনে মাঈন
বলেছেন, তাকে নিয়ে কোন অসুবিধা
নেই। ইবনে হিববান বলেছেন, তার শেষ
জীবনে হিফয বিকৃত হয়ে গিয়েছিল
ইত্যাদি।[41]
এ বর্ণনার অপর রাবী ত্বালহার বাবা
মুছার্রিফ একজন মাজহূল রাবী। যেমন-
নাছিরুদ্দীন আলবানী ত্বালহার বাবা
মুছার্রিফকে মাজহূল বলেছেন।[42]
ইবনে হাজার আসক্বালানী লিখেছেন,
ﻣﺼﺮﻑ ﺍﺑﻦ ﻋﻤﺮﻭ ﺍﺑﻦ ﻛﻌﺐ ﺃﻭ ﺍﺑﻦ ﻛﻌﺐ ﺍﺑﻦ ﻋﻤﺮﻭ ﺍﻟﻴﺎﻣﻲ
ﺍﻟﻜﻮﻓﻲ ﺭﻭﻯ ﻋﻨﻪ ﻃﻠﺤﺔ ﺍﺑﻦ ﻣﺼﺮﻑ ﻣﺠﻬﻮﻝ ﻣﻦ ﺍﻟﺮﺍﺑﻌﺔ
‘মুছার্রিফ বিন আমর বিন কা‘ব অথবা
কা‘ব বিন আমর আল-ইয়াম্মী আল-কূফী।
তার থেকে ত্বালহা বিন মুছার্রিফ
বর্ণনা করেছেন। তিনি চতুর্থ স্তরের
মাজহূল রাবী’।[43]
অতএব এই রেওয়ায়াতটি আমল ও দলীলের
উপযুক্ত নয়।
দলীল-৫ : ওয়ায়েল বিন হুজর (রাঃ)
বলেছেন, ﺛُﻢَّ ﻣَﺴَﺢَ ﺭَﻗَﺒَﺘَﻪُ ‘অতঃপর তিনি তাঁর
ঘাড় মাসাহ করলেন’।[44]
পর্যালোচনা : (১) এটি একটি দীর্ঘ
হাদীছের অংশ। এই হাদীছে বুকের উপর
হাত বাঁধা, আমীন জোরে বলা এবং রুকূ‘র
আগে এবং পরে রাফ‘উল ইদায়নেরও
উল্লেখ আছে। সুতরাং এতগুলি সুন্নাত
বাদ দিয়ে কেবল ঘাড় মাসাহ করার
অংশটুকু (যা স্পষ্ট বিদ‘আত) গ্রহণ করার
বিষয়টি বোধগম্য নয়।
(২) ‘মুসনাদুল বায্যারে’ একটি রেওয়ায়াত
আছে। তাতে তিনবার ঘাড় মাসাহ করার
কথা আছে (হা/৪৪৮৮, ﻭَﻣَﺴَﺢَ ﻇَﺎﻫِﺮَ ﺭَﻗَﺒَﺘِﻪِ ﻭَﺑَﺎﻃِﻦَ
ﻟِﺤْﻴَﺘِﻪِ ﺛَﻼﺛًﺎ ،)। অথচ মুক্বাল্লিদগণ তিনবার
ঘাড় মাসাহ করেন না।
(৩) এই সনদটি অত্যন্ত যঈফ। এতে
মুহাম্মাদ বিন হুজর নামক রাবী আছেন,
যিনি যঈফ। তার সম্পর্কে মনীষীগণ
নিম্নোক্ত অভিমত পেশ করেন-
হাফেয হায়ছামী বলেছেন, ﻭَﻓِﻴﻪِ ﺳَﻌِﻴﺪُ ﺑْﻦُ ﻋَﺒْﺪِ
ﺍﻟْﺠَﺒَّﺎﺭِ، ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺴَﺎﺋِﻲُّ : ﻟَﻴْﺲَ ﺑِﺎﻟْﻘَﻮِﻱِّ، ﻭَﺫَﻛَﺮَﻩُ ﺍﺑْﻦُ ﺣِﺒَّﺎﻥَ ﻓِﻲ
ﺍﻟﺜِّﻘَﺎﺕِ، ﻭَﻓِﻲ ﺳَﻨَﺪِ ﺍﻟْﺒَﺰَّﺍﺭِ ﻭَﺍﻟﻄَّﺒَﺮَﺍﻧِﻲِّ ﻣُﺤَﻤَّﺪُ ﺑْﻦُ ﺣَﺠَﺮٍ، ﻭَﻫُﻮَ
ﺿَﻌِﻴﻒٌ ‘এর সনদে সা‘ঈদ বিন আব্দুল
জাববার আছেন। নাসাঈ বলেছেন, তিনি
শক্তিশালী নন। ইবনে হিববান একে ‘আছ-
ছিক্বাত’ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন এবং
বায্যার ও ত্বাবারাণীর সনদে মুহাম্মাদ
বিন হুজর আছেন, যিনি যঈফ’।[45]
মুহাম্মাদ বিন হুজরকে ইমাম উক্বায়লী
যঈফ রাবীদের মধ্যে[46] এবং ইবনুল
জাওযী তাকে যঈফ ও পরিত্যক্ত
রাবীদের মাঝে উল্লেখ করেছেন।[47]
ইমাম মুগলাত্বাঈ (রহঃ),[48] ইমাম আব্দুর
রহমান মোবারকপুরী (রহঃ),[49] হাফেয
শামসুদ্দীন আয-যাহাবী[50] ও আলবানী
(রহঃ)[51] মুহাম্মাদ বিন হুজরকে যঈফ বলে
উল্লেখ করেছেন।
(৪) উক্ত বর্ণনার অপর রাবী ‘সাঈদ বিন
আব্দুল জাববার’ সম্পর্কে ইমামদের
অভিমত সমূহ নিমণরূপ।-
শায়েখ আলবানী[52] ও ইবনে হাজার
আসক্বালানী[53] তাকে যঈফ বলেছেন।
ইমাম নাসাঈ বলেছেন, ﺳﻌﻴﺪ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟْﺠَﺒَّﺎﺭ ﻣﻦ
ﻭﻟﺪ ﻭَﺍﺋِﻞ ﺑﻦ ﺣﺠﺮ ﻟَﻴْﺲَ ﺑِﺎﻟْﻘَﻮِﻱّ ‘সাঈদ বিন আব্দুল
জাববার ওয়ায়েল ইবনে হুজরের পুত্র
শক্তিশালী নন।[54]
(৫) আরেকজন রাবী হ’লেন উম্মে
ইয়াহ্ইয়া। তার আসল নাম উম্মে আব্দুল
জববার। আলবানী (রহঃ) লিখেছেন, ﻭﺃﻡ ﻋﺒﺪ
ﺍﻟﺠﺒﺎﺭ ﻫﻲ ﺃﻡ ﻳﺤﻴﻰ، ﻟﻢ ﺃﻋﺮﻑ ﺣﺎﻟﻬﺎ ﻭﻻ ﺍﺳﻤﻬﺎ ‘উম্মে
আব্দুল জাববার হ’লেন উম্মে ইয়াহ্ইয়া।
আমি তার জীবনী ও নাম জানতে
পারিনি।[55]
অতএব এই বর্ণনার সনদে একাধিক
ক্রটিযুক্ত রাবী থাকায় এটি অত্যন্ত
যঈফ।
দলীল-৬ : আমর বিন কা‘ব বিন বলেছেন,
ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻣُﺤَﻤَّﺪُ ﺑْﻦُ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺍﻟْﺤَﻀْﺮَﻣِﻲُّ، ﺛﻨﺎ ﺃَﺣْﻤَﺪُ ﺑْﻦُ ﻣُﺼَﺮِّﻑِ
ﺑْﻦِ ﻋَﻤْﺮٍﻭ ﺍﻟْﻴَﺎﻣِﻲُّ، ﺣَﺪَّﺛَﻨِﻲ ﺃَﺑِﻲ ﻣُﺼَﺮِّﻑُ ﺑْﻦُ ﻋَﻤْﺮِﻭ ﺑْﻦِ ﺍﻟﺴُّﺮَﻯ
ﺑْﻦِ ﻣُﺼَﺮِّﻑِ ﺑْﻦِ ﻛَﻌْﺐِ ﺑْﻦِ ﻋَﻤْﺮٍﻭ، ﻋَﻦْ ﺃﺑِﻴﻪِ، ﻋَﻦْ ﺟَﺪِّﻩِ، ﻳَﺒْﻠُﻎُ ﺑِﻪِ
ﻛَﻌْﺐَ ﺑْﻦَ ﻋَﻤْﺮٍﻭ، ﻗَﺎﻝَ : ﺭَﺃَﻳْﺖُ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ
ﺗَﻮَﺿَّﺄَ ﻓَﻤَﺴَﺢَ ﺑَﺎﻃِﻦَ ﻟِﺤْﻴَﺘِﻪِ ﻭَﻗَﻔَﺎﻩُ
কা‘ব বিন আমর বলেছেন, আমি নবী করীম
(ছাঃ)-কে দেখেছি তিনি ওযূ করলেন।
এরপর তিনি তার দাঁড়ির অভ্যন্তরভাগ
এবং ঘাড় মাসাহ করলেন।[56]
পর্যালোচনা : এটি অপরিচিত সনদে
বর্ণিত বিধায় প্রত্যাখ্যাত।
(১) যয়নুদ্দীন আবুল ফযল আল-ইরাক্বী
উল্লেখ করেন, ﻗَﺎﻝَ ﻋﺒﺪ ﺍﻟْﺤﻖ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟْﺈِﺳْﻨَﺎﺩ ﻟَﺎ ﺃﻋﺮﻓﻪُ
‘আব্দুল হক্ব বলেছেন, এই সনদটি আমি
চিনি না’।[57]
(২) ইবনু হাজার আসক্বালানী উল্লেখ
করেছেন, ﻗﺎﻝ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﺤﻖ ﻓﻲ ﺍﻷﺣﻜﺎﻡ ﺍﻟﻜﺒﺮﻯ ﻻ ﺃﻋﺮﻓﻪ
ﺑﻬﺬﺍ ﺍﻹﺳﻨﺎﺩ ﻭﻣﺎ ﻛﺘﺒﺘﻪ ﺣﺘﻰ ﺃﺳﺄﻝ ﻋﻨﻪ ﻗﺎﻝ ﺍﺑﻦ ﺍﻟﻘﻄﺎﻥ ﻫﻮ
ﺇﺳﻨﺎﺩ ﻣﺠﻬﻮﻝ ﻣﺴﺦ ‘আব্দুল হক্ব ‘আল-আহকামুল
কুবরা’ গ্রন্থে বলেছেন, আমি এই সনদটি
চিনি না। আর আমি তার সম্পর্কে
জিজ্ঞেস না করা পর্যন্ত কিছু লিখতাম
না। ইবনুল ক্বাত্ত্বান বলেছেন, এই সনদটি
অস্বাভাবিক মাজহূল’।[58] সুতরাং
মাজহূল সনদে বর্ণিত কোন রেওয়ায়াত
গ্রহণ করা যাবে না। কেননা এটি যঈফের
অন্তর্ভুক্ত।
দলীল-৭ :
ﻋَﻦْ ﻃَﻠْﺤَﺔَ ﺑْﻦِ ﻣُﺼَﺮِّﻑٍ، ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ، ﻋَﻦْ ﺟَﺪِّﻩِ، ﻗَﺎﻝَ : ﺭَﺃَﻳْﺖُ
ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﻤْﺴَﺢُ ﺭَﺃْﺳَﻪُ ﻣَﺮَّﺓً ﻭَﺍﺣِﺪَﺓً
ﺣَﺘَّﻰ ﺑَﻠَﻎَ ﺍﻟْﻘَﺬَﺍﻝَ ﻭَﻫُﻮَ ﺃَﻭَّﻝُ ﺍﻟْﻘَﻔَﺎ، ﻭَﻗَﺎﻝَ ﻣُﺴَﺪَّﺩٌ ﻣَﺴَﺢَ ﺭَﺃْﺳَﻪُ
ﻣِﻦْ ﻣُﻘَﺪَّﻣِﻪِ ﺇِﻟَﻰ ﻣُﺆَﺧَّﺮِﻩِ ﺣَﺘَّﻰ ﺃَﺧْﺮَﺝَ ﻳَﺪَﻳْﻪِ ﻣِﻦْ ﺗَﺤْﺖِ ﺃُﺫُﻧَﻴْﻪِ،
ﻗَﺎﻝَ ﻣُﺴَﺪَّﺩٌ : ﻓَﺤَﺪَّﺛْﺖُ ﺑِﻪِ ﻳَﺤْﻴَﻰ ﻓَﺄَﻧْﻜَﺮَﻩُ، ﻗَﺎﻝَ ﺃَﺑُﻮ ﺩَﺍﻭُﺩَ :
ﻭﺳَﻤِﻌْﺖ ﺃَﺣْﻤَﺪَ، ﻳَﻘُﻮﻝُ : ﺇِﻥَّ ﺍﺑْﻦَ ﻋُﻴَﻴْﻨَﺔَ ﺯَﻋَﻤُﻮﺍ ﺃَﻧَّﻪُ ﻛَﺎﻥَ ﻳُﻨْﻜِﺮُﻩُ،
ﻭَﻳَﻘُﻮﻝُ ﺇِﻳﺶْ ﻫَﺬَﺍ ﻃَﻠْﺤَﺔُ، ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ، ﻋَﻦْ ﺟَﺪِّﻩِ -
ত্বালহা বিন মুছার্রিফ তার পিতা হ’তে,
তিনি তার দাদা হ’তে বর্ণনা করেছেন
যে, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে
দেখেছি তিনি তার মাথাকে একবার
মাসাহ করতেন ‘ক্বাযাল’ পর্যন্ত। আর তা
হচ্ছে ‘ক্বাফা’ (ঘাড়ের পিছন দিক)-এর
প্রথম ভাগ। মুসাদ্দাদ বলেছেন, তিনি
তার মাথাকে অগ্রভাগ হ’তে শেষভাগ
পর্যন্ত মাসাহ করতেন। এ পর্যন্ত যে
তিনি তার দু’ হাতকে তার দু’কানের
নিম্নভাগ হ’তে বের করে আনতেন।
মুসাদ্দাদ বলেন, আমি এটা ইয়াহইয়ার
নিকটে বর্ণনা করেছি, তিনি একে
প্রত্যাখ্যান করেছেন। আবূ দাঊদ
বলেছেন, আমি আহমাদ বিন হাম্বলকে
বলেতে শুনেছি, নিশ্চয়ই ইবনে উয়ায়নাহ
এই রেওয়ায়াতটিকে অস্বীকার করতেন
এবং তিনি বলতেন, ‘ত্বালহা তার পিতা
হ’তে, তিনি তার দাদা হ’তে’- এটি আসল
কোথা হ’তে?[59]
পর্যালোচনা : এটি যঈফ। কারণ-
(১) এর সনদে লায়ছ রয়েছেন। তিনি জমহূর
মুহাদ্দিছদের মতানুসারে যঈফ। ইমাম
শাওকানী বলেছেন, ﺍﻟْﺤَﺪِﻳْﺚُ ﻓِﻴْﻪِ ﻟَﻴْﺚُ ﺑْﻦُ ﺃَﺑِﻲ
ﺳَﻠِﻴﻢٍ ﻭَﻫُﻮَ ﺿَﻌِﻴْﻒٌ ، ‘হাদীছটিতে লায়ছ বিন
সুলায়েম আছেন। আর তিনি যঈফ।[60]
(২) নাছিরুদ্দীন আলবানী (রহঃ) উল্লেখ
করেন,
ﻭﻫﺬﺍ ﺳﻨﺪ ﺿﻌﻴﻒ ﻟﺜﻼﺛﺔ ﺃﻣﻮﺭ : ﺍﻷﻭﻝ : ﺿﻌﻒ ﻟﻴﺚ ﻭﻫﻮ ﺍﺑﻦ
ﺃﺑﻲ ﺳﻠﻴﻢ؛ ﻗﺎﻝ ﺍﻟﺤﺎﻓﻆ ﻓﻲ ﺍﻟﺘﻠﺨﻴﺺ ﻭﻫﻮ ﺿﻌﻴﻒ. ﻭﻗﺎﻝ
ﺍﺑﻦ ﺣﺒﺎﻥ : ﻛﺎﻥ ﻳﻘﻠﺐ ﺍﻷﺳﺎﻧﻴﺪ، ﻭﻳﺮﻓﻊ ﺍﻟﻤﺮﺍﺳﻴﻞ، ﻭﻳﺄﺗﻲ ﻋﻦ
ﺍﻟﺜﻘﺎﺕ ﺑﻤﺎ ﻟﻴﺲ ﻣﻦ ﺣﺪﻳﺜﻬﻢ، ﺗﺮﻛﻪ ﻳﺤﻴﻰ ﺑﻦ ﺍﻟﻘﻄﺎﻥ ﻭﺍﺑﻦ
ﻣﻬﺪﻱ ﻭﺍﺑﻦ ﻣﻌﻴﻦ ﻭﺃﺣﻤﺪ ﺑﻦ ﺣﻨﺒﻞ. ﻭﻗﺎﻝ ﺍﻟﻨﻮﻭﻱ ﻓﻲ ﺗﻬﺬﻳﺐ
ﺍﻷﺳﻤﺎﺀ : ﺍﺗﻔﻖ ﺍﻟﻌﻠﻤﺎﺀ ﻋﻠﻰ ﺿﻌﻔﻪ
‘আর এই সনদটি যঈফ তিনটি কারণে।
প্রথমতঃ লায়ছের দুর্বলতা আছে এবং
তিনি হ’লেন ইবনে আবী সুলায়ম। হাফেয
ইবনে হাজার তার ‘আত-তালখীছ’ গ্রন্থে
বলেছেন, তিনি যঈফ। ইবনে হিববান
বলেছেন, তিনি সনদসমূহ উলট-পালট করে
ফেলতেন এবং তিনি মুরসাল
বর্ণনাসমূহকে মারফূ‘ রূপে বর্ণনা করতেন।
তিনি ছিক্বাহদের থেকে এমন কিছু
আনতেন, যেগুলি তাদের হাদীছের মধ্যে
ছিল না। ইয়াহইয়া ইবনুল ক্বাত্তান, ইবনে
মাহদী, ইবনে মাঈন এবং আহমাদ বিন
হাম্বল তাকে বর্জন করেছেন। নববী
‘তাহযীবুল আসমা’ গ্রন্থে বলেছেন, তার
দুর্বল হওয়ার ব্যাপারে আলেমগণ একমত
হয়েছেন।[61]
অতঃপর তিনি আরো লিখেছেন, ﻭﺍﻷﻣﺮ
ﺍﻟﺜﺎﻧﻲ : ﺟﻬﺎﻟﺔ ﻣﺼﺮﻑٍ ﻭﺍﻟﺪ ﻃﻠﺤﺔ ﻓﺈﻧﻪ ﻣﺠﻬﻮﻝ، ﻛﻤﺎ ﻓﻲ
ﻟﻠﺘﻘﺮﻳﺐ. ﻭﺑﻪ ﺃﻋﻠﻪ ﺍﺑﻦ ﺍﻟﻘﻄﺎﻥ. ﻭﺍﻟﺜﺎﻟﺚ : ﺍﻻﺧﺘﻼﻑ ﻓﻲ
ﺻﺤْﺒﺔ ﻭﺍﻟﺪ ﻣﺼﺮﻑ ﻫﺬﺍ ﻛﻤﺎ ﻳﺄﺗﻲ ‘দ্বিতীয় বিষয়
হ’ল, ত্বালহার পিতা মুছার্রিফ-এর
অজ্ঞাত হওয়া। নিশ্চয়ই তিনি মাজহূল
যেমনটি আত-তাক্বরীব গ্রন্থে আছে এবং
এ কারণেই ইবনুল ক্বাত্ত্বান তাকে
ক্রটিযুক্ত বলেছেন (ঐ) ।
(৩) শামসুল হক আযীমাবাদী লিখেছেন,
ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﺍﻟْﻜَﻠَﺎﻡُ ﻓِﻲ ﻣَﺴْﺢِ ﺍﻟﺮَّﻗَﺒَﺔِ ﺍﻟْﻤُﻌْﺘَﺎﺩِ ﺑَﻴْﻦَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ﺃَﻧَّﻬُﻢْ
ﻳَﻤْﺴَﺤُﻮﻥَ ﺍﻟﺮَّﻗَﺒَﺔَ ﺑِﻈُﻬُﻮﺭِ ﺍﻟْﺄَﺻَﺎﺑِﻊِ ﺑَﻌْﺪَ ﻓَﺮَﺍﻏِﻬِﻢْ ﻋَﻦْ ﻣَﺴْﺢِ
ﺍﻟﺮَّﺃْﺱِ ﻭَﻫَﺬِﻩِ ﺍﻟْﻜَﻴْﻔِﻴَّﺔُ ﻟَﻢْ ﺗَﺜْﺒُﺖْ ﻓِﻲ ﻣَﺴْﺢِ ﺍﻟﺮَّﻗَﺒَﺔِ ﻟَﺎ ﻣِﻦَ
ﺍﻟْﺤَﺪِﻳﺚِ ﺍﻟﺼَّﺤِﻴﺢِ ﻭَﻟَﺎ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﺤَﺴَﻦِ ﺑَﻞْ ﻣَﺎ ﺭُﻭِﻱَ ﻓِﻲ ﻣَﺴْﺢِ
ﺍﻟﺮَّﻗَﺒَﺔِ ﻛُﻠُّﻬَﺎ ﺿِﻌَﺎﻑٌ ﻛَﻤَﺎ ﺻَﺮَّﺡَ ﺑِﻪِ ﻏَﻴْﺮُ ﻭَﺍﺣِﺪٍ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻌُﻠَﻤَﺎﺀِ ﻓَﻠَﺎ
ﻳَﺠُﻮﺯُ ﺍﻟِﺎﺣْﺘِﺠَﺎﺝُ ﺑِﻬَﺎ -
‘সমালোচনা রয়েছে ঘাড় মাসাহ
সম্পর্কে। যা লোকদের মাঝে অভ্যাসে
পরিণত হয়েছে যে, তারা তাদের
আঙ্গুলের পিঠ দ্বারা মাথা মাসাহর পরে
ঘাড় মাসাহ করে। আর ঘাড় মাসাহর এই
ধরণটি না কোন ছহীহ হাদীছ দ্বারা
প্রমাণিত আর না কোন হাসান হাদীছ
দ্বারা। বরং ঘাড় মাসাহ সম্পর্কে যা
বর্ণিত হয়েছে তার প্রত্যেকটিই যঈফ।
যেমনটি একাধিক আলেম স্পষ্ট করে
বলেছেন। অতএব এগুলির দ্বারা দলীল
পেশ করা যাবে না’।[62]
দলীল-৮ : ﻋَﻦْ ﻃَﻠْﺤَﺔَ ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ ﻋَﻦْ ﺟَﺪِّﻩِ ﺃَﻧَّﻪُ ﺭَﺃَﻯ ﺭَﺳُﻮﻝَ
ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳَﻤْﺴَﺢُ ﺭَﺃْﺳَﻪُ ﺣَﺘَّﻰ ﺑَﻠَﻎَ ﺍﻟْﻘَﺬَﺍﻝَ ﻭَﻣَﺎ
ﻳَﻠِﻴﻪِ ﻣِﻦْ ﻣُﻘَﺪَّﻡِ ﺍﻟْﻌُﻨُﻖِ ﺑِﻤَﺮَّﺓٍ. ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟْﻘَﺬَﺍﻝُ ﺍﻟﺴَّﺎﻟِﻔَﺔُ ﺍﻟْﻌُﻨُﻖِ -
‘ত্বালহা তার পিতা হ’তে, তিনি তার
দাদা হ’তে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে দেখেছেন, তিনি
তার মাথাকে ক্বাযাল পর্যন্ত মাসাহ
করতেন এবং ঘাড়ের পূর্ব পর্যন্ত মাসাহ
করতেন। তিনি বলেছেন, ক্বাযাল হ’ল
ঘাড়ের আগের অংশ।[63]
পর্যালোচনা : এটি অত্যন্ত দুর্বল।
কেননা-
এর সনদেও উপরোক্ত ‘লায়ছ’ রয়েছেন
যিনি যঈফ বলে অধিকাংশ মুহাদ্দিছ মত
দিয়েছেন। সেই সাথে উপরোল্লিখিত
মাজহূল রাবী ত্বালহার পিতা এবং
দাদাও আছেন। সুতরাং এটিও একই
কারণে অত্যন্ত দুর্বল।
দলীল-৯ : ﺣَﺪِﻳْﺚُ ﺭُﻭِﻱَ ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ
ﻗَﺎﻝَ ﻣَﺴْﺢُ ﺍﻟﺮَّﻗَﺒَﺔِ ﺃَﻣَﺎﻥٌ ﻣِﻦْ ﺍﻟْﻐُﻞِّ - ‘একটি হাদীছ
বর্ণিত হয়েছে, নবী করীম (ছাঃ)
বলেছেন, ‘ঘাড় মাসাহ করা হচ্ছে বেড়ী
হ’তে মুক্তকারী’।[64]
পর্যালোচনা : এ বর্ণনাটি জাল বা
বানোয়াট।
(১) ইবনে হাজার আসক্বালানী বলেছেন,
ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟْﺤَﺪِﻳﺚُ ﺃَﻭْﺭَﺩَﻩُ ﺃَﺑُﻮ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﺍﻟْﺠُﻮَﻳْﻨِﻲُّ ﻭَﻗَﺎﻝَ : ﻟَﻢْ ﻳَﺮْﺗَﺾِ
ﺃَﺋِﻤَّﺔُ ﺍﻟْﺤَﺪِﻳﺚِ ﺇﺳْﻨَﺎﺩَﻩُ ﻓَﺤَﺼَﻞَ ﺍﻟﺘَّﺮَﺩُّﺩُ ﻓِﻲ ﺃَﻥَّ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟْﻔِﻌْﻞَ ﻫُﻮَ
ﺳُﻨَّﺔٌ ﺃَﻭْ ﺃَﺩَﺏ - ‘এই হাদীছটি আবূ মুহাম্মাদ
আল-জুয়ায়নী বর্ণনা করেছেন এবং তিনি
বলেছেন, এর সনদ সম্পর্কে হাদীছের
ইমামগণ সন্তুষ্ট হননি। তাই এই বিষয়ে
সংশয় সৃষ্টি হয়েছে যে, এই কাজটি
সুন্নাত নাকি শিষ্টাচার’।[65]
(২) হাফেয ইবনুল মুলাক্কিন বলেছেন, ﻫﺬﺍ
ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ ﻏﺮﻳﺐ ﺟﺪﺍ ﻻ ﺃﻋﻠﻢ ﻣﻦ ﺧﺮﺟﻪ ﺑﻌﺪ ﺍﻟﺒﺤﺚ ﻋﻨﻪ ،
‘এই হাদীছটি অত্যন্ত গরীব। আমি
কাউকে জানি না যিনি এ সম্পর্কে
আলোচনা করার পর উক্ত রেওয়ায়াতটি
(দলীলরূপে) বর্ণনা করেছেন’।[66]
(৩) ‘তাখরীজু আহাদীছিল ইহ্ইয়া’ গ্রন্থে
লেখা হয়েছে, ﺃﺧﺮﺟﻪ ﺃَﺑُﻮ ﻣَﻨْﺼُﻮﺭ ﺍﻟﺪﻳﻠﻤﻲ ﻓِﻲ ﻣُﺴْﻨﺪ
ﺍﻟﻔﺮﺩﻭﺱ ﻣﻦ ﺣَﺪِﻳﺚ ﻋﻤﺮ ﻭَﻫُﻮَ ﺿَﻌِﻴﻒ ‘এটি আবূ
মানছূর দায়লামী ‘মুসনাদুল ফেরদাউস’
গ্রন্থে ওমর (রাঃ)-এর হাদীছ হ’তে বর্ণনা
করেছেন। আর তিনি যঈফ (হা/৩, পৃঃ ১৯৮) ।
(৪) ইমাম নববী লিখেছেন, ﻭَﺃَﻣَّﺎ ﻗَﻮْﻝُ ﺍﻟْﻐَﺰَﺍﻟِﻲِّ ﺇﻥَّ
ﻣَﺴْﺢَ ﺍﻟﺮَّﻗَﺒَﺔِ ﺳُﻨَّﺔٌ ﻟِﻘَﻮْﻟِﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻣَﺴْﺢُ ﺍﻟﺮَّﻗَﺒَﺔِ
ﺃَﻣَﺎﻥٌ ﻣِﻦْ ﺍﻟْﻐُﻞِّ ﻓَﻐَﻠَﻂٌ ﻟِﺄَﻥَّ ﻫَﺬَﺍ ﻣَﻮْﺿُﻮْﻉٌ ﻟَﻴْﺲَ ﻣِﻦْ ﻛَﻠَﺎﻡِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ
ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ‘আর গাযালীর উক্তি
‘নিশ্চয়ই ঘাড় মাসাহ করা সুন্নাত। কারণ
মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর বাণী ঘাড় মাসাহ
করা বেড়ী হ’তে মুক্তকারী’ -উক্তিটি
ভুল। কেননা এটি বানোয়াট, নবী করীম
(ছাঃ)-এর বাণীর অন্তর্ভুক্ত নয়।[67] তিনি
‘শারহুল মুহায্যাব’ গ্রন্থে একে ﻣَﻮْﺿُﻮﻉ
‘বানোয়াট’ বলেছেন।[68] ইবনুছ ছালাহ
বলেছেন, ﻟَﺎ ﻳُﻌﺮَﻑُ ﻣَﺮْﻓُﻮﻋًﺎ ﻭَﺇِﻧَّﻤَﺎ ﻫُﻮَ ﻗَﻮﻝ ﺑﻌﺾ ﺍﻟﺴّﻠﻒ ،
‘এটি মারফূরূপে চেনা যায় না। মূলতঃ
এটি কোন সালাফের উক্তি’।[69]
(৫) মুহাম্মাদ ইবনু তাহের আল-ফাত্তানী
বলেন, ﻣَﺴْﺢُ ﺍﻟﺮَّﻗَﺒَﺔِ ﺃَﻣَﺎﻥٌ ﻣِﻦْ ﺍﻟْﻐُﻞِّ ﺿﻌﻴﻒ ‘ঘাড়
মাসাহ করা শৃঙ্খল হ’তে মুক্তকারী’-
(এটি) যঈফ।[70]
(৭) মুহাম্মাদ ইবনু খলীল আত-তারাবুলসী
বলেন, ﺣَﺪِﻳﺚ : ﻣﺴﺢ ﺍﻟﺮَّﻗَﺒَﺔ ﺃَﻣَﺎﻥ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻐﻞ. ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﻮَﻭِﻱّ :
ﻣَﻮْﺿُﻮْﻉ، ﺃَﻱ ﺭَﻓﻌﻪ ﻭَﺇِﻟَّﺎ ﻓﻘﺪ ﻭﺭﺩ ﻣَﻮْﻗُﻮﻓﺎ ﻋَﻦ ﻣُﻮﺳَﻰ ﺑﻦ
ﻃَﻠْﺤَﺔ، ﺑﻞ ﻓِﻲ ﻣُﺴْﻨﺪ ﺍﻟﻔﺮﺩﻭﺱ ﻣﻦ ﺣَﺪِﻳﺚ ﺍﺑْﻦ ﻋﻤﺮ ﺑِﺴَﻨَﺪ
ﺿَﻌِﻴﻒ، ﻭَﻟﺬَﺍ ﺍﺳْﺘﺤﺐَّ ﺃَﺋِﻤَّﺘﻨَﺎ ﻣﺴﺢ ﺍﻟﺮَّﻗَﺒَﺔ . ‘ঘাড় মাসাহ
করা বেড়ী হ’তে রক্ষাকারী- হাদীছটি
সম্পর্কে নববী বলেছেন, এটি বানোয়াট।
অর্থাৎ মারফূ‘ হিসেবে (বানোয়াট)। তবে
মূসা বিন ত্বালহা হ’তে মওকূফরূপে বর্ণিত
হয়েছে। বরং মুসনাদুল ফেরদাউসে ইবনে
ওমর হ’তে যঈফ সনদে বর্ণিত হয়েছে। আর
সেজন্য আমাদের ইমামগণ ঘাড় মাসাহ
করা মুসতাহাব বলেছেন।[71]
এটি সঠিক সিদ্ধান্ত নয়। যা প্রমাণিত
হয়নি তা মুসতাহাব ইবাদত হিসাবে গৃহীত
হওয়ার যোগ্য নয়। উপরন্তু ঘাড় মাসাহ
করা সুন্নাতের ভিতরে অনুপ্রবেশকৃত
আমল যা শরী‘আত বিরোধী।
দলীল-১০ : ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ : ﻣﻦ
ﺗﻮﺿﺄ ﻭﻣﺴﺢ ﻋﻨﻘﻪ ﻟﻢ ﻳﻐﻞ ﺑﺎﻷﻏﻼﻝ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে ওযূ
করবে এবং তার ঘাড় মাসাহ করবে,
তাকে ক্বিয়ামতের দিনে শৃঙ্খল পরিধান
করানো হবে না’।[72]
পর্যালোচনা : এটি অত্যন্ত যঈফ। কারণ-
(১) আল-হাসান ইবনু আহমাদ আর-রবাঈ
বলেন, ﻭﻟﻢ ﻳﺼﺢ ﻓﻲ ﻣﺴﺢ ﺍﻟﻌﻨﻖ ﺷﻲﺀ، ﻭﺣﺪﻳﺚ ﻃﻠﺤﺔ
ﺑﻦ ﻣﺼﺮﻑ ﻻ ﻳﺼﺢ ﺍﻻﺳﺘﺪﻻﻝ ﺑﻪ ﻓﻲ ﻧﺪﺏ ﻣﺴﺢ ﺍﻟﻌﻨﻖ؛
‘মাথা মাসাহ করার বিষয়ে কোন কিছুই
ছহীহ নয়। আর ত্বালহা বিন মুছার্রিফের
হাদীছ দ্বারা দলীল গ্রহণ করা শুদ্ধ নয়,
ঘাড় মাসাহ করার মুসতাহাব হওয়া
সম্পর্কে।[73]
(২) ইবনুল মুলাক্কিন (রহঃ) বলেছেন, ﻫﺬﺍ
ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ ﺃﻳﻀﺎ ﻏﺮﻳﺐ ‘এই হাদীছটিও অত্যন্ত
গরীব’।[74]
(৩) নাছিরুদ্দীন আলবানী (রহঃ) একে
বানোয়াট বলেছেন।[75]
দলীল-১১ :
ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺃَﺑُﻮ ﺑَﻜْﺮٍ ﻗَﺎﻝَ : ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺣَﻔْﺺُ ﺑْﻦُ ﻏِﻴَﺎﺙٍ، ﻋَﻦْ ﻟَﻴْﺚٍ، ﻋَﻦْ
ﻃَﻠْﺤَﺔَ، ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ، ﻋَﻦْ ﺟَﺪِّﻩِ، ﻗَﺎﻝَ : ﺭَﺃَﻳْﺖُ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ
ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺗَﻮَﺿَّﺄَ ﻓَﻤَﺴَﺢَ ﺭَﺃْﺳَﻪُ ﻫَﻜَﺬَﺍ، ﻭَﺃَﻣَﺮَّ ﺣَﻔْﺺٌ ﺑِﻴَﺪَﻳْﻪِ ﻋَﻠَﻰ
ﺭَﺃْﺳِﻪِ ﺣَﺘَّﻰ ﻣَﺴَﺢَ ﻗَﻔَﺎﻩُ -
‘ত্বালহা তার পিতা হ’তে, তিনি তার
দাদা হ’তে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন,
আমি নবী করীম (ছাঃ)-কে দেখেছি
তিনি ওযূ করেছেন এবং তার মাথাকে
এভাবে মাসাহ করেছেন। এরপর হাফছ
তার দু’হাতকে তার মাথার উপর অতিক্রম
করালেন। এ পর্যন্ত যে তিরি তার
ক্বাফা-কে মাসাহ করলেন।[76]
পর্যালোচনা : এটি খুবই দুর্বল। কারণ
এখানে লায়ছ রয়েছেন। উপরন্তু ‘ত্বালহা
তার পিতা হ’তে, তিনি তার দাদা হ’তে’
সনদে এটি বর্ণিত। যা একে যঈফ হওয়ার
প্রতি ধাবিত করেছে।
[চলবে]
[1]. মুহিউদ্দীন খানের ‘আরজ’ সম্বলিত
মোকাম্মাল মোদাল্লাল বেহেশতী
জেওর (ঢাকা : হামিদিয়া লাইব্রেরী,
তৃতীয় সংস্করণ, ফেব্রুয়ারী ২০০৪ইং),
১/২৩ ।
[2]. নবী করীম (ছাঃ)-এর প্রতি সম্বন্ধিত
কথা, কর্ম ও মৌন সমর্থনকে মারফূ‘
হাদীছ (মারফূ‘ রেওয়ায়াত বর্ণনা) বলা
হয়।-লেখক]
[3]. আত-তালখীছুল হাবীর হা/৯৮।
[4]. তালখীছ হা/৯৮-এর আলোচনা দ্রঃ ।
[5]. নায়লুল আওত্বার হা/১৯৮-এর
আলোচনা দ্রঃ ।
[6]. ইবনুল জাওযী, আত-তাহক্বীক্ব ফী
মাসাইলিল খিলাফ হা/৩০৬-এর আলোচনা
দ্রঃ, ১/২৬২, সনদবিহীন ।
[7]. আল-মাক্বাছিদুল হাসানা হা/১৬২-এর
আলোচনা দ্রঃ, পৃঃ ১৫০ ।
[8]. তারীখে ইবনে মাঈন, দূরীর বর্ণনা,
রাবী নং ৪৮৯৩।
[9]. মাজমাউয যাওয়ায়েদ হা/১৬৮৫২,
১০/৯০।
[10]. আদ-দিরায়াহ ফী তাখরীজি
আহাদীছিল হিদায়া হা/৬৮, ১/৮৫ ।
[11]. ইবনু আবী হাতিম, আল-জারহু ওয়াত-
তা‘দীল, রাবী নং ২৭৭ ।
[12]. আল-ফাওয়াইদুল
মাজমূ‘আহ হা/৪৬; আল-কামিল ফী
যু‘আফা‘ইর রিজাল, রাবী নং ৪৮৯ ।
[13]. আয-যু‘আফাউল মাতরূকীন, রাবী নং
৮৯৮ ।
[14]. আত-তালখীছুল হাবীর হা/৯৮, ইবনে
হাজার (রহঃ) এটি আবূ নু‘আইম (রহঃ)-এর
উদ্ধৃতিতে উল্লেখ করেছেন ।
[15]. তারীখে ইয়াহ্ইয়া বিন মাঈন, দূরীর
বর্ণনা, রাবী নং ৩৩২৮।
[16]. নায়লুল আওত্বার হা/১৯৮।
[17]. ইতহাফুল মাহারাহ হা/১৯৮১১।
[18]. যঈফা হা/৬৯, হা/৫১৫১ ।
[19]. আল-ইলাল ওয়া মা‘রিফাতুর রিজাল
লি-আহমাদ, আব্দুল্লাহ বিন আহমাদের
বর্ণনা, রাবী নং ৩২৪৮; উক্বায়লী, আয-
যু‘আফা, রাবী নং ১৬৬৮; সুওয়ালাতু আবী
উবায়েদ আল-আজুর্রী, রাবী নং ৫৬১।
[20]. তারীখু আসমাইয যু‘আফা ওয়াল
কায্যাবীন, রাবী নং ৫৫৫।
[21]. আল-মুসতাদরাক আলাছ ছহীহায়ন
হা/৬৬৫ ।
[22]. কানযুল উম্মাল হা/২৬১৪২ ।
[23]. কাশফুল খফা হা/২৩০০ ।
[24]. শরহু মা‘আনিল আছার হা/১২৯ ।
[25]. ছহীহ মুসলিম, ভূমিকা ১/৫।
[26]. আত-তাহক্বীক্ব ফী মাসাইলিল
খিলাফ হা/১৩১৫।
[27]. বায়ানুল ওয়াহমি ওয়াল ঈহাম ফী
কুতুবিল আহকাম ৫/২৯৫ ।
[28]. তানক্বীহুত তাহক্বীক ৩/২৩৪ ।
[29]. আল-জাওহারুন নাক্বী ১/২৯৮।
[30]. মা‘রিফাতুত তাযকিরাহ, পৃঃ ১২২,
জীবনী নং ২৬৮।
[31]. তারীখে ইবনে মাঈন, দারেমীর
বর্ণনা, ক্রমিক নং ৭২০।
[32]. সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৫৪ ।
[33]. ইতহাফুল মাহারাহ হা/২৭৬০ ।
[34]. আয-যু‘আফাউল মাতরূকীন, পৃঃ ২৩০,
জীবনী ক্রমিক নং ৫১১।
[35]. তারীখু আসমাইয যু‘আফা ওয়াল
কায্যাবীন, জীবনী ক্রমিক নং ৫৩১।
[36]. আয-যু‘আফাউল মাতরূকীন, নং ২৮১৫।
[37]. ত্বাবাক্বাতুল মুদাল্লিসীন নং
১৬/১৬৮ ।
[38]. মাজমাউয যাওয়ায়েদ হা/ ৬৩৬৪ ।
[39]. আল-মাজরূহীন, রাবী নং ৯০৬ ।
[40]. তাক্বরীবুত তাহযীব, রাবী নং ৫৬৮৫ ।
[41]. মীযানুল ইতিদাল নং ৬৯৯৭ ।
[42]. যঈফ আবূ দাঊদ হা/১৫ ।
[43]. তাক্বরীবুত তাহযীব, রাবী নং ৬৬৮৫ ।
[44]. আল-মু‘জামুল কাবীর হা/১১৮ ।
[45]. মাজমা‘উয যাওয়ায়েদ হা/১১৭৮ ।
[46]. আয-যু‘আফা, রাবী নং ১৬১০।
[47]. আয-যু‘আফাউল মাতরূকীন, রাবী নং
২৯৩২।
[48]. শরহে ইবনে মাজাহ, পৃঃ ১৩৮২।
[49]. তুহফাতুল আহওয়াযী হা/২৭ দ্রঃ।
[50]. আল-মুক্বতানা ফী সারদিল
কুনা, ১/১৪৫, রাবী নং ১০৭০।
[51]. আছ-ছামারুল মুসতাত্বাব, পৃঃ ৪৭৮।
[52]. ঐ, পৃঃ ৪৭৮।
[53]. তাক্বরীবুত তাহযীব, রাবী নং ২৩৪৪।
[54]. আয-যু‘আফাউল মাতরূকীন, রাবী নং
২৬৫ ।
[55]. যঈফা হা/৪৪৯ ।
[56]. আল-মু‘জামুল কাবীর হা/৪১২, ১৯/১৮১ ।
[57]. যায়লু মীযানিল ই‘তিদাল, রাবী নং
৬৮৯ ।
[58]. লিসানুল মীযান, রাবী নং ১৬৪ ।
[59]. আবূ দাঊদ হা/১৩২ ।
[60]. নায়লুল আওত্বার হা/১৯৮, ‘ঘাড়
মাসাহ’ অনুচ্ছেদ ।
[61]. তাহক্বীক যঈফ আবূ দাঊদ হা/১৫, মূল
আবুদাউদ হা/১৩২ ।
[62]. আওনুল মা‘বূদ ১/১৫২ ।
[63]. মুসনাদে আহমাদ হা/১৫৯৫১ ।
[64]. আত-তালখীছুল হাবীর হা/৯৭ ।
[65]. ঐ, হা/৯৭-এর আলোচনা দ্রঃ ।
[66]. আল-বাদরুল মুনীর হা/৪৭ ।
[67]. আল-মাজমূ‘ শারহুল মুহায্যাব ১/৪৬৫ ।
[68]. তানযীহুশ শারী‘আহ ২/৮৫, ক্রমিক নং
৩৫ ।
[69]. ঐ, ২/৮৫, ক্রমিক নং ৩৫ ।
[70]. তাযকিরাতুল মাউযূ‘আত, পৃঃ ৩১ ।
[71]. আল-লু‘লুউল মারছূ‘ হা/৫০৪, পৃঃ ১৬৮ ।
[72]. আত-তালখীছুল হাবীর হা/৯৮ ।
[73]. ফাৎহুল গাফ্ফার হা/২৯০ ।
[74]. আল-বাদরুল মুনীর হা/৪৮ ।
[75]. সিলসিলাহ যঈফা হা/৭৪৪ ।
[76]. মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ
হা/১৫০ ।
সুত্রঃ মাসিক আত-তাহরীক।